ঢাকা ০৪:২৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ২২ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
News Title :
মিশরের সীমান্ত এলাকা বন্ধ ঘোষণা করলো ইসরাইল চাদে পানি নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ৩৩ প্রধান উপদেষ্টার কাছ থেকেই জুলাই সনদ নিতে চাই: হাসনাত আব্দুল্লাহ জকসু নির্বাচনের তারিখ ২২ ডিসেম্বর চূড়ান্ত সমস্যাগ্রস্ত ব্যাংক একীভূতকরণে শেয়ারহোল্ডাররা ক্ষতিপূরণ পাবেন : বাংলাদেশ ব্যাংক গুম প্রতিরোধ ও প্রতিকার নিশ্চিত করতে ‘গুম প্রতিরোধ, প্রতিকার ও সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫’ অনুমোদন ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর: সিপাহী-জনতার বিপ্লব ও শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান প্রথমবারের মতো ৪৮ দেশের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিতব্য বিশ্বকাপের জন্য নতুন জার্সি প্রকাশ করলো অ্যাডিডাস: আর্জেন্টিনাসহ ২২ দেশের ২০২৬ বিশ্বকাপের জার্সি উন্মোচন পীরগঞ্জে রোগাক্রান্ত গরুর মাংস বিক্রির অভিযোগ, আলোচনায় ‘ঢাকা বিরিয়ানি হাউজ’ সলঙ্গা হেরোইনসহ ২ মাদক কারবারি আটক

ধাতব মুদ্রা সংগ্রহে মরিয়া সক্রিয় চক্র, প্রতারণার ঝুঁকিতে সাধারণ মানুষ: ১ টাকার লাল কয়েন, লক্ষ টাকায় বিক্রি !

  • মাসুদ রানা :
  • আপডেট সময় ০৫:২১:৩৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ নভেম্বর ২০২৫
  • ২৫ বার পড়া হয়েছে

সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ১৯৯৬ সালের বিশেষ ১ টাকার লাল কয়েন চড়া দামে বিক্রির লোভনীয় পোস্টগুলো রীতিমতো ভাইরাল হচ্ছে। এসব পোস্টে প্রতিটি কয়েনের মূল্য এক লক্ষ থেকে দুই লক্ষ টাকা পর্যন্ত হাঁকা হচ্ছে। বিস্ময়করভাবে, এসব পোস্টের কমেন্টে বহু মানুষ তাদের ব্যক্তিগত ঠিকানা এবং ফোন নম্বর প্রকাশ করে কয়েন বিক্রির আগ্রহ দেখাচ্ছেন। তবে এখন পর্যন্ত কেউ এই উচ্চমূল্যে লাল কয়েন বিক্রি করতে পেরেছেন বলে খবর নেই, বরং অনেকেই এটিকে একটি বড় ধরনের প্রতারণা বলে অভিহিত করছেন।

এই ঘটনাটি ঘটছে এমন এক সময়ে, যখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ধাতব মুদ্রা নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা দিয়েছে। গত বুধবার (১৫ অক্টোবর) বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব কমিউনিকেশন্স অ্যান্ড পাবলিকেশন্স (ডিসিপি) এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায় যে, ১ ও ২ টাকার ধাতব মুদ্রা বা কয়েন লেনদেন করতে কেউ কেউ যে অনীহা প্রকাশ করছেন, তা প্রচলিত আইনের লঙ্ঘন। বাংলাদেশ ব্যাংক দেশের সব শ্রেণির মানুষকে এই ধাতব নোট ব্যবহারে উৎসাহিত করতে পদক্ষেপ নিয়েছে।

ধারণা করা হচ্ছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই নির্দেশনার সুযোগ নিয়ে অসৎ উপায়ে অর্থ হাতিয়ে নিতে একাধিক চক্র সক্রিয় হয়েছে। কোনো এক অজানা কারণে এই চক্রটি অনেকের কাছে থাকা ১৯৯৬ সালের লাল কয়েনগুলো সংগ্রহ করতে চাইছে। কিন্তু কেন, কী তাদের উদ্দেশ্য? কেনইবা সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট দিয়ে তারা লাল কয়েন সংগ্রহে মরিয়া হয়ে উঠেছে—এই প্রশ্নগুলো জনমনে ঘুরপাক খাচ্ছে।

