ঢাকা ০৫:৪৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২১ নভেম্বর ২০২৫, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
News Title :
সারা দেশের ন্যায় মোমেনা আলী বিজ্ঞান স্কুলে বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হয়েছে এনসিপি থেকে মনোনয়ন নিলেন ভাইরাল সেই রিকশাচালক সুজন ধুনটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড : শর্ট সার্কিটে ছয় ঘর ভস্মীভূত, নিঃস্ব তিন ভাই কালিয়াকৈরে ওয়ার্কশপে গ্যাস বিস্ফোরণ; দগ্ধ ৪, দু’জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক জাহাজী শ্রমিক ফেডারেশনের সহ-সভাপতি গোলাম কিবরিয়া মিয়াজীর নামে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন ডিমলায় চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে কয়েকটি পরিবারকে জিম্মি করার অভিযোগ; প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন ভবন সংকটে থমকে গেছে ‘দুবলাগাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের’ পাঠদান কার্যক্রম সাতকানিয়ায় ছদ্মবেশে পাহাড় থেকে ডাকাত গ্রেপ্তার আওয়ামী লীগ রাজনীতি থেকে পদত্যাগ করে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা ৬ ইউপি সদস্যের নীলফামারীতে ট্রাকের চাপায় ২য় শ্রেণির ছাত্রীর মর্মান্তিক মৃত্যু

কিশোরগঞ্জে মানববন্ধনের ব্যানার ধরার লোকও পেলেন না ‘কথিত’ বিএনপি নেতা মো. আব্দুর রহিম মোল্লা

কিশোরগঞ্জ-৪ (ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম) আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে অপপ্রচারের অংশ হিসেবে মো. আব্দুর রহিম মোল্লা নামের একজন কথিত বিএনপি নেতা বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা শহরে এক মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করেন। সাবেক এই জেলা প্রশাসক নিজেকে বিএনপির কর্মী হিসেবে দাবি করলেও মানববন্ধনে ব্যানার ধরার মতো যথেষ্ট লোক না পাওয়ায় অবাক কাণ্ড ঘটে।

জেলা শহরের সরকারি শিশু পরিবার (বালিকা)-এর সামনে অনুষ্ঠিত এই কর্মসূচিতে ৩০টিরও বেশি ব্যানার তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু লোকসংকটের কারণে বিশাল আকারের প্রতিটি ব্যানার ২/৩ জন করে ব্যক্তিকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় এবং অনেকগুলো ব্যানার পার্শ্ববর্তী দেওয়ালে টানিয়ে রাখা হয়।

আব্দুর রহিম মোল্লা দাবি করেন, তিনি ছাত্রজীবন থেকে ছাত্রদলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। অথচ কিশোরগঞ্জের বিএনপি’র কোনো পর্যায়ের নেতাকর্মীরাই তাঁর এই দাবির বিষয়ে অবগত নন। অনেকেই জানিয়েছেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগ প্রার্থী সাবেক প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদের পক্ষে প্রচারণায় সক্রিয় ছিলেন। এরপর ইটনা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেও তিনি আওয়ামী লীগ প্রার্থী চৌধুরী কামরুল হাসানের ‘নৌকার যাত্রী’ ছিলেন।

এছাড়াও তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, চাকরি জীবনে তিনি ছিলেন ‘দুর্নীতির বরপুত্র’, যে কারণে উপসচিব হিসেবেই তাঁর চাকরি শেষ করতে হয়, কিন্তু তিনি নিজেকে সচিব হিসেবে পরিচয় দেন। অভিযোগ রয়েছে, মুক্তিযুদ্ধে না গিয়েও চাকরিকালীন সময়ে প্রভাব খাটিয়ে তিনি মুক্তিযোদ্ধা সনদ ভাগিয়ে নিয়েছেন, যা বাতিলের দাবিতে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা মানববন্ধনও করেছিলেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, রাজনীতিকে ব্যবসাবৃত্তি হিসেবে বেছে নিতে আব্দুর রহিম মোল্লা খোলস পাল্টে বিএনপির একজন সাজতে চাচ্ছেন। এর অংশ হিসেবে তিনি কিশোরগঞ্জ-৪ আসনে বিএনপির মনোনয়ন চেয়েছিলেন, কিন্তু বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমানের বিপুল জনপ্রিয়তার কারণে সেই চেষ্টায় ব্যর্থ হন। মনোনয়নবঞ্চিত হওয়ার পর তিনি বিএনপি প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমানের বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচারে নেমেছেন।

নিজ এলাকায় কর্মসূচি পালন না করে জেলা সদরে কেন করেছেন—গণমাধ্যমকর্মীদের এমন প্রশ্নের জবাবে আব্দুর রহিম মোল্লা বলেন, মিডিয়া, প্রশাসন ও জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য এখানে কর্মসূচিটি করা হয়েছে।

তবে স্থানীয় বিএনপি’র নেতৃবৃন্দ বলছেন, এলাকায় বিএনপি’র নেতাকর্মী এবং জনসাধারণের সঙ্গে আব্দুর রহিম মোল্লার সম্পৃক্ততা নাই বললেই চলে। স্বভাবতই নিজ এলাকা ইটনাতেও কর্মসূচি পালন করলে তিনি মানুষ পাবেন না। এছাড়া মূলত ফজলুর রহমানের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে তিনি নিজেকে হাইলাইট করতে চাইছেন। এই কারণে তিনি কখনো ঢাকা এবং কখনো কিশোরগঞ্জ জেলা শহরে টাকার বিনিময়ে লোকজন জোগাড় করে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছেন। এর মাধ্যমে তিনি দলীয় মনোনয়নের ব্যাপারে বিএনপি’র সিদ্ধান্তকেই প্রতিনিয়ত চ্যালেঞ্জ করে চলেছেন।

