ঢাকা ০৩:৫৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ২২ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
News Title :
মিশরের সীমান্ত এলাকা বন্ধ ঘোষণা করলো ইসরাইল চাদে পানি নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ৩৩ প্রধান উপদেষ্টার কাছ থেকেই জুলাই সনদ নিতে চাই: হাসনাত আব্দুল্লাহ জকসু নির্বাচনের তারিখ ২২ ডিসেম্বর চূড়ান্ত সমস্যাগ্রস্ত ব্যাংক একীভূতকরণে শেয়ারহোল্ডাররা ক্ষতিপূরণ পাবেন : বাংলাদেশ ব্যাংক গুম প্রতিরোধ ও প্রতিকার নিশ্চিত করতে ‘গুম প্রতিরোধ, প্রতিকার ও সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫’ অনুমোদন ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর: সিপাহী-জনতার বিপ্লব ও শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান প্রথমবারের মতো ৪৮ দেশের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিতব্য বিশ্বকাপের জন্য নতুন জার্সি প্রকাশ করলো অ্যাডিডাস: আর্জেন্টিনাসহ ২২ দেশের ২০২৬ বিশ্বকাপের জার্সি উন্মোচন পীরগঞ্জে রোগাক্রান্ত গরুর মাংস বিক্রির অভিযোগ, আলোচনায় ‘ঢাকা বিরিয়ানি হাউজ’ সলঙ্গা হেরোইনসহ ২ মাদক কারবারি আটক

ঝালকাঠির বিএনপিতে হতাশার ছায়া: মনোনয়ন নিয়ে বিভাজনে ক্ষোভ

ঝালকাঠি জেলায় বিএনপির রাজনীতিতে নেমে এসেছে হতাশার ছায়া। দীর্ঘ ১৭ বছর ত্যাগী নেতা-কর্মীদের পরিশ্রমে টিকে থাকা এই সংগঠনে এখন মনোনয়নকে কেন্দ্র করে দেখা দিয়েছে বিভাজন ও ক্ষোভের সঞ্চার।

দলের একাংশের অভিযোগ, মনোনয়ন পেয়েছেন এমন একজন প্রার্থী, যার মুখ পর্যন্ত দেখেননি রাজপথে সংগ্রাম করা কর্মীরা। স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে তাই এখন প্রশ্ন ঘুরছে—“রাজনীতি কি তবে এখন ত্যাগের নয়, বেইমানির খেলায় পরিণত হয়েছে?”

একসময় ঝালকাঠির রাজনীতিতে বিএনপি ছিল একটি জনভিত্তিক শক্তিশালী দল। শহর থেকে গ্রাম—প্রতিটি ওয়ার্ডে ছিল তাদের সংগঠনের উপস্থিতি ও প্রাণচাঞ্চল্য। আন্দোলন, সংগ্রাম কিংবা নির্বাচনী মাঠ—সর্বত্রই ত্যাগী নেতাদের নেতৃত্বে দলটি সক্রিয় ছিল।

কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দলীয় কর্মকাণ্ডে নিষ্ক্রিয়তা, নেতৃত্বের অনিশ্চয়তা এবং এখন মনোনয়ন বিতর্কে ক্ষোভ আরও প্রকট হয়ে উঠেছে। অনেক ত্যাগী কর্মীর প্রশ্ন—“যারা আন্দোলনে কখনো ছিল না, গুলি-টিয়ারশেল খাওয়া সময় পাশে ছিল না, তারা আজ প্রার্থী হলো কীভাবে?”

ঝালকাঠির হাট-বাজার ও আড্ডায় এখন বিএনপির মনোনয়ন রাজনীতি নিয়ে চলছে তুমুল আলোচনা। বহু পুরনো নেতা-কর্মীকে দেখা যাচ্ছে নীরব ও হতাশ। তাঁদের ভাষায়, “দল সবসময় বলেছে ত্যাগের মূল্যায়ন হবে, কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে অচেনা মুখরাই নমিনেশন পাচ্ছেন।”

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই বিভাজন শুধু দলের ভেতরেই নয়, সমর্থক ও ভোটারদের মনেও প্রভাব ফেলছে। যদি দ্রুত এই সংকট কাটিয়ে উঠতে না পারে, তাহলে আগামী নির্বাচনে বিএনপি বড় ধরনের সাংগঠনিক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে।

বিশ্লেষকদের মতে, এখনই দলের নেতৃত্বের উচিত স্থানীয় ত্যাগী নেতাদের সঙ্গে বসে আস্থা ও ঐক্য পুনর্গঠন করা, নইলে এই বিভাজন দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতির কারণ হতে পারে।

অন্যদিকে, সাধারণ কর্মীরা আশা করছেন দল তাদের ত্যাগের সঠিক মূল্যায়ন করবে এবং প্রকৃত কর্মীদের নেতৃত্বেই বিএনপি আবার মাঠে ফিরবে।

ঝালকাঠি-২ আসনে মনোনয়ন পাওয়া ইসরাত সুলতানা ইলেন ভুট্টো ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে লেখেন,
“আল্লাহর অশেষ কৃপায় ও জনগণের ভালোবাসায়… আলহামদুলিল্লাহ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) থেকে ঝালকাঠি-২ আসনের মনোনয়ন পাওয়ায় আমি গভীর কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি দলীয় উচ্চ নেতৃত্ব ও মহান আল্লাহর দরবারে। এই মনোনয়ন আমার ব্যক্তিগত অর্জন নয় — এটি ঝালকাঠি ও নলছিটির সাধারণ মানুষের বিশ্বাস ও ভালোবাসার প্রতিফলন।”

