
রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সক্রিয় হয়ে উঠেছে এক নতুন প্রতারক চক্র। তারা ‘টাকা দিয়ে টাকা তৈরি’ বা ‘টাকা দ্বিগুণ করা’র লোভনীয় প্রস্তাব দিয়ে সহজ-সরল মানুষকে টার্গেট করছে। ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়ে শেষমেশ তাদের হাতে ধরিয়ে দিচ্ছে ছাই বা কাগজে মোড়ানো আবর্জনা।
প্রতারকরা অত্যন্ত সুচতুরভাবে তাদের ফাঁদ পাতছে। তারা প্রথমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বা ব্যক্তিগত যোগাযোগের মাধ্যমে উচ্চ আয়ের স্বপ্ন দেখানো শুরু করে। এরপর তারা ভুক্তভোগীদের সাথে দেখা করে এবং নিজেদেরকে এমন ‘বিশেষজ্ঞ’ হিসেবে পরিচয় দেয় যারা রাসায়নিক বা অন্য কোনো গোপন পদ্ধতির মাধ্যমে অল্প সময়ে টাকা দ্বিগুণ করতে পারে।
এই চক্রের সদস্যরা সাধারণত জনবিরল বা গোপন কোনো স্থানে তাদের ‘শো’ দেখায়। তারা একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ আসল টাকা (যেমন, ৫০ হাজার বা ১ লাখ টাকা) নিতে বলে এবং একটি কালো বাক্সের মতো কিছু সরঞ্জাম নিয়ে আসে। ভুক্তভোগীর সামনেই তারা সেই আসল টাকাগুলোকে বিশেষ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ‘দ্বিগুণ’ করে দেখানোর ভান করে। প্রথম দিকে তারা হয়তো ছোট অঙ্কের কিছু টাকা (যেমন ৫০০ বা ১০০০ টাকা) সফলভাবে ‘দ্বিগুণ’ করে ফেরত দেয়, যাতে ভুক্তভোগীর বিশ্বাস জন্মে।
একবার বিশ্বাস স্থাপন করতে পারলে, প্রতারকরা বড় অঙ্কের টাকা নিয়ে আসতে বলে। যখন ভুক্তভোগী তাদের প্রলুব্ধ হয়ে কয়েক লাখ টাকা নিয়ে আসে, তখন তারা সেই টাকা একটি বিশেষ কাগজে মুড়িয়ে বা কোনো বাক্সে ভরে রাসায়নিক প্রক্রিয়া চালানোর ভান করে। এরপর বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে (যেমন, প্রক্রিয়া শেষ হতে সময় লাগবে, এখন এটি খুললে কাজ হবে না ইত্যাদি) ভুক্তভোগীকে কিছু সময় পর বাক্সটি খুলতে বলে। কিন্তু যখন ভুক্তভোগী বাক্সটি খোলে, তখন দেখে ভেতরে আসল টাকার বদলে শুধু ছাই, কাগজের টুকরা বা অন্য কোনো মূল্যহীন বস্তু রাখা আছে। ততক্ষণে প্রতারকরা সেই স্থান থেকে গা ঢাকা দেয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দ্রুত ধনী হওয়ার আকাঙ্ক্ষা, আর্থিক সংকট এবং পর্যাপ্ত তথ্যের অভাবের কারণে অনেক মানুষ এই ধরনের প্রতারণার শিকার হচ্ছে। প্রতারকরা মানুষের লোভকে পুঁজি করে তাদের সর্বনাশ করছে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এ ধরনের প্রতারণা সম্পর্কে জনসাধারণকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, টাকা দ্বিগুণ করার কোনো জাদুকরি প্রক্রিয়া নেই। এই ধরনের প্রস্তাব সম্পূর্ণ প্রতারণামূলক। যদি কেউ এ ধরনের কোনো প্রস্তাব পান, অবিলম্বে নিকটস্থ থানা বা সাইবার ক্রাইম ইউনিটে জানানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কোনোভাবেই অপরিচিত কারো হাতে নগদ টাকা তুলে দেবেন না বা তাদের ফাঁদে পা দেবেন না।
দ্রুত ধনী হওয়ার সহজ পথ খুঁজতে গিয়ে অনেকেই এমন প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। আপনার আশেপাশে এমন কোনো অস্বাভাবিক বা লোভনীয় প্রস্তাব পেলে, তা যাচাই করুন এবং সতর্ক থাকুন।
ঢাকা ও এর পার্শবর্তী জেলা গাজীপুরে এমন প্রতারণার শিকার অনেকেই যা জাতীয় দৈনিক নববাণীর হাতে তথ্য এসেছে অনুসন্ধান চলমান ।
নববাণী ডেক্স: 



