আব্দুর রহিম মোল্লার এমন তৎপরতার বিষয়ে জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলামের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, দলে উনার কোনো পদ-পদবী নেই, এমনকি তিনি দলের প্রাথমিক সদস্যও নন। তাই দলীয়ভাবে তাঁর বিরুদ্ধে কোনো ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণের সুযোগ নেই।

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

বার্তা বিভাগ

মিডিয়া তালিকাভুক্ত জাতীয় দৈনিক নববাণী পত্রিকার জন্য সকল জেলা উপজেলায় সংবাদ কর্মী আবশ্যকঃ- আগ্রহীরা আজই আবেদন করুন। মেইল: [email protected]
জনপ্রিয় সংবাদ

সারা দেশের ন্যায় মোমেনা আলী বিজ্ঞান স্কুলে বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হয়েছে

কিশোরগঞ্জে মানববন্ধনের ব্যানার ধরার লোকও পেলেন না ‘কথিত’ বিএনপি নেতা মো. আব্দুর রহিম মোল্লা

আপডেট সময় ০৮:৩৪:০০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর ২০২৫

কিশোরগঞ্জ-৪ (ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম) আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে অপপ্রচারের অংশ হিসেবে মো. আব্দুর রহিম মোল্লা নামের একজন কথিত বিএনপি নেতা বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা শহরে এক মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করেন। সাবেক এই জেলা প্রশাসক নিজেকে বিএনপির কর্মী হিসেবে দাবি করলেও মানববন্ধনে ব্যানার ধরার মতো যথেষ্ট লোক না পাওয়ায় অবাক কাণ্ড ঘটে।

জেলা শহরের সরকারি শিশু পরিবার (বালিকা)-এর সামনে অনুষ্ঠিত এই কর্মসূচিতে ৩০টিরও বেশি ব্যানার তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু লোকসংকটের কারণে বিশাল আকারের প্রতিটি ব্যানার ২/৩ জন করে ব্যক্তিকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় এবং অনেকগুলো ব্যানার পার্শ্ববর্তী দেওয়ালে টানিয়ে রাখা হয়।

আব্দুর রহিম মোল্লা দাবি করেন, তিনি ছাত্রজীবন থেকে ছাত্রদলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। অথচ কিশোরগঞ্জের বিএনপি’র কোনো পর্যায়ের নেতাকর্মীরাই তাঁর এই দাবির বিষয়ে অবগত নন। অনেকেই জানিয়েছেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগ প্রার্থী সাবেক প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদের পক্ষে প্রচারণায় সক্রিয় ছিলেন। এরপর ইটনা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেও তিনি আওয়ামী লীগ প্রার্থী চৌধুরী কামরুল হাসানের ‘নৌকার যাত্রী’ ছিলেন।

এছাড়াও তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, চাকরি জীবনে তিনি ছিলেন ‘দুর্নীতির বরপুত্র’, যে কারণে উপসচিব হিসেবেই তাঁর চাকরি শেষ করতে হয়, কিন্তু তিনি নিজেকে সচিব হিসেবে পরিচয় দেন। অভিযোগ রয়েছে, মুক্তিযুদ্ধে না গিয়েও চাকরিকালীন সময়ে প্রভাব খাটিয়ে তিনি মুক্তিযোদ্ধা সনদ ভাগিয়ে নিয়েছেন, যা বাতিলের দাবিতে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা মানববন্ধনও করেছিলেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, রাজনীতিকে ব্যবসাবৃত্তি হিসেবে বেছে নিতে আব্দুর রহিম মোল্লা খোলস পাল্টে বিএনপির একজন সাজতে চাচ্ছেন। এর অংশ হিসেবে তিনি কিশোরগঞ্জ-৪ আসনে বিএনপির মনোনয়ন চেয়েছিলেন, কিন্তু বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমানের বিপুল জনপ্রিয়তার কারণে সেই চেষ্টায় ব্যর্থ হন। মনোনয়নবঞ্চিত হওয়ার পর তিনি বিএনপি প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমানের বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচারে নেমেছেন।

নিজ এলাকায় কর্মসূচি পালন না করে জেলা সদরে কেন করেছেন—গণমাধ্যমকর্মীদের এমন প্রশ্নের জবাবে আব্দুর রহিম মোল্লা বলেন, মিডিয়া, প্রশাসন ও জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য এখানে কর্মসূচিটি করা হয়েছে।

তবে স্থানীয় বিএনপি’র নেতৃবৃন্দ বলছেন, এলাকায় বিএনপি’র নেতাকর্মী এবং জনসাধারণের সঙ্গে আব্দুর রহিম মোল্লার সম্পৃক্ততা নাই বললেই চলে। স্বভাবতই নিজ এলাকা ইটনাতেও কর্মসূচি পালন করলে তিনি মানুষ পাবেন না। এছাড়া মূলত ফজলুর রহমানের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে তিনি নিজেকে হাইলাইট করতে চাইছেন। এই কারণে তিনি কখনো ঢাকা এবং কখনো কিশোরগঞ্জ জেলা শহরে টাকার বিনিময়ে লোকজন জোগাড় করে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছেন। এর মাধ্যমে তিনি দলীয় মনোনয়নের ব্যাপারে বিএনপি’র সিদ্ধান্তকেই প্রতিনিয়ত চ্যালেঞ্জ করে চলেছেন।

আব্দুর রহিম মোল্লার এমন তৎপরতার বিষয়ে জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলামের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, দলে উনার কোনো পদ-পদবী নেই, এমনকি তিনি দলের প্রাথমিক সদস্যও নন। তাই দলীয়ভাবে তাঁর বিরুদ্ধে কোনো ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণের সুযোগ নেই।