
গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বাস্থ্যসেবায় অব্যবস্থাপনার অভিযোগে অভিযুক্ত ডায়াগনস্টিক সেন্টার মালিক তাওহীদ রহমানের সংবাদ সম্মেলনকে সাধারণ মানুষ ও স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীরা “অপরাধ ঢাকার ব্যর্থ চেষ্টা” বলে আখ্যা দিয়েছেন।
গত ২৭ সেপ্টেম্বর উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আল ইয়াসা রহমান তাপাদারের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে নিউ লাইফ ক্লিনিক অ্যান্ড কনসালটেশন সেন্টার ও নিউ লাইফ ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড ডেন্টাল এন্ড ফিজিওথেরাপি সেন্টারকে ১৫ হাজার টাকা এবং রেখা ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা গেছে, সময়মতো লাইসেন্স নবায়ন না করা, যোগ্য চিকিৎসক ছাড়াই চিকিৎসা কার্যক্রম পরিচালনা, স্বাস্থ্যবিধি না মানা এবং প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির ঘাটতিসহ নানা অনিয়মের প্রমাণ মেলায় এ দণ্ড দেওয়া হয়।
এরপর ২৯ সেপ্টেম্বর কালীবাড়ি আলাক ডায়াগনস্টিক সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করেন নিউ লাইফ ডায়াগনস্টিক মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক তাওহীদ রহমান।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে জরিমানা আদায়ের বিষয়টিকে ‘তথ্যনির্ভর নয়’ দাবি করে স্থানীয় সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দেন। এ প্রসঙ্গে অনেকেই বলেন—“প্রবাদ আছে, চোরের মায়ের বড় গলা।”
তবে স্থানীয় জনসাধারণ ও গণমাধ্যম কর্মীরা তার এই সংবাদ সম্মেলনকে “শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা” আখ্যা দিয়ে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান।
উল্লেখ্য, এর আগেও তাওহীদ রহমানের মালিকানাধীন নিউ লাইফ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠেছে। ২০২২ সালে অনিবন্ধিতভাবে ক্লিনিক পরিচালনার অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটি প্রশাসনের অভিযানে সিলগালা করা হয়। ২০২৩ সালে একই ক্লিনিকে ভুল চিকিৎসার কারণে এক প্রসূতি মা ও তার নবজাতক যমজ সন্তানের মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে, যা পরবর্তীতে ধামাচাপা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয়রা বলছেন—এ ধরনের অনিয়ম ও অপকর্মের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হলে ভবিষ্যতে স্বাস্থ্যসেবার নাম করে সাধারণ মানুষ আরও ভোগান্তিতে পড়বে। তাই সরকারের কাছে তারা এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
মালিক পক্ষকে স্থানীয় জনসাধারণ ও সুশীল সমাজের পক্ষ থেকে কড়া হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে—অপরাধ ঢাকার চেষ্টা না করে আইন মেনে চলতে হবে, নইলে কঠোর আন্দোলন ও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।