
অকাল বৃষ্টি যেন অভিশাপ হয়ে নেমেছে বগুড়ার লক্ষাধিক ধানচাষির জীবনে। টানা বর্ষণ ও ঝড়ো বাতাসে জেলার বিস্তীর্ণ এলাকার পাকা ও আধাপাকা ধানের ক্ষেত মাটির সাথে মিশে গেছে। এতে প্রান্তিক থেকে শুরু করে সব স্তরের কৃষকদের মধ্যে নেমে এসেছে চরম হতাশা।
ধান ঘরে তোলার শেষ মুহূর্তে এমন প্রাকৃতিক দুর্যোগে কৃষকদের বছরের পরিশ্রম ও স্বপ্ন ধূলিসাৎ হয়ে গেছে। অনেক এলাকায় ধান কাটার প্রস্তুতি চলছিল, আবার কোথাও কাটা ধান ভেজা জমিতেই স্তূপ করে রাখা ছিল। হঠাৎ নেমে আসা বৃষ্টিতে সেই ধান এখন পানিতে ডুবে পচতে শুরু করেছে।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বগুড়ার শত শত হেক্টর জমির ধান ও অন্যান্য ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেক কৃষক ঋণ করে বা জমি বন্ধক রেখে ফসল ফলিয়েছিলেন। ফসল ঘরে তোলার আগ মুহূর্তে এই ক্ষতি তাঁদেরকে চরম অর্থসংকটে ফেলেছে।
এদিকে টানা বৃষ্টির কারণে মাঠে শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে সামান্য যেটুকু ধান রক্ষা করা সম্ভব, সেটিও ঘরে তোলা কঠিন হয়ে পড়েছে।
শাজাহানপুর উপজেলার কৃষক শ্রী নরেশ চন্দ্র সরকার ও ফিরোজ আহমেদ বলেন, “এই ধানেই ছিল সারা বছরের আশা। ঋণ করে চাষ করেছিলাম, এখন সব শেষ। ধানের গাছ মাটিতে লুটিয়ে আছে, অনেক ধান পচে যাচ্ছে। এই ক্ষতি কীভাবে পোষাব, জানি না।”
শুধু কৃষক নয়, এই বিপর্যয়ের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে স্থানীয় বাজারেও। সবজির পাশাপাশি ধানের ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কায় খাদ্যশস্যের বাজারে দাম বাড়ার উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা সরকারের পক্ষ থেকে দ্রুত জরুরি সহায়তা ও ক্ষতিপূরণ প্রদানের দাবি জানিয়েছেন, যেন তাঁরা আবার নতুন করে চাষাবাদের স্বপ্ন দেখতে পারেন।
জেলা প্রতিনিধি : 


















