ঢাকা ০২:১৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ২২ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
News Title :
মিশরের সীমান্ত এলাকা বন্ধ ঘোষণা করলো ইসরাইল চাদে পানি নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ৩৩ প্রধান উপদেষ্টার কাছ থেকেই জুলাই সনদ নিতে চাই: হাসনাত আব্দুল্লাহ জকসু নির্বাচনের তারিখ ২২ ডিসেম্বর চূড়ান্ত সমস্যাগ্রস্ত ব্যাংক একীভূতকরণে শেয়ারহোল্ডাররা ক্ষতিপূরণ পাবেন : বাংলাদেশ ব্যাংক গুম প্রতিরোধ ও প্রতিকার নিশ্চিত করতে ‘গুম প্রতিরোধ, প্রতিকার ও সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫’ অনুমোদন ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর: সিপাহী-জনতার বিপ্লব ও শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান প্রথমবারের মতো ৪৮ দেশের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিতব্য বিশ্বকাপের জন্য নতুন জার্সি প্রকাশ করলো অ্যাডিডাস: আর্জেন্টিনাসহ ২২ দেশের ২০২৬ বিশ্বকাপের জার্সি উন্মোচন পীরগঞ্জে রোগাক্রান্ত গরুর মাংস বিক্রির অভিযোগ, আলোচনায় ‘ঢাকা বিরিয়ানি হাউজ’ সলঙ্গা হেরোইনসহ ২ মাদক কারবারি আটক

সালথায় শিক্ষাখাতে দুর্নীতির মহোৎসব : সাবেক টিইও ও শিক্ষক নেতাদের বিরুদ্ধে কোটি টাকার আত্মসাৎ অভিযোগ

ফরিদপুরের সালথা উপজেলার শিক্ষাখাতে চলছে চরম দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে তোলপাড়। ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরের ক্ষুদ্র সংস্কার ও নির্বাচনকালীন জরুরি মেরামতের নামে সরকার কর্তৃক বরাদ্দকৃত অর্থ আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে সাবেক উপজেলা শিক্ষা অফিসার (টিইও) আতিকুর রহমান এবং শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি মাইনুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক জাহিদুর রহমানের বিরুদ্ধে।

তদন্তে জানা গেছে, উপজেলার অধিকাংশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা এ বরাদ্দের বিষয়টি সম্পর্কে কিছুই জানতেন না। শিক্ষা অফিস থেকে কোনো লিখিত বা মৌখিক নির্দেশনাও তাদের কাছে পৌঁছায়নি। অথচ এসব বিদ্যালয়ের নামে ভুয়া বিল-ভাউচার তৈরি করে বিপুল অঙ্কের সরকারি অর্থ তুলে নেওয়া হয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, আত্মসাৎ করা অর্থের বৈধতা দিতে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) প্রত্যয়নপত্র নকল করে জমা দেওয়া হয়। এমনকি কিছু বিদ্যালয়ের নামও পরিবর্তন করে একই কাগজপত্র একাধিকবার ব্যবহার করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

একাধিক প্রধান শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, তাদের না জানিয়ে বিদ্যালয়ের নামে বিল তৈরি করা হয়েছে। এক শিক্ষক বলেন, “আমাদের বিদ্যালয়ের কোনো সংস্কার কাজই হয়নি। অথচ পরে শুনছি আমাদের স্কুলের নামে কয়েক লক্ষ টাকার বিল উঠেছে।”

আরেক শিক্ষক অভিযোগ করেন, “সাবেক টিইও এবং মাইনুল ইসলাম ফোন করে বিল-ভাউচারে স্বাক্ষর দিতে চাপ দেওয়া হয়। স্বাক্ষর না দিলে বদলির ভয় দেখানো হয়।”

গত ৮ অক্টোবর দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) বিষয়টি নিয়ে একটি অভিযোগ জমা পড়ে। অভিযোগের পর স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিক বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করলে সাবেক টিইও আতিকুর রহমান ও শিক্ষক নেতা মাইনুল ইসলাম তাদের ভয়ভীতি ও হুমকি দিতে শুরু করেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, তদন্ত বন্ধ করতে তারা রাজনৈতিক প্রভাব খাটানোরও চেষ্টা চালান। কয়েকজন সাংবাদিক জানিয়েছেন, “আমরা তথ্য যাচাই করতে গেলে ফোনে হুমকি আসে— ‘তদন্ত করলে ভালো হবে না’। বিষয়টি আমরা স্থানীয় প্রশাসনকেও জানিয়েছি।”

