
গাজীপুর-৩ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনের ঘোষণা দেওয়া এনামুল হক মোল্লাহকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও সরঞ্জামাদি সহ গ্রেফতার করেছে যৌথ বাহিনী। বুধবার দিবাগত রাত আড়াইটা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত শ্রীপুর উপজেলার বরকুল গ্রামে, তার বাড়িতে এবং পরবর্তীতে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে এনামুল ও তার ছয় সহযোগীকে আটক করা হয়।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মাদ আব্দুল বারিক জানান, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে যৌথ বাহিনী বরকুল গ্রামের এনামুল হক মোল্লাহর বাড়িতে অভিযান চালায়। সেখান থেকে তাকে আটক করার পর, তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বরমী ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে আরও ৬ সহযোগীকে গ্রেফতার করা হয়।
আটককৃত ব্যক্তিরা এনামুল হক মোল্লাহ, শওকত, মীর, জাহিদুল ইসলাম, মোস্তফা কামাল, সিদ্দিকুর রহমান, বুলবুল ও তোফাজ্জল। (মোট ৭ জন) উদ্ধারকৃত সামগ্রী ২টি পিস্তল, ৩টি ম্যাগাজিন, ৪ রাউন্ড গুলি, ৪টি ওয়াকি-টকি, ৪টি বেটন, ২টি ইলেকট্রিক শক মেশিন, একটি হ্যামার নেল গান ও একটি ছুরি।
যৌথ বাহিনীর পক্ষ থেকে বাদি হয়ে শ্রীপুর থানায় অস্ত্র ও বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। উদ্ধারকৃত পিস্তল, গুলি ও অন্যান্য সরঞ্জামাদি মামলার আলামত হিসেবে জব্দ করা হয়েছে।
এনামুল হক মোল্লাহ ও তার ৬ সহযোগীর বিরুদ্ধে শ্রীপুর থানায় অস্ত্র ও বিস্ফোরকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃত ৭ জনকে আজ (বৃহস্পতিবার) গাজীপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতকে জানান যে, আটককৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার করা অবৈধ অস্ত্রের উৎস, এর ব্যবহার এবং এই চক্রের পেছনে অন্য কোনো বড় গোষ্ঠীর যোগসাজশ আছে কি না, তা জানার জন্য তাদের পাঁচ দিন করে রিমান্ডে নেওয়া আবশ্যক।
আদালতের সিদ্ধান্ত : রিমান্ড আবেদনের ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। শুনানি শেষে আদালত আটককৃতদের কারাগারে পাঠানোর (জেল হাজত) বা পুলিশের হেফাজতে রিমান্ড মঞ্জুর করার বিষয়ে আদেশ দেবেন।
এনামুল হক মোল্লাহর ছোট ভাই আশরাফুল মোল্লাহ দাবি করেছেন, গাজীপুর-৩ আসনে স্বতন্ত্র এমপি প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দেওয়ায় এনামুল হক মোল্লাহকে পরিকল্পিতভাবে ফাঁসানো হয়েছে।
অন্যদিকে বিএনপি নির্বাহী কমিটির সহ-স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ও গাজীপুর-৩ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী অধ্যাপক ডা. রফিকুল ইসলাম বাচ্চু এনামুল হক মোল্লাহকে ‘চিহ্নিত সন্ত্রাসী’ হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, সন্ত্রাসী কার্যকলাপের জন্য ২০০১ সালে তাকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হয় এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে তিনি দেশ থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন।
এনামুল মোল্লাহর অতীতে শ্রীপুর উপজেলার বরমী ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং সৌদি আরবের মক্কা মিছফালাহ শাখা বিএনপির সভাপতি ছিলেন।
বিএনপির দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনের ঘোষণা দেন।
পুলিশ জানায়, একাধিক মামলা থাকার কারণে তিনি ২০১৭ সালে নাম পরিবর্তন করে (আব্দুল্লাহ আল মামুন) ভিসা ও পাসপোর্টে সৌদি আরব পাড়ি জমায়। তিনি ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর দেশে ফেরেন।
মোঃ আব্দুল হামিদ খান, জ্যেষ্ঠ প্রতিনিধি : 























