
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মাওনা চৌরাস্তা এখন যানজট ও জনদুর্ভোগের এক চরম উদাহরণ। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের উপর অবস্থিত এই গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক কেন্দ্রটি এখন ভাসমান ব্যবসায়ী ও অবৈধ স্ট্যান্ডের দখলে। ফুটপাত ছাড়িয়ে দোকানপাট এখন মূল সড়কেও ছড়িয়ে পড়েছে, যা প্রতিদিন তীব্র যানজট সৃষ্টি করছে এবং পথচারীদের চলাচলে মারাত্মক বাধা সৃষ্টি করছে।
মাওনা চৌরাস্তার চিত্র এখন খুবই করুণ। উড়ালসড়কের নিচে ও আশপাশে শত শত অস্থায়ী দোকান গড়ে উঠেছে। এসব দোকান মহাসড়কের লেনের প্রায় অর্ধেক অংশ পর্যন্ত দখল করে আছে। বিশেষ করে, মাওনা থেকে কালিয়াকৈর এবং শ্রীপুর থেকে ঢাকার দিকে যাওয়া সড়কগুলোর অবস্থা খুবই খারাপ। এর ফলে পণ্যবাহী গাড়ি, যাত্রীবাহী বাস, এমনকি জরুরি সেবার যানবাহন যেমন ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি এবং অ্যাম্বুলেন্সও যানজটে আটকে থাকে।
এই অবৈধ দখলের কারণে সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। পথচারীদের হাঁটার কোনো জায়গা নেই। নারী ও শিশুদের ঝুঁকি নিয়ে মূল সড়ক দিয়ে চলাচল করতে হয়। স্থানীয় ব্যবসায়ী সোহেল এবং বাসিন্দা মোঃ রাশেদের মতে, এই অবস্থা খুবই কষ্টকর। তারা জানান, ফুটপাত না থাকায় সড়ক দিয়ে হাঁটতে গিয়ে প্রতিনিয়ত ছিনতাইয়ের ঘটনাও ঘটছে। বিশেষ করে, মাওনা চৌরাস্তা থেকে ফায়ার সার্ভিস অফিস পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার এলাকায় ১৫টিরও বেশি হাসপাতাল থাকায়, যানজটের কারণে রোগীদের হাসপাতালে পৌঁছাতেও দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
এ অবস্থার পেছনে স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশের নীরবতাকে দায়ী করা হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, কিছু অসাধু মার্কেট কর্তৃপক্ষ এবং স্থানীয় ক্ষমতাসীন দলের নেতা অবৈধভাবে দোকান বসতে সাহায্য করছেন এবং প্রতিটি দোকান থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় করছেন। এই চাঁদার ভাগ হাইওয়ে পুলিশের পকেটেও যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মাঝে মাঝে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হলেও, তা লোক দেখানো বলে মনে করা হচ্ছে।
স্থানীয়দের একটাই দাবি, দ্রুত এই অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করে ফুটপাত ও সড়ক জনচলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হোক। প্রশাসনের কাছে এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য জোর দাবি জানানো হয়েছে, যাতে সবাই নিরাপদে ও স্বাচ্ছন্দ্যে চলাচল করতে পারে।