
ফরিদপুর সদর উপজেলার পূর্ব গোয়ালচামট খোদা বক্স রোড মসজিদ সংলগ্ন ৮নং ওয়ার্ডে জমি সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে কথিত সাংবাদিক আনিসুর রহমানের বিরুদ্ধে চাঁদা দাবি ও মারধরের অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উক্ত এলাকার ১০৩ নং মৌজার বিএস খতিয়ান নং ১৭১৩ ও দাগ নং ৪২৯১ নম্বর জমির মোট পরিমাণ ১০ শতাংশ। এর মধ্যে ৫ শতাংশ জমির মালিক মোঃ মাসুদ মিয়া এবং অপর ৫ শতাংশের মালিক মোঃ রেজওয়ানুল হক গং। জমিটি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলছিল। এ বিষয়ে একাধিকবার সালিশ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় এবং সর্বশেষ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে একটি মীমাংসা হয়।
সালিশি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রথম পক্ষ মোঃ মাসুদ মিয়াকে তার ঘর সরিয়ে নিতে বলা হয়। কিন্তু তিনি তা না করে সময়ক্ষেপণ করতে থাকেন। পরে গত ২২ অক্টোবর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মোঃ রেজওয়ানুল হক গং সালিশি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য ঘর সরানোর কাজ শুরু করলে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন আনিসুর রহমান।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা যায়, লুঙ্গি ও গেঞ্জি পরিহিত অবস্থায় ঘটনাস্থলে এসে তিনি মোবাইলে ভিডিও ধারণ শুরু করেন। উপস্থিতরা বাধা দিলে নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে বলেন, “আমাকে ২ লক্ষ টাকা দিতে হবে, না দিলে এই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে নিউজ করে দেব।”
স্থানীয়দের অভিযোগ, টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে আনিসুর রহমান ক্ষিপ্ত হয়ে মোঃ রেজওয়ানুল হককে কিল-ঘুষি মেরে মাটিতে ফেলে দেন এবং হুমকি দেন— “তোদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে জেলে পাঠাব।”
রেজওয়ানুল হক জানান, “আমাদের পারিবারিক সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের বিষয়টি আগেও কোতোয়ালি থানায় (২৭ জানুয়ারি ২০২৫) লিখিতভাবে জানিয়েছিলাম। এখন এই কথিত সাংবাদিক আমাদের কাছ থেকে চাঁদা দাবি করছে।” তিনি আরও বলেন, “আমরা আনিসুর রহমানের বিরুদ্ধে ২২ অক্টোবর কোতোয়ালি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি, যা বর্তমানে তদন্তাধীন রয়েছে।”
এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে একাধিক স্থানীয় ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, আনিসুর রহমান দীর্ঘদিন ধরে কথিত সাংবাদিকতার আড়ালে চাঁদাবাজি ও প্রভাব বিস্তার করে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করেছেন। তারা অভিযোগ করেন, “তিনি সাংবাদিকতার আড়ালে বিপুল সম্পদ গড়ে তুলেছেন। বর্তমানে তিনি একটি তিনতলা বিশিষ্ট আলিশান ভবনে বসবাস করেন, যার চারপাশে উঁচু প্রাচীর ঘেরা। সাংবাদিকতা করে এত সম্পদের উৎস কোথায়—এ প্রশ্ন এলাকাবাসীর।”
স্থানীয়রা প্রশাসনের কাছে এই কথিত সাংবাদিকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
স্টাফ রিপোর্টার : 



















