
দীর্ঘ ৩০ বছর দুই মাস ১৯ দিন হবিগঞ্জ জেলা কারাগারের অন্ধ প্রকোষ্ঠে বন্দি থাকার পর অবশেষে মুক্তি পেলেন কনু মিয়া। হত্যা মামলায় বিচার বা সাজা কোনোটিই হয়নি তার; কেবল একটি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির ভিত্তিতে মানসিক ভারসাম্যহীন এই ব্যক্তি কারাগারেই কাটিয়ে দিয়েছেন জীবনের অনেকটা সময়। সরকারি আইনি সহায়তা সংস্থা (লিগ্যাল এইড) এর হস্তক্ষেপে তিনি আলোর মুখ দেখলেন।
কনু মিয়া হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার সিংহগ্রামের মৃত চিনি মিয়ার ছেলে। নব্বইয়ের দশকের গোড়ার দিকে একটি হত্যা মামলার ঘটনায় তাকে আটক করা হয়। অভিযোগ রয়েছে, সেই সময় পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তিনি একটি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছিলেন, যা তার দীর্ঘ কারাবাসের মূল কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
জানা যায়, মামলার দীর্ঘসূত্রিতা এবং কনু মিয়ার মানসিক অসুস্থতার কারণে তার বিচার প্রক্রিয়া কার্যত থমকে ছিল। বছরের পর বছর তিনি কারাগারেই ছিলেন, যেখানে তার মানসিক অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি, বরং আরও অবনতি ঘটেছিল। তার পরিবারের পক্ষ থেকেও তাকে মুক্ত করার তেমন কোনো উদ্যোগ নেওয়া সম্ভব হয়নি, সম্ভবত আর্থিক অসচ্ছলতা এবং আইনি প্রক্রিয়া সম্পর্কে অজ্ঞতার কারণে।
সম্প্রতি সরকারি আইনি সহায়তা সংস্থার নজরে আসে কনু মিয়ার বিষয়টি। তারা তার দীর্ঘ কারাবাসের কারণ অনুসন্ধান এবং আইনি প্রক্রিয়ায় তাকে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেন। আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর, আজ হবিগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।
কনু মিয়ার মুক্তি বিচার ব্যবস্থার দীর্ঘসূত্রিতা এবং মানসিক অসুস্থতায় ভোগা ব্যক্তিদের আইনি অধিকার সুরক্ষার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। একই সাথে, সরকারি আইনি সহায়তা সংস্থার এমন পদক্ষেপ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে, যা দেশের বিচারপ্রার্থীদের জন্য আশার আলো দেখাচ্ছে।
মোঃ কামাল মিয়া, সিলেট ব্যুরোঃ 

























