
ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি এবং দেশের মৎস্যসম্পদ টেকসইভাবে সংরক্ষণের লক্ষ্যে আজ শনিবার (১ নভেম্বর) থেকে দেশব্যাপী জাটকা ইলিশ আহরণে কঠোর নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়েছে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে এবং মৎস্য অধিদপ্তরের বাস্তবায়নে এই আট মাসব্যাপী নিষেধাজ্ঞা আগামী বছর ৩০ জুন পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।
ইলিশের পোনা সুরক্ষার এই সময়ে ২৫ সেন্টিমিটারের ছোট ইলিশ (জাটকা) আহরণ, পরিবহন, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রয় ও মজুত সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। মৎস্য বিশেষজ্ঞদের মতে, নিষেধাজ্ঞা কার্যকরভাবে বাস্তবায়িত হলে উপকূলীয় নদ-নদী ও মোহনায় বিচরণকারী জাটকা নিরাপদে বড় হওয়ার সুযোগ পাবে, যা ভবিষ্যতে দেশের ইলিশ উৎপাদন বহুগুণে বাড়িয়ে তুলবে।
নিষেধাজ্ঞার মূল দিকসমূহ:
-
সময়কাল: ১ নভেম্বর ২০২৫ থেকে ৩০ জুন ২০২৬ পর্যন্ত।
-
নিষিদ্ধ পরিমাপ: ২৫ সেন্টিমিটারের ছোট ইলিশ (জাটকা)।
-
নিষিদ্ধ কার্যক্রম: আহরণ, পরিবহন, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রয় ও মজুত।
মৎস্য সুরক্ষা ও সংরক্ষণ (সংশোধিত) অধ্যাদেশ, ২০২৫ এবং মৎস্য সুরক্ষা ও সংরক্ষণ বিধিমালা, ১৯৮৫ অনুযায়ী, নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘনকারীদের অনধিক দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড বা অনধিক পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা, কিংবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা হতে পারে।
মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এর আগে ৪ থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত (১৯ আশ্বিন থেকে ৯ কার্তিক) ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে ‘ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান-২০২৫’ সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। ওই সময়ে বিপুল পরিমাণ ডিমওয়ালা ইলিশ থেকে পোনা উৎপন্ন হয়েছে, যা বর্তমানে উপকূলীয় অঞ্চলে ছড়িয়ে রয়েছে। এই জাটকাগুলোকে নির্বিঘ্নে বড় হতে দিতে দীর্ঘমেয়াদি এই সংরক্ষণ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
নিষেধাজ্ঞা কার্যকর রাখতে মৎস্য অধিদপ্তর দেশজুড়ে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, বাংলাদেশ নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, নৌ পুলিশ, র্যাব এবং স্থানীয় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতায় নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করবে।
মৎস্য অধিদপ্তর সংশ্লিষ্ট সবাইকে—বিশেষ করে মৎস্যজীবী সম্প্রদায়কে—আইন মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছে, যাতে ইলিশের টেকসই উৎপাদন ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়।
নিজস্ব প্রতিবেদক : 
























