
গাজীপুরের শ্রীপুরে চলন্ত ট্রেনে উঠতে গিয়ে পা পিছলে নিচে পড়ে অলৌকিকভাবে বেঁচে গেলেও শেষ পর্যন্ত মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন কৃষক জালাল উদ্দীন (৪৫)। গতকাল রোববার রাত পৌনে ৯টার দিকে শ্রীপুর রেলস্টেশনে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। সম্পূর্ণ ট্রেন তাঁর ওপর দিয়ে চলে গেলেও তিনি কাটা পড়েননি, কিন্তু গুরুতর আঘাত নিয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাত পৌনে ১২টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়। নিহত জালাল উদ্দীন ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার চরআগলী ইউনিয়নের নিধিরচর গ্রামের মো. তৈয়ব উদ্দিনের ছেলে।
শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মৃত্যুর কিছুক্ষণ আগে গুরুতর আহত অবস্থায় জালাল উদ্দীন এই প্রতিবেদককে জানান, শ্রীপুর রেলস্টেশনে মোহনগঞ্জগামী ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস ট্রেনটি দাঁড়িয়ে ছিল। তিনি সেই ট্রেনে ওঠার জন্য দৌড় দেন। একই সময়ে স্টেশনের এক নম্বর লাইনে দাঁড়ানো দেওয়ানগঞ্জ কমিউটার ট্রেনটিও ছাড়তে শুরু করে। ঠিক তখনই পা পিছলে তিনি ট্রেনের ইঞ্জিনের নিচে চলে যান। এর পরের ঘটনা তিনি বলতে পারেননি।
প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় দোকানি মনির হোসেন জানান, স্টেশনের দুটি ভিন্ন লাইনে দুটি ট্রেন দাঁড়ানো ছিল এবং প্রায় একই সঙ্গে ট্রেন দুটি ছাড়তে শুরু করে। জালাল উদ্দীন হঠাৎ এক নম্বর লাইনের দিকে দৌড়ালে পা পিছলে মুহূর্তের মধ্যে ট্রেনের নিচে পড়ে যান। জামালপুর কমিউটার ট্রেনটি তাঁর ওপর দিয়ে চলে যায়। ট্রেনটি চলে যাওয়ার পর পরই স্টেশনের লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর জালাল উদ্দীন স্বাভাবিকভাবে কথা বলছিলেন এবং নিজের নাম-ঠিকানাও বলতে পারছিলেন। প্রাথমিক চিকিৎসার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়, কিন্তু পথেই তিনি মারা যান।
চরআগলী ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য শহিদুল ইসলাম দুলু মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, “রাতেই তিনি মারা গেছেন। আজ সোমবার বেলা ১১টায় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়েছে।”
শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক জান্নাতুল ফেরদৌস জানান, “গতকাল রোববার রাত ৯টার পর গুরুতর আহত অবস্থায় জালাল উদ্দীন নামে একজনকে হাসপাতালে আনা হয়। তাঁর অবস্থা সংকটাপন্ন ছিল। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাঁকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছিল।”
শ্রীপুর রেলস্টেশন মাস্টার মো. সাইদুর রহমান বলেন, “এ রকম একটি ঘটনা ঘটেছে। তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয়রা তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।”
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আব্দুল বারিক বলেন, “এমন ঘটনা ঘটার পরপরই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে তাঁকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। তবে মৃত্যুর বিষয়টি এখনো আমরা নিশ্চিত হতে পারিনি। তা ছাড়া বিষয়টি রেলওয়ে পুলিশ দেখবে।”
মোঃ আব্দুল হামিদ খান, জ্যেষ্ঠ প্রতিনিধি : 
























