
ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার সফল খেজুর চাষি আব্দুল মোতালেব। তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জন্য বিশেষ এক ধরনের চেয়ার তৈরি করে ব্যাপক আলোচনায় এসেছেন। দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণে তিনি এই চেয়ার বানিয়েছেন, যার পেছনে খরচ হয়েছে প্রায় ৩০ লাখ টাকা।
আব্দুল মোতালেব জানান, তিনি এই চেয়ারে তারেক রহমানকে বসিয়ে আত্মতৃপ্তি পেতে চান। ভালবাসা থেকেই তিনি এই উদ্যোগ নিয়েছেন।
চেয়ার তৈরির পেছনের গল্প:
২০০১ সাল থেকে আব্দুল মোতালেব তার বাড়ির আঙিনায় সৌদি খেজুরের চাষ শুরু করেন। ২০০৪ সালে তাঁর বাগান নিয়ে গণমাধ্যমে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। তৎকালীন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব তারেক রহমানের নজরে আসে সেই খবর। ওই বছরের ১৬ জুন তারেক রহমান তার খেজুর বাগান পরিদর্শনে আসেন। কিন্তু তখন মোতালেব একটি মাটির ঘরে থাকতেন এবং তাঁর কাছে তারেক রহমানকে বসানোর মতো ভালো কোনো চেয়ার ছিল না। সেদিনই তিনি মনে মনে প্রতিজ্ঞা করেন, যদি তিনি খেজুর চাষে সফল হন, তবে তারেক রহমানের জন্য দেশের সবচেয়ে আকর্ষণীয় একটি চেয়ার বানাবেন।
ধীরে ধীরে তার ভাগ্য ফেরে। খেজুর ও চারা বিক্রি করে তিনি জমি কিনেছেন, দোতলা বাড়ি তৈরি করেছেন এবং বছরে ৫০ লাখ টাকার বেশি আয় করছেন। এই সফলতার পর তিনি তারেক রহমানের জন্য সেই বিশেষ চেয়ারটি তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেন।
বিশেষ চেয়ারের বৈশিষ্ট্য:
আব্দুল মোতালেবের বাড়িতে বর্তমানে দুটি নতুন চেয়ার রয়েছে। একটি বড় এবং অন্যটি তুলনামূলক ছোট। বড় চেয়ারটি তারেক রহমানের জন্য বানানো হয়েছে, যা বিশেষভাবে আকর্ষণীয়। এর পেছনের দেয়ালে তারেক রহমান, আব্দুল মোতালেব এবং অন্যদের একটি ছবিও টানানো আছে।
২০০৮ সাল থেকে এই চেয়ারের নির্মাণকাজ শুরু হয়। সুজন মিত্র নামের একজন কাঠমিস্ত্রি এটি তৈরি করেন। তিনি আব্দুল মোতালেবের সঙ্গে চুক্তি করেন যে এমন নকশার চেয়ার তিনি আর কাউকে বানিয়ে দেবেন না। কাঁঠাল গাছের কাঠ দিয়ে তৈরি এই চেয়ারের কাজ শেষ হয় ২০১৪ সালে। শুধুমাত্র দুটি চেয়ার বানাতেই প্রায় ৩০ লাখ টাকা খরচ হয়েছে, যেখানে সম্পূর্ণ আসবাবপত্রের পেছনে তার মোট খরচ হয়েছে ৫০ লাখ টাকারও বেশি। তারেক রহমানের জন্য বানানো চেয়ারটির নকশা বাংলাদেশে আর কোনো চেয়ারে নেই বলে দাবি করা হয়েছে।
অন্যান্য উদ্যোগ:
আব্দুল মোতালেব শুধু তারেক রহমানের জন্যই নয়, কৃষি উন্নয়ন ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজের জন্যও একটি চেয়ার তৈরি করেছেন। খেজুর বাগানকে দেশজুড়ে পরিচিত করানোর জন্য তিনি শাইখ সিরাজের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন এবং তাকেও ওই চেয়ারে বসানোর আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
