আওয়ামী লীগের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারসহ মানবাধিকার ও মৌলিক স্বাধীনতা পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য ১২ দফা সুপারিশ তুলে ধরে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে খোলা চিঠি দিয়েছে ছয়টি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা।
চিঠিতে তারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেওয়া কিছু পদক্ষেপ—যেমন মৌলিক স্বাধীনতা পুনরুদ্ধার, আইন সংস্কারের উদ্যোগ এবং গুমসহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার তদন্ত শুরুর—প্রশংসা করে এসব সংস্কারকে আরও গভীর ও টেকসই করার আহ্বান জানিয়েছে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)-এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত চিঠিতে স্বাক্ষর করেছে ছয়টি সংস্থা—সিভিকাস, কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে), ফর্টিফাই রাইটস, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, রবার্ট এফ. কেনেডি হিউম্যান রাইটস এবং টেক গ্লোবাল ইনস্টিটিউট।
চিঠিতে বলা হয়, ২০২৬ সালের নির্বাচনের আগে এই অল্প সময়ের অন্তর্বর্তীকালীন সময়ে বাংলাদেশ যেন শক্তিশালী গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ও মানবাধিকার রক্ষায় আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসারে কাজ করে—এটাই সময়ের দাবি।
সংস্থাগুলোর মতে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জবাবদিহিতা, নিরাপত্তা খাতের সংস্কার, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা প্রত্যাহার এবং নাগরিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করা ছাড়া গণতান্ত্রিক পরিবেশ টেকসই করা সম্ভব নয়।
চিঠিতে যে ১২ দফা সুপারিশ উল্লেখ করা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে—
- গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিচার নিশ্চিত করা ও মৃত্যুদণ্ড স্থগিত রাখা।
- র্যাব বিলুপ্ত ও ডিজিএফআইয়ের ক্ষমতা সীমিত করা।
- গুম প্রতিরোধে স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠন ও আইনি স্বীকৃতি দেওয়া।
- জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে স্বাধীন ও কার্যকর করা।
- ব্যক্তির স্বাধীনতা রক্ষায় সাইবার সিকিউরিটি ও বিশেষ ক্ষমতা আইনসহ সব দমনমূলক আইন সংস্কার।
- ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা আইন আন্তর্জাতিক মানে সংশোধন।
- সাংবাদিক সুরক্ষা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা।
- রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা বাতিল।
- আওয়ামী লীগের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার।
- এনজিও ও নাগরিক সমাজের স্বাধীনতা পুনঃপ্রতিষ্ঠা।
- রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জোরপূর্বক ফেরত না পাঠানো ও মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপনের সুযোগ বৃদ্ধি।
- আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) সঙ্গে পূর্ণ সহযোগিতা।
চিঠিতে আরও বলা হয়, “বাংলাদেশের জনগণ দীর্ঘদিন ধরে ন্যায়বিচার, স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের প্রত্যাশা করে আসছে। এই অন্তর্বর্তীকালীন সময়টি সেই লক্ষ্য অর্জনের একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ।”
সংস্থাগুলো আশা প্রকাশ করে, সরকার এসব সুপারিশ বাস্তবায়নে দৃঢ় পদক্ষেপ নেবে, যাতে বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের ভিত্তি আরও মজবুত হয়।
নিজস্ব প্রতিবেদক : 

























