
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে গত দু’দিনের টানা ভারী বৃষ্টি ও বৈরী আবহাওয়ায় কৃষিতে নেমে এসেছে বিপর্যয়। মাঠজুড়ে পাকা আমন ধান ঝড়ে নুয়ে পড়েছে, পাশাপাশি আলু ও বিভিন্ন শীতকালীন সবজি খেত পানিতে তলিয়ে গেছে। হঠাৎ এই বৃষ্টি কৃষকদের মুখে এনে দিয়েছে দুশ্চিন্তা ও চোখে জল।
উপজেলার কানাগাড়ী, ডুগডুগি, শৌলা ও রাণীগঞ্জের কৃষকরা জানান, কয়েক দিনের মধ্যে আমন ধান কেটে ঘরে তোলার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু হঠাৎ ভারী বর্ষণে পানির চাপ ও বাতাসে ধান গাছগুলো মাটিতে লুটিয়ে পড়েছে। এতে উৎপাদন কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা।
উপজেলার বুলাকীপুর ইউনিয়নের বরাতীপুর গ্রামের কৃষক আইনুল মিয়া বলেন, “ধান প্রায় কাটার মতো হয়ে গিয়েছিল। এই বৃষ্টি সব শেষ করে দিলো। ধান শুকাতে সমস্যা হবে, আর দোচালা ধানের দানা কমে যাবে। লোকসান ছাড়া কিছুই দেখছি না।”
এদিকে এলাকায় শীতকালীন সবজি আবাদও ব্যাপক ক্ষতির মুখে। আলুর নতুন চারা, বাঁধাকপি, ফুলকপি, টমেটো, মুলা, বেগুনসহ বিভিন্ন ফসলের খেতে পানি জমে নষ্ট হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।
উপজেলার পালশা ইউনিয়নের উচিতপুর গ্রামের কৃষক শাহীন আলম জানান, “আগাম আলু লাগাইছি। পানি জমে থাকলে চারা পচে যাবে। কী করবো বুঝতে পারতেছিনা।”
ঘোড়াঘাট উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, আবহাওয়া স্বাভাবিক না থাকলে ফসলের উৎপাদন ব্যাপকভাবে কমে যেতে পারে। মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের ক্ষতি নিরূপণ ও পরামর্শ দেওয়ার কাজ করছে কৃষি বিভাগ।
এ বিষয়ে কৃষি কর্মকর্তা মো. রফিকুজ্জামান জানান, “বৃষ্টির পানি দ্রুত নিষ্কাশনে কৃষকদের ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। ধান নুয়ে পড়ায় ক্ষেতের পানি বের করে যত দ্রুত সম্ভব কাটার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।”
বৃষ্টির এ পরিস্থিতিতে কৃষকের মুখে শুধু একটাই প্রশ্ন,
“পরিশ্রমের ফসল ঘরে তুলবো কীভাবে?”
ফসলে ক্ষতির ঝুঁকি বাড়ায় কৃষকরা সরকারি সহায়তা ও প্রণোদনার দাবি জানিয়েছেন।
ফাহিম হোসেন রিজু, ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধি : 


