সালথা উপজেলার সচেতন নাগরিক ও শিক্ষক সমাজ বলছেন, বছরের পর বছর ধরে শিক্ষা অফিসে দুর্নীতি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ নিয়েছে। ক্ষুদ্র সংস্কার, রং করার কাজ, বেঞ্চ কেনা, টয়লেট সংস্কার — এসব খাতের টাকায় নিয়মিত অনিয়ম চলে আসছে।

তারা অবিলম্বে একটি নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন, জড়িতদের শাস্তি ও আত্মসাৎ করা সরকারি অর্থ পুনরুদ্ধারের দাবি জানিয়েছেন।

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

বার্তা বিভাগ

মিডিয়া তালিকাভুক্ত জাতীয় দৈনিক নববাণী পত্রিকার জন্য সকল জেলা উপজেলায় সংবাদ কর্মী আবশ্যকঃ- আগ্রহীরা আজই আবেদন করুন। মেইল: [email protected]
জনপ্রিয় সংবাদ

মিশরের সীমান্ত এলাকা বন্ধ ঘোষণা করলো ইসরাইল

সালথায় শিক্ষাখাতে দুর্নীতির মহোৎসব : সাবেক টিইও ও শিক্ষক নেতাদের বিরুদ্ধে কোটি টাকার আত্মসাৎ অভিযোগ

আপডেট সময় ০৯:৫৯:১১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫

ফরিদপুরের সালথা উপজেলার শিক্ষাখাতে চলছে চরম দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে তোলপাড়। ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরের ক্ষুদ্র সংস্কার ও নির্বাচনকালীন জরুরি মেরামতের নামে সরকার কর্তৃক বরাদ্দকৃত অর্থ আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে সাবেক উপজেলা শিক্ষা অফিসার (টিইও) আতিকুর রহমান এবং শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি মাইনুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক জাহিদুর রহমানের বিরুদ্ধে।

তদন্তে জানা গেছে, উপজেলার অধিকাংশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা এ বরাদ্দের বিষয়টি সম্পর্কে কিছুই জানতেন না। শিক্ষা অফিস থেকে কোনো লিখিত বা মৌখিক নির্দেশনাও তাদের কাছে পৌঁছায়নি। অথচ এসব বিদ্যালয়ের নামে ভুয়া বিল-ভাউচার তৈরি করে বিপুল অঙ্কের সরকারি অর্থ তুলে নেওয়া হয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, আত্মসাৎ করা অর্থের বৈধতা দিতে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) প্রত্যয়নপত্র নকল করে জমা দেওয়া হয়। এমনকি কিছু বিদ্যালয়ের নামও পরিবর্তন করে একই কাগজপত্র একাধিকবার ব্যবহার করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

একাধিক প্রধান শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, তাদের না জানিয়ে বিদ্যালয়ের নামে বিল তৈরি করা হয়েছে। এক শিক্ষক বলেন, “আমাদের বিদ্যালয়ের কোনো সংস্কার কাজই হয়নি। অথচ পরে শুনছি আমাদের স্কুলের নামে কয়েক লক্ষ টাকার বিল উঠেছে।”

আরেক শিক্ষক অভিযোগ করেন, “সাবেক টিইও এবং মাইনুল ইসলাম ফোন করে বিল-ভাউচারে স্বাক্ষর দিতে চাপ দেওয়া হয়। স্বাক্ষর না দিলে বদলির ভয় দেখানো হয়।”

গত ৮ অক্টোবর দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) বিষয়টি নিয়ে একটি অভিযোগ জমা পড়ে। অভিযোগের পর স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিক বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করলে সাবেক টিইও আতিকুর রহমান ও শিক্ষক নেতা মাইনুল ইসলাম তাদের ভয়ভীতি ও হুমকি দিতে শুরু করেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, তদন্ত বন্ধ করতে তারা রাজনৈতিক প্রভাব খাটানোরও চেষ্টা চালান। কয়েকজন সাংবাদিক জানিয়েছেন, “আমরা তথ্য যাচাই করতে গেলে ফোনে হুমকি আসে— ‘তদন্ত করলে ভালো হবে না’। বিষয়টি আমরা স্থানীয় প্রশাসনকেও জানিয়েছি।”

সালথা উপজেলার সচেতন নাগরিক ও শিক্ষক সমাজ বলছেন, বছরের পর বছর ধরে শিক্ষা অফিসে দুর্নীতি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ নিয়েছে। ক্ষুদ্র সংস্কার, রং করার কাজ, বেঞ্চ কেনা, টয়লেট সংস্কার — এসব খাতের টাকায় নিয়মিত অনিয়ম চলে আসছে।

তারা অবিলম্বে একটি নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন, জড়িতদের শাস্তি ও আত্মসাৎ করা সরকারি অর্থ পুনরুদ্ধারের দাবি জানিয়েছেন।