
রাজধানীর মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রাঙ্গণে বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় আহত সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী উক্য সাইন মারমা (১৪) অবশেষে মৃত্যুর কাছে হার মেনেছে। গতকাল সোমবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এই খবর নিশ্চিত করেছেন তার বাবা উসাই মং মারমা। তার অকাল প্রয়াণে রাঙ্গামাটি জেলার রাজস্থলী উপজেলায়, বিশেষ করে তার নিজ গ্রাম বাঙ্গালহালিয়ায় গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
পরিবারের একমাত্র সন্তানের মৃত্যুতে স্তব্ধ স্বজনরা
উক্য সাইনের খালা মেমে সাইন মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) সে চিকিৎসাধীন ছিল।
উক্য সাইনের মৃত্যুর খবরে তার স্বজন ও প্রতিবেশীদের মধ্যে শোকের মাতম দেখা গেছে। অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েছেন, কেউবা নির্বাক হয়ে দাঁড়িয়ে পরিবারের ভেতরের কান্নার দৃশ্যে শোক প্রকাশ করছেন। পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটির রাজস্থলী উপজেলার বাঙ্গালহালিয়া ইউনিয়নের কলেজ পাড়ার বাসিন্দা উসাই মং মারমার একমাত্র ছেলে ছিল উক্য সাইন। সে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সপ্তম শ্রেণির মেধাবী ছাত্র ছিল।
“এমন তরতাজা প্রাণ এভাবে ঝরে যাবে, ভাবতেই পারিনি”
উক্য সাইনের বাবা উসাই মং মারমা রাজস্থলী উপজাতীয় আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি শিক্ষক হিসেবে কর্মরত। তার মা ডেজিপ্রু মারমা রুমা উপজেলা ক্যটেইনপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা।
একজন প্রতিবেশী দুঃখ করে বলেন, “ওকে ছোটবেলা থেকেই দেখেছি আমরা। এমন একটি তরতাজা প্রাণ এভাবে ঝরে যাবে—ভাবতেই পারছি না। আমরা তার আত্মার শান্তি কামনা করছি।” উক্য সাইনের পিসি হ্লামাচিং মারমা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “এইরকম ভালো ছেলে আমি আর দেখিনি। সে অত্যন্ত ভালো ও মেধাবী ছাত্র ছিল, কোনো রকম দুষ্টুমি ছিল না। আমরা এভাবে তাকে হারাবো, ভাবতেই পারিনি।”
নিহত শিক্ষার্থী উক্য সাইন মারমার বাবা উসাই মং জানিয়েছেন, আগামীকাল (বুধবার) বাঙ্গালহালিয়ায় নিজ গ্রামে তার দাহক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। তিনি আত্মীয়-স্বজন ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের উক্য সাইনের দাহক্রিয়ায় অংশ নিয়ে পূণ্যরাশি দান করার আহ্বান জানিয়েছেন।
মোঃ সুমন খান, রাজস্থলী রাঙ্গামাটি: 




















