
মানসম্মত শিক্ষা প্রসারে শিক্ষার্থীদের অনুপ্রাণিত করতে এবং তাদের মেধার স্বীকৃতি দিতে জাগরণ শিক্ষা ফাউন্ডেশন আগামী ২০২৫ সালের ১৫ নভেম্বর থেকে তাদের বার্ষিক জাতীয় বৃত্তি পরীক্ষা শুরু করতে চলেছে। ২০১৭ সালে যাত্রা শুরু করা এই পরীক্ষা দেশের শিক্ষাঙ্গনে ইতোমধ্যেই একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে নিয়েছে। এই উদ্যোগের পেছনের লক্ষ্য ও পরিকল্পনা নিয়ে সম্প্রতি একান্ত সাক্ষাৎকারে কথা বলেছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক ওসমান গনি শুভ।
মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য এক অনুপ্রেরণার মঞ্চ জাগরণ শিক্ষা ফাউন্ডেশনের এই জাতীয় বৃত্তি পরীক্ষা শিক্ষাবর্ষের শেষলগ্নে শিক্ষার্থীদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ এবং একইসাথে অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে কাজ করে। ২০১৭ সালে শুরু হওয়ার পর থেকে প্রতি বছরই এই পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা বেড়েছে, যা এর গ্রহণযোগ্যতা ও গুরুত্বের প্রমাণ বহন করে।
প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক ওসমান গনি শুভ জানান, “আমরা বিশ্বাস করি, কেবল গতানুগতিক পাঠ্যক্রমের মধ্যেই শিক্ষা সীমাবদ্ধ নয়। শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব তৈরি করা এবং তাদের সুপ্ত মেধা বিকাশে সহায়তা করাই আমাদের মূল লক্ষ্য। এই বৃত্তি পরীক্ষা সেই উদ্দেশ্য সাধনের একটি মঞ্চ।”
সাক্ষাৎকারে শুভ বলেন, ২০১৭ সালে যখন এই উদ্যোগ শুরু হয়, তখন এটিকে একটি জাতীয় পর্যায়ে নিয়ে আসা বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিল। তবে শিক্ষক, অভিভাবক এবং শিক্ষার্থীদের আস্থা ও ভালোবাসাই এই কার্যক্রমকে এগিয়ে নিয়ে গেছে। তিনি বলেন, “পরীক্ষাটি শুধু মেধা যাচাইয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এটি শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় আরও মনোযোগ দিতে এবং নিজেদের প্রস্তুত করতে উৎসাহিত করে। আমরা চাই, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীরাও যেন তাদের মেধার সঠিক মূল্যায়ন পায়।”
আগামী ১৫ নভেম্বর থেকে শুরু হতে যাওয়া পরীক্ষা নিয়ে ওসমান গনি শুভ বলেন এই বছর সারাদেশব্যাপী পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে, উল্লেখ যোগ্য পঞ্চগড়ের পাঁচটি উপজেলায়, ঠাকুরগাঁও, রংপুরে, ঢাকায় ও গাজীপুরে সরাসরি পরীক্ষা নেওয়া হবে। বাকি অংশগুলো অনলাইনে একযোগে পরীক্ষা নেওয়া হবে। জাগরণ শিক্ষা ফাউন্ডেশনের জাতীয় বৃত্তি পরীক্ষাটি দুটি ক্যাটাগরিতে বৃত্তি প্রদান করা হয়, একটি ট্যালেন্টপুল ও সাধারণ গ্রেড। ট্যালেন্টপুলে যারা বৃত্তি পাই তাদের জন্য তিন থেকে পাঁচ হাজার টাকা প্রাইস মানি, ক্রেস্ট, সার্টিফিকেট,মেডেল ও বই থাকে।যারা সাধারণ গ্রেডে বৃত্তি পাই তাদের জন্য দুই থেকে তিন হাজার টাকার প্রাইস মানি,ক্রেস্ট, সার্টিফিকেট,মেডেল ও বই থাকে । তাছাড়াও যেসব স্কুল থেকে সর্বোচ্চ স্টুডেন্ট আমাদের বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে তাদের জন্য আলাদা পুরস্কার থাকবে। পরীক্ষা শেষ হওয়ার ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে বৃত্তি পরীক্ষার রেজাল্ট দিয়ে দেওয়া হবে।
তিনি জানান, “আমরা আশা করছি, এই বছর আরও বেশি সংখ্যক শিক্ষার্থী এই পরীক্ষায় অংশ নেবে। আমাদের প্রস্তুতি চূড়ান্ত পর্যায়ে। আমরা একটি স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মেধাবীদের চিহ্নিত করতে বদ্ধপরিকর।” তিনি আরও বলেন, বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা যেন ভবিষ্যতে দেশ ও জাতির কল্যাণে ভূমিকা রাখতে পারে, সেভাবে তাদের গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এটি একটি প্রারম্ভিক পদক্ষেপ। জাগরণ শিক্ষা ফাউন্ডেশনের এই নিরন্তর প্রচেষ্টা দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনছে এবং শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার পথে এগিয়ে যেতে সহায়তা করছে বলে মনে করেন শিক্ষাবিদ ও অভিভাবকরা।