ঢাকা ১২:৩৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ১০ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
News Title :
পদ্মা মেঘনায় মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান সমাপ্ত গাইবান্ধায় স্বামীর ছুরিকাঘাতে স্ত্রী’র মৃত্যু রামগঞ্জে বিএনপির দুর্গে দ্বন্ধ সক্রিয় জামায়াতসহ বিরোধী জোট গাইবান্ধায় শিশু ধর্ষণের ঘটনায় ফুঁসে উঠেছে এলাকাবাসী বাগবাটীতে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক আব্দুল মান্নান পিন্স এর সাথে ইউনিয়ন বিএনপির মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজি নির্মূলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ধানের শীষে ভোট দিন : তৌহিদুল আলম মামুন শাহজাদপুরে জামায়াতের বিশাল নির্বাচনী জনসভা অনুষ্ঠিত রামগঞ্জে মাদকবিরোধী অভিযানে ইয়াবাসহ এক ব্যক্তি আটক তাড়াশে বরই চাষে আগাম বাম্পার ফলনের আশা কৃষক এরশাদ সরদারের সিরাজগঞ্জে সম্মিলিত প্রয়াস (রায়গঞ্জ-তাড়াশ-সলঙ্গা) সংগঠনের ১৪তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন

তাড়াশে বরই চাষে আগাম বাম্পার ফলনের আশা কৃষক এরশাদ সরদারের

“বরই”-এক সুস্বাদু ও আকর্ষণীয় ফল। খেতে মিষ্টি, দেখতে মনোহর। দিন দিন এর বাজার চাহিদা যেমন বাড়ছে, তেমনি বেড়ে চলেছে কৃষকদের আগ্রহও। অল্প পুঁজি, ঝুঁকি কম এবং লাভ নিশ্চিত হওয়ায় দেশে বহু কৃষক এখন বরই চাষের দিকে ঝুঁকছেন। ইতোমধ্যেই তাড়াশের মাঠে এ ফল চাষে সাফল্যের নজির স্থাপন করেছেন অনেকেই।

তাড়াশ উপজেলার ৫নং নওগাঁ ইউনিয়নের কালিদাশ নিলী গ্রামের কৃষক এরশাদ সরদার এমনই এক সাফল্যের দৃষ্টান্ত। পেশায় কৃষক এরশাদ সরদারের একমাত্র ভরসা তাঁর কৃষিজমি। সংসারের ব্যয় নির্বাহের একমাত্র পথ কৃষিকাজই। দুই বছর আগে অন্যের কাছ থেকে এক বিঘা জমি ইজারা নিয়ে তিনি শুরু করেন বাণিজ্যিকভাবে বরই চাষ। নাটোরের বনপাড়া এলাকা থেকে মাত্র ১৫ টাকা দরে কিনে আনেন প্রায় ৩০০টি চারা। এর মধ্যে ছিল বাউ কুল, আপেল কুল, নারিকেল কুল ও বলসুন্দরী কুলের জাত।

মাত্র এক বছরেই গাছে ধরে বাম্পার ফলন। এরশাদ সরদার জানান, গত বছর বরইয়ের ভারে গাছগুলো নুয়ে পড়েছিল। বড় আকারের, সুস্বাদু ও দৃষ্টিনন্দন এ বরইয়ের বাজারে ছিল বিপুল চাহিদা। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকাররা তাঁর বাগান থেকে সরাসরি বরই কিনে নিয়ে গিয়েছিল। পাইকারি বাজারে নারিকেল কুল ও আপেল কুল বিক্রি হয়েছিল ৯০ টাকা কেজি দরে, আর খুচরা বাজারে ১২০ টাকা পর্যন্ত। বাউকুল পাইকারি ৬০ টাকা ও খুচরায় ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়।

এ বছর আরও বেশি ফলনের আশায় বুক বেঁধেছেন এরশাদ। তাঁর বিশ্বাস, প্রতি গাছ থেকে গত বছরের তুলনায় অন্তত তিনগুণ বেশি বরই পাওয়া যাবে। কারণ, প্রথম বছরে গাছ ছিল ছোট; এখন গাছগুলো ডালপালা ছড়িয়ে আরও শক্তিশালী হয়েছে। ইতিমধ্যেই প্রতিটি গাছে অসংখ্য বরই ফুল এসেছে, যা প্রমাণ করছে আগাম ফলনের সম্ভাবনা। তিনি জানান, বাগানের যত্ন নিতে প্রতিনিয়ত ব্যবহার করছেন ডিএপি সার, খৈল, কীটনাশক ও বিভিন্ন পরিচর্যা সামগ্রী।

খরচের হিসাব কষে এরশাদ সরদার বলেন, “৩০০টি বরই চারা রোপণ, জমি প্রস্তুতকরণ ও অন্যান্য খরচ বাবদ প্রায় ৫৫ থেকে ৬০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। তবে এ মৌসুমে আমি অন্তত দ্বিগুণ লাভের আশা করছি।”

