ঢাকা ১০:৩৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ২৩ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
News Title :
মিশরের সীমান্ত এলাকা বন্ধ ঘোষণা করলো ইসরাইল চাদে পানি নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ৩৩ প্রধান উপদেষ্টার কাছ থেকেই জুলাই সনদ নিতে চাই: হাসনাত আব্দুল্লাহ জকসু নির্বাচনের তারিখ ২২ ডিসেম্বর চূড়ান্ত সমস্যাগ্রস্ত ব্যাংক একীভূতকরণে শেয়ারহোল্ডাররা ক্ষতিপূরণ পাবেন : বাংলাদেশ ব্যাংক গুম প্রতিরোধ ও প্রতিকার নিশ্চিত করতে ‘গুম প্রতিরোধ, প্রতিকার ও সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫’ অনুমোদন ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর: সিপাহী-জনতার বিপ্লব ও শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান প্রথমবারের মতো ৪৮ দেশের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিতব্য বিশ্বকাপের জন্য নতুন জার্সি প্রকাশ করলো অ্যাডিডাস: আর্জেন্টিনাসহ ২২ দেশের ২০২৬ বিশ্বকাপের জার্সি উন্মোচন পীরগঞ্জে রোগাক্রান্ত গরুর মাংস বিক্রির অভিযোগ, আলোচনায় ‘ঢাকা বিরিয়ানি হাউজ’ সলঙ্গা হেরোইনসহ ২ মাদক কারবারি আটক

২৫ বছর ধরে চলছে ভবনহীন ‘ভূতুড়ে’ কলেজ: এইচএসসিতে শূন্য ফল

বগুড়ার ধুনট উপজেলার গোসাইবাড়ী মহিলা কলেজ—নাম আছে, সাইনবোর্ড আছে, কিন্তু নেই ভবন, নেই শ্রেণিকক্ষ, নেই পাঠদান। কাগজে-কলমে কলেজটি টিকে থাকলেও বাস্তবে তা যেন এক ‘ভূতুড়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান’। দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে চলা এই কলেজে কখনো নিয়মিত ক্লাস হয়নি, শিক্ষক-ছাত্রীদের উপস্থিতিও নেই।

সম্প্রতি এ কলেজ থেকে চারজন ছাত্রী এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিলেও কেউই উত্তীর্ণ হতে পারেননি। শুরু থেকেই এমপিওভুক্ত না হওয়া এই কলেজটি এখন কার্যত অস্তিত্ব হারানোর পথে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৯ সালে গোসাইবাড়ী মহিলা কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয়। দুই বছর পর, অর্থাৎ ২০০১ সালে কলেজটি ছাত্রী ভর্তির অনুমতি পায়। কিন্তু স্থানীয়দের অভিযোগ, যেসব ছাত্রীকে এই কলেজে ভর্তি দেখানো হয়, তারা বাস্তবে অন্য প্রতিষ্ঠানে ক্লাস করে।

কলেজের করণিক মহব্বত আলী বলেন, “কতজন ছাত্রী ভর্তি হয়েছে বা পাস করেছে—এসব তথ্য অধ্যক্ষ নিজেই রাখেন। তবে যারা ভর্তি হন, তারা অন্য কলেজে গিয়ে পড়াশোনা করেন। এখানে শিক্ষকরা কেউই নিয়মিত আসেন না।”

একজন প্রভাষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, “অধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর আলম আসার পর কে কোথায় শিক্ষক, কে কী দায়িত্বে—কেউ জানে না। কলেজে ছাত্রীই আসে না, তাই আমরা যাই-ই বা কেন?”

কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ বেলাল হোসেন অভিযোগ করে বলেন, “আওয়ামী লীগের সময়ে আমাকে সরিয়ে জাহাঙ্গীর আলমকে অধ্যক্ষ করা হয়। এরপর থেকেই কলেজের এই করুণ অবস্থা। এখন আর কেউ ক্লাস নিতে আসে না, ছাত্রীরাও আসে না।”

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বর্তমান অধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “হ্যাঁ, এ বছর আমাদের চারজন ছাত্রী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল, কেউই পাস করেনি।”

তবে কলেজের দুরবস্থা নিয়ে সংবাদ প্রকাশ না করার অনুরোধ জানান তিনি। ২৫ বছর পেরিয়ে গেলেও গোসাইবাড়ী মহিলা কলেজের এখনো নেই নিজস্ব ভবন, শ্রেণিকক্ষ কিংবা কার্যকর শিক্ষা কার্যক্রম।

স্থানীয় অভিভাবক ও শিক্ষানুরাগীদের প্রশ্ন—“যে কলেজে ক্লাসই হয় না, সেটি টিকে আছে কীভাবে?”

