
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কবিতা ও সাহিত্যকেন্দ্রিক নানা লেখা প্রতিনিয়ত স্থান পাচ্ছে। সম্প্রতি ফেসবুকে আলোচনায় এসেছে আশরাফ সরকারের একটি হৃদয়স্পর্শী লেখা, যেখানে তিনি নিজের গ্রাম লাফদড়িকে ঘিরে শৈশবের স্মৃতি, প্রকৃতির সৌন্দর্য এবং হারিয়ে যাওয়া বন্ধুত্বের কথা ফুটিয়ে তুলেছেন। লেখাটি প্রকাশের পর বন্ধু-স্বজনসহ অনলাইনে সক্রিয় পাঠকেরা ব্যাপকভাবে শেয়ার ও মন্তব্য করছেন।
আশরাফ সরকার তাঁর লেখায় লাফদড়ির সকাল বেলার দৃশ্য তুলে ধরেছেন। তিনি লিখেছেন, সূর্যোদয়ের সময় গ্রামের গাছপালা, পাখির কলরব, মিষ্টি বাতাস আর চারপাশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য যেন এখনো তাঁর মনে ভেসে ওঠে। পাশাপাশি তিনি নদীর ঘাট, খেলার মাঠ এবং গ্রামের প্রাণচঞ্চল পরিবেশের চিত্র অঙ্কন করেছেন। লেখাটিতে আছে কেবল গ্রামের সৌন্দর্যের বর্ণনা নয়, বরং আছে হারানো দিনগুলোর প্রতি এক ধরনের মায়া ও আবেগ।
লেখায় আরও এসেছে, লাফদড়ি গ্রামের মাঠে খেলার স্মৃতি, বন্ধুদের সঙ্গে নদীর ঘাটে সময় কাটানোর মুহূর্ত, আর সেসব দিনের কোলাহল আজ নিস্তব্ধ হয়ে গেছে। কাকিল টিয়া পাখির ডাক কিংবা প্রজাপতির ওড়াউড়িও তাঁর স্মৃতিতে নতুন করে ভেসে ওঠে। তিনি প্রশ্ন রেখেছেন—”কোথায় গেল প্রিয় সখী, কোথায় গেল লাফদড়ি?” এই প্রশ্নের মধ্য দিয়ে লেখক প্রকাশ করেছেন হারিয়ে যাওয়া শৈশব ও অমূল্য স্মৃতির প্রতি এক গভীর টান।
সাহিত্য অনুরাগীরা বলছেন, এ ধরনের লেখা মানুষকে শেকড়ের টানে ফিরিয়ে নিয়ে যায়। আধুনিক জীবনের ব্যস্ততা ও যান্ত্রিকতার ভিড়ে এমন গ্রামীণ স্মৃতিচারণ কেবল পাঠককে আবেগাপ্লুত করে না, বরং গ্রামের সঙ্গে নতুন প্রজন্মের সম্পর্ক স্থাপনেও ভূমিকা রাখে। অনেকেই মন্তব্যে লিখেছেন, লাফদড়ি শুধু একটি গ্রামের নাম নয়, বরং প্রত্যেকের শৈশব স্মৃতির প্রতীক।
লেখাটি ফেসবুকে প্রকাশের পর অনেকেই শুভেচ্ছা জানিয়ে মন্তব্য করেছেন এবং আরো লেখার আহ্বান জানিয়েছেন। কেউ কেউ বলেছেন, আশরাফ সরকারের এ ধরনের স্মৃতিচারণ সাহিত্য পাঠকদের জন্য এক বিশেষ অনুপ্রেরণা।
প্রকৃতপক্ষে, লাফদড়ি গ্রামের প্রতি লেখকের এই মমত্ববোধ আমাদের সকলের মধ্যকার গ্রামীণ আবেগকেই জাগিয়ে তোলে। শহরের ব্যস্ত জীবনে গ্রামীন স্মৃতি আমাদের কাছে হয়তো দূরের কোনো অতীত, কিন্তু আশরাফ সরকারের এ লেখা প্রমাণ করে দেয়- সেই অতীত এখনও আমাদের অন্তরে গভীরভাবে বেঁচে আছে।