তাড়াশের কৃষকদের জন্য এরশাদ সরদারের এ সাফল্য নিঃসন্দেহে অনুকরণীয় এক দৃষ্টান্ত। পতিত জমিকে সোনার খনিতে রূপান্তরের যে স্বপ্ন তিনি দেখেছেন, তা এখন বাস্তব রূপ নিচ্ছে বরই বাগানের সবুজে ছাওয়া ডালপালায়। কৃষি নির্ভর তাড়াশের গ্রামীণ অর্থনীতিতে বরই চাষ এক নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিচ্ছে বলেও মনে করছেন স্থানীয়রা।

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

বার্তা বিভাগ

মিডিয়া তালিকাভুক্ত জাতীয় দৈনিক নববাণী পত্রিকার জন্য সকল জেলা উপজেলায় সংবাদ কর্মী আবশ্যকঃ- আগ্রহীরা আজই আবেদন করুন। মেইল: [email protected]
জনপ্রিয় সংবাদ

পদ্মা মেঘনায় মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান সমাপ্ত

তাড়াশে বরই চাষে আগাম বাম্পার ফলনের আশা কৃষক এরশাদ সরদারের

আপডেট সময় ০৮:২৬:৫২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫

“বরই”-এক সুস্বাদু ও আকর্ষণীয় ফল। খেতে মিষ্টি, দেখতে মনোহর। দিন দিন এর বাজার চাহিদা যেমন বাড়ছে, তেমনি বেড়ে চলেছে কৃষকদের আগ্রহও। অল্প পুঁজি, ঝুঁকি কম এবং লাভ নিশ্চিত হওয়ায় দেশে বহু কৃষক এখন বরই চাষের দিকে ঝুঁকছেন। ইতোমধ্যেই তাড়াশের মাঠে এ ফল চাষে সাফল্যের নজির স্থাপন করেছেন অনেকেই।

তাড়াশ উপজেলার ৫নং নওগাঁ ইউনিয়নের কালিদাশ নিলী গ্রামের কৃষক এরশাদ সরদার এমনই এক সাফল্যের দৃষ্টান্ত। পেশায় কৃষক এরশাদ সরদারের একমাত্র ভরসা তাঁর কৃষিজমি। সংসারের ব্যয় নির্বাহের একমাত্র পথ কৃষিকাজই। দুই বছর আগে অন্যের কাছ থেকে এক বিঘা জমি ইজারা নিয়ে তিনি শুরু করেন বাণিজ্যিকভাবে বরই চাষ। নাটোরের বনপাড়া এলাকা থেকে মাত্র ১৫ টাকা দরে কিনে আনেন প্রায় ৩০০টি চারা। এর মধ্যে ছিল বাউ কুল, আপেল কুল, নারিকেল কুল ও বলসুন্দরী কুলের জাত।

মাত্র এক বছরেই গাছে ধরে বাম্পার ফলন। এরশাদ সরদার জানান, গত বছর বরইয়ের ভারে গাছগুলো নুয়ে পড়েছিল। বড় আকারের, সুস্বাদু ও দৃষ্টিনন্দন এ বরইয়ের বাজারে ছিল বিপুল চাহিদা। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকাররা তাঁর বাগান থেকে সরাসরি বরই কিনে নিয়ে গিয়েছিল। পাইকারি বাজারে নারিকেল কুল ও আপেল কুল বিক্রি হয়েছিল ৯০ টাকা কেজি দরে, আর খুচরা বাজারে ১২০ টাকা পর্যন্ত। বাউকুল পাইকারি ৬০ টাকা ও খুচরায় ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়।

এ বছর আরও বেশি ফলনের আশায় বুক বেঁধেছেন এরশাদ। তাঁর বিশ্বাস, প্রতি গাছ থেকে গত বছরের তুলনায় অন্তত তিনগুণ বেশি বরই পাওয়া যাবে। কারণ, প্রথম বছরে গাছ ছিল ছোট; এখন গাছগুলো ডালপালা ছড়িয়ে আরও শক্তিশালী হয়েছে। ইতিমধ্যেই প্রতিটি গাছে অসংখ্য বরই ফুল এসেছে, যা প্রমাণ করছে আগাম ফলনের সম্ভাবনা। তিনি জানান, বাগানের যত্ন নিতে প্রতিনিয়ত ব্যবহার করছেন ডিএপি সার, খৈল, কীটনাশক ও বিভিন্ন পরিচর্যা সামগ্রী।

খরচের হিসাব কষে এরশাদ সরদার বলেন, “৩০০টি বরই চারা রোপণ, জমি প্রস্তুতকরণ ও অন্যান্য খরচ বাবদ প্রায় ৫৫ থেকে ৬০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। তবে এ মৌসুমে আমি অন্তত দ্বিগুণ লাভের আশা করছি।”

তাড়াশের কৃষকদের জন্য এরশাদ সরদারের এ সাফল্য নিঃসন্দেহে অনুকরণীয় এক দৃষ্টান্ত। পতিত জমিকে সোনার খনিতে রূপান্তরের যে স্বপ্ন তিনি দেখেছেন, তা এখন বাস্তব রূপ নিচ্ছে বরই বাগানের সবুজে ছাওয়া ডালপালায়। কৃষি নির্ভর তাড়াশের গ্রামীণ অর্থনীতিতে বরই চাষ এক নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিচ্ছে বলেও মনে করছেন স্থানীয়রা।