
গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে ভুল চিকিৎসার অভিযোগে মা ক্লিনিক অ্যান্ড নার্সিং হোমে পারভীন আক্তার পারুল বেগম (২৫) নামে এক প্রসূতি ও তার নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এই মৃত্যুর পর উত্তেজিত স্বজন ও স্থানীয় জনতা ক্লিনিকটি ঘেরাও করে ভাঙচুর চালায় এবং অগ্নিসংযোগের চেষ্টা করে। পরে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের পৃথক দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। শনিবার (১৮ অক্টোবর) সকালে এই ঘটনা ঘটে।
রোগীর পরিবারের সদস্যদের দাবি, আগের দুই সন্তানও সিজারিয়ানের মাধ্যমে জন্ম নিলেও এবার ভুল চিকিৎসার কারণে পারুলের মৃত্যু হয়েছে। গত শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় পারুলকে সিজার করানোর উদ্দেশ্যে পলাশবাড়ী পৌর শহরের মা ক্লিনিক অ্যান্ড নার্সিং হোমে ভর্তি করা হয়। রাত ১১টার দিকে সিজার শুরু করে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ। পরবর্তীতে রাত ৪টার দিকে পারুল বেগম মারা যান।
অভিযোগ রয়েছে, রোগীর মৃত্যুর পর ক্লিনিকের দায়িত্বরতরা ঘটনাটি গোপন রাখতে মরদেহ এম্বুলেন্সে তুলে রংপুরে রেফার করার নাটক সাজান। তবে স্থানীয় জনতা বিষয়টি বুঝতে পেরে ক্ষুব্ধ হয়ে ক্লিনিকটিতে হামলা চালায় এবং আগুন ধরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। তাৎক্ষণিকভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
নিহত পারুল বেগম গাইবান্ধার পলাশবাড়ী পৌর শহরের জামালপুর গ্রামের বাদশা মিয়ার কন্যা এবং মহদীপুর ইউনিয়নের বিশ্রামগাছী গ্রামের শামিম মিয়ার স্ত্রী। তিনি দুই সন্তানের জননী ছিলেন। স্বজনরা অভিযোগ করেন, এটি একটি স্পষ্ট চিকিৎসাগত অবহেলার ঘটনা এবং এর সঙ্গে জড়িত চিকিৎসক ও নার্সদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তারা। পাশাপাশি মা ক্লিনিকটি স্থায়ীভাবে বন্ধ করার জন্য প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করতে মা ক্লিনিক অ্যান্ড নার্সিং হোমের মালিক ফাতেমা বেগমের সঙ্গে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।
উল্লেখ্য, পলাশবাড়ী পৌর শহরের নুনিয়াগাড়ী গ্রামের সরকারি কবরস্থানের সামনে অবস্থিত ভবনে মা ক্লিনিক অ্যান্ড নার্সিং হোম পরিচালিত হয়ে আসছে। এই ভবনের মালিক ফাতেমা বেগম, যিনি পলাশবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একজন সিনিয়র স্ট্যাফ নার্স।