
বগুড়ার সোনাতলা উপজেলায় বাঙালি নদীর ওপর স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মিত প্রায় ৩০০ ফুট দীর্ঘ বাঁশের সাঁকোটি পানির তীব্র স্রোতে ভেঙে যাওয়ায় দু’পারের মানুষের নদী পারাপারের দুর্ভোগ আবারও চরমে উঠেছে। দীর্ঘদিন ধরে ব্রিজ নির্মাণের দাবি উপেক্ষিত হওয়ায় স্থানীয় ২৫ গ্রামের মানুষ মিলে যে সাঁকোটি তৈরি করেছিল, সম্প্রতি উজানের ঢলে তার একাংশ ভেসে গেছে। অথচ এটি মেরামতের কোনো উদ্যোগ এখনো নেওয়া হয়নি।
উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দক্ষিণে হলিদাবগা এলাকায় বাঙালি নদীর ওপর একটি ব্রিজের দাবি বহু পুরোনো। এই ঘাটের উত্তর দিকে আড়িয়ার ঘাট এবং দক্ষিণ দিকে সর্জন পাড়ায় ব্রিজ নির্মাণ হলেও হলিদাবগা এলাকায় কোনো ব্রিজ নির্মিত হয়নি। ফলে নদীর পূর্ব ও পশ্চিম পাড়ের প্রায় ২৫ গ্রামের মানুষের চরম ভোগান্তি লাঘবে প্রায় তিন মাস আগে স্থানীয়রা নিজেরাই উদ্যোগী হয়। এলাকার মানুষ স্বেচ্ছাশ্রমে অর্থ ও বাঁশ সংগ্রহ করে প্রায় ৩০০ ফুট দীর্ঘ এই সাঁকোটি নির্মাণ করেন। সাঁকোটি নির্মাণের ফলে এলাকার হাজারো মানুষের দীর্ঘদিনের যাতায়াত কষ্ট লাঘব হয়েছিল। সম্প্রতি কয়েকদিনের অবিরাম বর্ষণ এবং উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে বাঙালি নদীতে পানি অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়।
পানির তীব্র স্রোতের মুখে টিকে থাকতে পারেনি সাধারণ বাঁশ দিয়ে তৈরি সাঁকোটি। স্রোতের তোড়ে সাঁকোটির একাংশ ভেসে যাওয়ায় দু’পাড়ের মানুষের নদী পারাপারের ভোগান্তি আবার ফিরে এসেছে। স্বেচ্ছাশ্রমে ব্রিজ নির্মাণে আয়োজকদের একজন জাহিদুল ইসলাম বলেন, নদীর দু’পারের মানুষ আগ্রহ নিয়ে টাকা-পয়সা ও শত শত বাঁশ দিয়ে সাঁকো নির্মাণে সহযোগিতা করেছিলেন। আজ তা পানির তোড়ে ভেসে গেল।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী আতিকুর রহমান তালুকদার বলেন, হলিদাবগা এলাকায় বাঙালি নদীর ওপর একটি হাট রয়েছে, ফলে এটি একটি বাণিজ্যিক এলাকায় পরিণত হয়েছে। এখানে ব্রিজ নির্মিত হলে দু’পাড়ের মানুষের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগের অবসান হবে। তিনি নিশ্চিত করেন যে, এই খেয়া ঘাটে ব্রিজ নির্মাণের জন্য এলজিইডি’র প্রধান প্রকৌশলীর কাছে আবেদন পাঠানো হয়েছে। এই ব্রিজটি নির্মাণে প্রায় দেড়শ’ কোটি টাকার প্রয়োজন হবে বলে তিনি জানান। বর্তমানে সাঁকোটি ভেঙে যাওয়ায় ২৫ গ্রামের মানুষ আবার জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদী পারাপার হতে বাধ্য হচ্ছে। এই অবস্থায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের যাতায়াতের জন্য স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে আপাতত কোনো খেয়াতরী বা বিকল্প পারাপারের ব্যবস্থা করা হয়েছে কি?