
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) প্রাথমিক, মাধ্যমিক, দাখিল ও কারিগরি শাখার জন্য প্রতি বছর বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ করে থাকে। গত প্রায় ১২ বছর ধরে এই বইগুলোর একটি বড় অংশ ভারত থেকে ছাপানো হয়, যা ছিল নিম্নমানের এবং দেশীয় মুদ্রণ শিল্পের তুলনায় ব্যয়বহুল। এতে অতিরিক্ত অর্থ অপচয় হওয়ার পাশাপাশি দেশীয় মুদ্রণ খাতও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
তবে ৫ আগস্ট ২০২৪ পরবর্তী নতুন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের কোনো বই ভারত থেকে ছাপায়নি। সরকারের এই সিদ্ধান্তকে দেশের মুদ্রণ শিল্প সমিতি ও সচেতন নাগরিকরা স্বাগত জানিয়েছেন।
প্রতিবছরই এই বিনামূল্যের পাঠ্যপুস্তক শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছাতে দেরি হয়—কখনও ফেব্রুয়ারি, কখনও মার্চ পর্যন্ত সময় লেগে যায়। বছরের শুরুতেই বই হাতে না পাওয়ায় শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভ ও সমালোচনা দেখা দেয়।
এছাড়া, বইয়ের মান নিয়েও দীর্ঘদিন ধরে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে। বিশেষ করে চলতি শিক্ষাবর্ষে প্রকাশিত কিছু বইয়ে ভয়াবহ ভুল পাওয়া গেছে। ৯ম ও ১০ম শ্রেণির বাংলা ভাষার ব্যাকরণ ও নির্মিতি বইটিতে ৬১ থেকে ৯২ পৃষ্ঠার মধ্যে ব্যবসায় উদ্যোগ বইয়ের ৫ম, ৬ষ্ঠ ও ৭ম অধ্যায় যুক্ত হয়ে গেছে, আর ব্যাকরণের ১২টি অধ্যায় বাদ পড়েছে—যা শিক্ষাবিদদের কাছে বিস্ময়কর ও অগ্রহণযোগ্য।
শিক্ষাসংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, ২০২৬ শিক্ষাবর্ষে বইয়ের কাগজের মান উন্নত করা, মুদ্রণ ও সম্পাদনায় স্বচ্ছতা আনা এবং দুর্নীতি মুক্ত প্রক্রিয়ায় বই বিতরণ নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। তারা আশা প্রকাশ করেছেন, এনসিটিবি এ বিষয়ে গুরুত্ব সহকারে পদক্ষেপ নেবে এবং বছরের প্রথম দিনেই শিক্ষার্থীদের হাতে মানসম্মত বই পৌঁছে দেবে—নতুন বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার মর্যাদা রক্ষায় এটি হবে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
মো. আব্দুর রহমান (বকুল) : উল্লাপাড়া প্রতিনিধি সিরাজগঞ্জ 
