অনুসন্ধানে উঠে এসেছে কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য। তথ্য মিলেছে, এই চক্র ফেসবুক, ইউটিউব এবং ইনস্টাগ্রামের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের আইডি, পেজ এবং গ্রুপ থেকে লোভনীয় অফার দেখিয়ে পোস্ট ও ভিডিও আপলোড করে যাচ্ছে। সাধারণ মানুষ সহজেই এই ফাঁদে পা দিচ্ছে এবং অনেকেই কমেন্টে তাদের কাছে সঞ্চিত এই ধাতব মুদ্রার বিষয়ে উল্লেখ করে বিক্রির আগ্রহ প্রকাশ করছে।

‘নববাণী’ বেশ কিছুদিন যাবত অনুসন্ধান চালিয়ে অসংখ্য ফেসবুক পেজ, গ্রুপ এবং আইডির খোঁজ পেয়েছে, যারা নানা কৌশলে ১৯৯৬ সালের লাল কয়েন সংগ্রহের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

যেমন: Jamirul07 নামে একটি আইডি থেকে ভিডিও সহ পোস্টে লেখা হয়েছে, “আপনি কি লাল কয়েন বিক্রি করতে চান, দ্রুত যোগাযোগ করুণ! ১ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা করে প্রতিটি কয়েন।”

একইভাবে, ‘লাল কয়েন সেল’ নামে একটি পেজের পোস্টে বলা হয়েছে, “১ টাকা কয়েনের মূল্য এখন ২ লক্ষ টাকা। আছে কি আপনার হাতে? তাহলে আর দেরি কিসের এখনই আমাদের ওয়েবসাইটে যোগাযোগ করুন।”

এমন আরো অনেক পেজ আর আইডি থেকে নানা কৌশলে এমনকি ইশারা-ইঙ্গিতেও পোস্ট করে আগ্রহীদের ইনবক্সে বা একান্তে যোগাযোগের ব্যবস্থা করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

সাধারণ মানুষের সরলতা এবং সামান্য লোভের কারণে তারা প্রতারকের কথায় সহজে বিশ্বাস স্থাপন করছে। যেখানে ১ টাকার কয়েনের দাম ১০ টাকা বললেই অনেকে বিষয়টি নিয়ে ভাবার কথা, সেখানে ২ লক্ষ টাকা শুনলে অনেকেই লোভ সংবরণ করতে ব্যর্থ হচ্ছেন। পরিণতিতে, এসব প্রতারক ও ঠকবাজদের বিশ্বাস করে সহজ-সরল অনেকেই কয়েনের ছবি, ঠিকানা ও মোবাইল নাম্বার দিয়ে ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তাহীনতা এবং আর্থিক প্রতারণার ঝুঁকির মধ্যে থাকছেন।

এই বিষয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করে তোলার পাশাপাশি প্রশাসনের উচিত এই চক্রের বিরুদ্ধে বিস্তর অনুসন্ধান চালিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ অব্যাহত রাখা।

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

বার্তা বিভাগ

মিডিয়া তালিকাভুক্ত জাতীয় দৈনিক নববাণী পত্রিকার জন্য সকল জেলা উপজেলায় সংবাদ কর্মী আবশ্যকঃ- আগ্রহীরা আজই আবেদন করুন। মেইল: [email protected]
জনপ্রিয় সংবাদ

মিশরের সীমান্ত এলাকা বন্ধ ঘোষণা করলো ইসরাইল

ধাতব মুদ্রা সংগ্রহে মরিয়া সক্রিয় চক্র, প্রতারণার ঝুঁকিতে সাধারণ মানুষ: ১ টাকার লাল কয়েন, লক্ষ টাকায় বিক্রি !

আপডেট সময় ০৫:২১:৩৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ নভেম্বর ২০২৫

সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ১৯৯৬ সালের বিশেষ ১ টাকার লাল কয়েন চড়া দামে বিক্রির লোভনীয় পোস্টগুলো রীতিমতো ভাইরাল হচ্ছে। এসব পোস্টে প্রতিটি কয়েনের মূল্য এক লক্ষ থেকে দুই লক্ষ টাকা পর্যন্ত হাঁকা হচ্ছে। বিস্ময়করভাবে, এসব পোস্টের কমেন্টে বহু মানুষ তাদের ব্যক্তিগত ঠিকানা এবং ফোন নম্বর প্রকাশ করে কয়েন বিক্রির আগ্রহ দেখাচ্ছেন। তবে এখন পর্যন্ত কেউ এই উচ্চমূল্যে লাল কয়েন বিক্রি করতে পেরেছেন বলে খবর নেই, বরং অনেকেই এটিকে একটি বড় ধরনের প্রতারণা বলে অভিহিত করছেন।

