
বিভিন্ন যৌক্তিক দাবি আদায়ের লক্ষ্যে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় আজ মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) দ্বিতীয় দিনের মতো একযোগে ক্লাস বর্জন ও কর্মবিরতি চলছে। টানা অনির্দিষ্টকালের জন্য এই কর্মবিরতি শুরু হওয়ায় অভিভাবকরা শিক্ষকদের দাবি মেনে নেওয়ার জন্য সরকারের নিকট জোর দাবি জানিয়েছেন।
শিক্ষক নেতারা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, আজ মঙ্গলবারের মধ্যে যদি তাদের দাবি পূরণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করা না হয়, তাহলে আগামীকাল বুধবার থেকে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
আজ মঙ্গলবার মির্জাপুর উপজেলার আফাজ উদ্দিন দারুল উলুম দাখিল মাদ্রাসা, বানিয়ারা সিনিয়র দাখিল মাদ্রাসা, কুরনী জালাল উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়, আলহাজ শফিউদ্দিন মিঞা এন্ড একাব্বর হোসেন টেকনিক্যাল কলেজ, গোড়াই উচ্চ বিদ্যালয়, বাঁশতৈল মো. মনশুর আরী উচ্চ বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, শিক্ষক-কর্মচারীগণ দ্বিতীয় দিনের মতো ক্লাস বর্জন করে কর্মবিরতি পালন করছেন।
ক্ষুব্ধ শিক্ষক-কর্মচারীগণ অভিযোগ করেন, তারা যুগ যুগ ধরে বেতন ভাতাসহ সরকারি বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। তারা আরও অভিযোগ করেন, দাবি আদায়ের আন্দোলনে গিয়ে তাদের নিরীহ শিক্ষকদের মারপিট করা হয়েছে, কিন্তু অভিযুক্তদের আজও বিচার হয়নি। তাঁরা এই অবিচার মেনে নেবেন না এবং প্রয়োজনে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের ছেলে-মেয়েদের স্কুল-কলেজ থেকে টিসি (ছাড়পত্র) দেওয়া হবে বলে কঠোর বার্তা দেন।
শিক্ষক-কর্মচারীদের মূল দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে— ২০ ভাগ বাড়ি ভাড়া, ২,০০০ (দুই হাজার) টাকা চিকিৎসা ভাতা, শতভাগ বৈশাখী ও উৎসব ভাতা, বেসরকারি স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা জাতীয়করণ এবং সকল শিক্ষক-কর্মচারীর বদলির ব্যবস্থা করা। তাঁরা জানান, এসব দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতিসহ তাদের আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আমজাদ হোসেন এবং উপজেলা মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যক্ষ মাওলনা আব্দুল্লাহ তালুকদার বলেন, আজ মঙ্গলবার ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে আন্দোলনকারী শিক্ষকগণ লং মার্চ করে সচিবালয়ে যাবেন। মির্জাপুর উপজেলাসহ সারা দেশে দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্লাস বর্জন করে কর্মবিরতিসহ আন্দোলন চলবে।
এ ব্যাপারে মির্জাপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও টাঙ্গাইল জেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আতিকুর রহমান আতিক বলেন, সারা দেশের প্রায় ৩০ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৫ লাখ শিক্ষক-কর্মচারী যুগ যুগ ধরে বৈষম্যের শিকার হয়ে আসছেন। তিনি অবিলম্বে সকল যৌক্তিক দাবি পূরণ করার জোর দাবি জানান এবং মঙ্গলবার আল্টিমেটাম দিয়ে বলেন, দাবি পূরণ না হলে বুধবার থেকে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।