তিনি আরও লিখেছেন,
“আমার রাজনীতি প্রতিহিংসার নয়, সেবার। আমি চাই ঝালকাঠি-২ আসন হোক উন্নয়ন, ঐক্য ও গণমানুষের আস্থার প্রতীক। দল-মত নির্বিশেষে সবাই একসাথে কাজ করি। আমি আপনাদেরই মানুষ, জনগণের সেবক। জনগণের ভালোবাসাই আমার আসল পরিচয়।”

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

বার্তা বিভাগ

মিডিয়া তালিকাভুক্ত জাতীয় দৈনিক নববাণী পত্রিকার জন্য সকল জেলা উপজেলায় সংবাদ কর্মী আবশ্যকঃ- আগ্রহীরা আজই আবেদন করুন। মেইল: [email protected]
জনপ্রিয় সংবাদ

মিশরের সীমান্ত এলাকা বন্ধ ঘোষণা করলো ইসরাইল

ঝালকাঠির বিএনপিতে হতাশার ছায়া: মনোনয়ন নিয়ে বিভাজনে ক্ষোভ

আপডেট সময় ০২:১২:৪৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ নভেম্বর ২০২৫

ঝালকাঠি জেলায় বিএনপির রাজনীতিতে নেমে এসেছে হতাশার ছায়া। দীর্ঘ ১৭ বছর ত্যাগী নেতা-কর্মীদের পরিশ্রমে টিকে থাকা এই সংগঠনে এখন মনোনয়নকে কেন্দ্র করে দেখা দিয়েছে বিভাজন ও ক্ষোভের সঞ্চার।

দলের একাংশের অভিযোগ, মনোনয়ন পেয়েছেন এমন একজন প্রার্থী, যার মুখ পর্যন্ত দেখেননি রাজপথে সংগ্রাম করা কর্মীরা। স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে তাই এখন প্রশ্ন ঘুরছে—“রাজনীতি কি তবে এখন ত্যাগের নয়, বেইমানির খেলায় পরিণত হয়েছে?”

একসময় ঝালকাঠির রাজনীতিতে বিএনপি ছিল একটি জনভিত্তিক শক্তিশালী দল। শহর থেকে গ্রাম—প্রতিটি ওয়ার্ডে ছিল তাদের সংগঠনের উপস্থিতি ও প্রাণচাঞ্চল্য। আন্দোলন, সংগ্রাম কিংবা নির্বাচনী মাঠ—সর্বত্রই ত্যাগী নেতাদের নেতৃত্বে দলটি সক্রিয় ছিল।

কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দলীয় কর্মকাণ্ডে নিষ্ক্রিয়তা, নেতৃত্বের অনিশ্চয়তা এবং এখন মনোনয়ন বিতর্কে ক্ষোভ আরও প্রকট হয়ে উঠেছে। অনেক ত্যাগী কর্মীর প্রশ্ন—“যারা আন্দোলনে কখনো ছিল না, গুলি-টিয়ারশেল খাওয়া সময় পাশে ছিল না, তারা আজ প্রার্থী হলো কীভাবে?”

ঝালকাঠির হাট-বাজার ও আড্ডায় এখন বিএনপির মনোনয়ন রাজনীতি নিয়ে চলছে তুমুল আলোচনা। বহু পুরনো নেতা-কর্মীকে দেখা যাচ্ছে নীরব ও হতাশ। তাঁদের ভাষায়, “দল সবসময় বলেছে ত্যাগের মূল্যায়ন হবে, কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে অচেনা মুখরাই নমিনেশন পাচ্ছেন।”

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই বিভাজন শুধু দলের ভেতরেই নয়, সমর্থক ও ভোটারদের মনেও প্রভাব ফেলছে। যদি দ্রুত এই সংকট কাটিয়ে উঠতে না পারে, তাহলে আগামী নির্বাচনে বিএনপি বড় ধরনের সাংগঠনিক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে।

বিশ্লেষকদের মতে, এখনই দলের নেতৃত্বের উচিত স্থানীয় ত্যাগী নেতাদের সঙ্গে বসে আস্থা ও ঐক্য পুনর্গঠন করা, নইলে এই বিভাজন দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতির কারণ হতে পারে।

অন্যদিকে, সাধারণ কর্মীরা আশা করছেন দল তাদের ত্যাগের সঠিক মূল্যায়ন করবে এবং প্রকৃত কর্মীদের নেতৃত্বেই বিএনপি আবার মাঠে ফিরবে।

ঝালকাঠি-২ আসনে মনোনয়ন পাওয়া ইসরাত সুলতানা ইলেন ভুট্টো ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে লেখেন,
“আল্লাহর অশেষ কৃপায় ও জনগণের ভালোবাসায়… আলহামদুলিল্লাহ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) থেকে ঝালকাঠি-২ আসনের মনোনয়ন পাওয়ায় আমি গভীর কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি দলীয় উচ্চ নেতৃত্ব ও মহান আল্লাহর দরবারে। এই মনোনয়ন আমার ব্যক্তিগত অর্জন নয় — এটি ঝালকাঠি ও নলছিটির সাধারণ মানুষের বিশ্বাস ও ভালোবাসার প্রতিফলন।”

তিনি আরও লিখেছেন,
“আমার রাজনীতি প্রতিহিংসার নয়, সেবার। আমি চাই ঝালকাঠি-২ আসন হোক উন্নয়ন, ঐক্য ও গণমানুষের আস্থার প্রতীক। দল-মত নির্বিশেষে সবাই একসাথে কাজ করি। আমি আপনাদেরই মানুষ, জনগণের সেবক। জনগণের ভালোবাসাই আমার আসল পরিচয়।”