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

বার্তা বিভাগ

মিডিয়া তালিকাভুক্ত জাতীয় দৈনিক নববাণী পত্রিকার জন্য সকল জেলা উপজেলায় সংবাদ কর্মী আবশ্যকঃ- আগ্রহীরা আজই আবেদন করুন। মেইল: [email protected]
জনপ্রিয় সংবাদ

মিশরের সীমান্ত এলাকা বন্ধ ঘোষণা করলো ইসরাইল

২৫ বছর ধরে চলছে ভবনহীন ‘ভূতুড়ে’ কলেজ: এইচএসসিতে শূন্য ফল

আপডেট সময় ১০:২৬:৫৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫

বগুড়ার ধুনট উপজেলার গোসাইবাড়ী মহিলা কলেজ—নাম আছে, সাইনবোর্ড আছে, কিন্তু নেই ভবন, নেই শ্রেণিকক্ষ, নেই পাঠদান। কাগজে-কলমে কলেজটি টিকে থাকলেও বাস্তবে তা যেন এক ‘ভূতুড়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান’। দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে চলা এই কলেজে কখনো নিয়মিত ক্লাস হয়নি, শিক্ষক-ছাত্রীদের উপস্থিতিও নেই।

সম্প্রতি এ কলেজ থেকে চারজন ছাত্রী এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিলেও কেউই উত্তীর্ণ হতে পারেননি। শুরু থেকেই এমপিওভুক্ত না হওয়া এই কলেজটি এখন কার্যত অস্তিত্ব হারানোর পথে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৯ সালে গোসাইবাড়ী মহিলা কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয়। দুই বছর পর, অর্থাৎ ২০০১ সালে কলেজটি ছাত্রী ভর্তির অনুমতি পায়। কিন্তু স্থানীয়দের অভিযোগ, যেসব ছাত্রীকে এই কলেজে ভর্তি দেখানো হয়, তারা বাস্তবে অন্য প্রতিষ্ঠানে ক্লাস করে।

কলেজের করণিক মহব্বত আলী বলেন, “কতজন ছাত্রী ভর্তি হয়েছে বা পাস করেছে—এসব তথ্য অধ্যক্ষ নিজেই রাখেন। তবে যারা ভর্তি হন, তারা অন্য কলেজে গিয়ে পড়াশোনা করেন। এখানে শিক্ষকরা কেউই নিয়মিত আসেন না।”

একজন প্রভাষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, “অধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর আলম আসার পর কে কোথায় শিক্ষক, কে কী দায়িত্বে—কেউ জানে না। কলেজে ছাত্রীই আসে না, তাই আমরা যাই-ই বা কেন?”

কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ বেলাল হোসেন অভিযোগ করে বলেন, “আওয়ামী লীগের সময়ে আমাকে সরিয়ে জাহাঙ্গীর আলমকে অধ্যক্ষ করা হয়। এরপর থেকেই কলেজের এই করুণ অবস্থা। এখন আর কেউ ক্লাস নিতে আসে না, ছাত্রীরাও আসে না।”

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বর্তমান অধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “হ্যাঁ, এ বছর আমাদের চারজন ছাত্রী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল, কেউই পাস করেনি।”

তবে কলেজের দুরবস্থা নিয়ে সংবাদ প্রকাশ না করার অনুরোধ জানান তিনি। ২৫ বছর পেরিয়ে গেলেও গোসাইবাড়ী মহিলা কলেজের এখনো নেই নিজস্ব ভবন, শ্রেণিকক্ষ কিংবা কার্যকর শিক্ষা কার্যক্রম।

স্থানীয় অভিভাবক ও শিক্ষানুরাগীদের প্রশ্ন—“যে কলেজে ক্লাসই হয় না, সেটি টিকে আছে কীভাবে?”