এই ঘটনাটি ঘটছে এমন এক সময়ে, যখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ধাতব মুদ্রা নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা দিয়েছে। গত বুধবার (১৫ অক্টোবর) বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব কমিউনিকেশন্স অ্যান্ড পাবলিকেশন্স (ডিসিপি) এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায় যে, ১ ও ২ টাকার ধাতব মুদ্রা বা কয়েন লেনদেন করতে কেউ কেউ যে অনীহা প্রকাশ করছেন, তা প্রচলিত আইনের লঙ্ঘন। বাংলাদেশ ব্যাংক দেশের সব শ্রেণির মানুষকে এই ধাতব নোট ব্যবহারে উৎসাহিত করতে পদক্ষেপ নিয়েছে।

ধারণা করা হচ্ছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই নির্দেশনার সুযোগ নিয়ে অসৎ উপায়ে অর্থ হাতিয়ে নিতে একাধিক চক্র সক্রিয় হয়েছে। কোনো এক অজানা কারণে এই চক্রটি অনেকের কাছে থাকা ১৯৯৬ সালের লাল কয়েনগুলো সংগ্রহ করতে চাইছে। কিন্তু কেন, কী তাদের উদ্দেশ্য? কেনইবা সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট দিয়ে তারা লাল কয়েন সংগ্রহে মরিয়া হয়ে উঠেছে—এই প্রশ্নগুলো জনমনে ঘুরপাক খাচ্ছে।

অনুসন্ধানে উঠে এসেছে কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য। তথ্য মিলেছে, এই চক্র ফেসবুক, ইউটিউব এবং ইনস্টাগ্রামের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের আইডি, পেজ এবং গ্রুপ থেকে লোভনীয় অফার দেখিয়ে পোস্ট ও ভিডিও আপলোড করে যাচ্ছে। সাধারণ মানুষ সহজেই এই ফাঁদে পা দিচ্ছে এবং অনেকেই কমেন্টে তাদের কাছে সঞ্চিত এই ধাতব মুদ্রার বিষয়ে উল্লেখ করে বিক্রির আগ্রহ প্রকাশ করছে।

‘নববাণী’ বেশ কিছুদিন যাবত অনুসন্ধান চালিয়ে অসংখ্য ফেসবুক পেজ, গ্রুপ এবং আইডির খোঁজ পেয়েছে, যারা নানা কৌশলে ১৯৯৬ সালের লাল কয়েন সংগ্রহের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

যেমন: Jamirul07 নামে একটি আইডি থেকে ভিডিও সহ পোস্টে লেখা হয়েছে, “আপনি কি লাল কয়েন বিক্রি করতে চান, দ্রুত যোগাযোগ করুণ! ১ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা করে প্রতিটি কয়েন।”

একইভাবে, ‘লাল কয়েন সেল’ নামে একটি পেজের পোস্টে বলা হয়েছে, “১ টাকা কয়েনের মূল্য এখন ২ লক্ষ টাকা। আছে কি আপনার হাতে? তাহলে আর দেরি কিসের এখনই আমাদের ওয়েবসাইটে যোগাযোগ করুন।”

এমন আরো অনেক পেজ আর আইডি থেকে নানা কৌশলে এমনকি ইশারা-ইঙ্গিতেও পোস্ট করে আগ্রহীদের ইনবক্সে বা একান্তে যোগাযোগের ব্যবস্থা করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

সাধারণ মানুষের সরলতা এবং সামান্য লোভের কারণে তারা প্রতারকের কথায় সহজে বিশ্বাস স্থাপন করছে। যেখানে ১ টাকার কয়েনের দাম ১০ টাকা বললেই অনেকে বিষয়টি নিয়ে ভাবার কথা, সেখানে ২ লক্ষ টাকা শুনলে অনেকেই লোভ সংবরণ করতে ব্যর্থ হচ্ছেন। পরিণতিতে, এসব প্রতারক ও ঠকবাজদের বিশ্বাস করে সহজ-সরল অনেকেই কয়েনের ছবি, ঠিকানা ও মোবাইল নাম্বার দিয়ে ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তাহীনতা এবং আর্থিক প্রতারণার ঝুঁকির মধ্যে থাকছেন।

এই বিষয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করে তোলার পাশাপাশি প্রশাসনের উচিত এই চক্রের বিরুদ্ধে বিস্তর অনুসন্ধান চালিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ অব্যাহত রাখা।