
দেশের পুরাতন স্বৈরাচারী ব্যবস্থাকে বাতিল করে একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই। তিনি প্রস্তাবিত সংসদের উভয় কক্ষে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (PR) পদ্ধতি চালুর ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
গতকাল, ২রা সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার, ক্যান্টনমেন্টের ইসিবি চত্বরস্থ মহারাজ কমিউনিটি সেন্টারে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। “ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইসলামপন্থীদের ঐক্য ও উলামায়ে কিরামের করণীয়” শীর্ষক এই সভাটি আয়োজন করে জাতীয় উলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ, ঢাকা মহানগর উত্তর।
পীর সাহেব চরমোনাই তার বক্তব্যে দেশের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, “আগামী দিনে বাংলাদেশে যাতে কোনো নির্বাচিত স্বৈরাচার, দুর্নীতিবাজ, লুটেরা ও সন্ত্রাসী গোষ্ঠী রাষ্ট্রক্ষমতাকে ব্যবহার করে জনগণের অধিকার কেড়ে নিতে না পারে, রাষ্ট্রের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে দলীয়করণের মাধ্যমে ধ্বংস করতে না পারে এবং একদলীয় কর্তৃত্ববাদী শাসন কায়েম করতে না পারে, সে জন্য প্রয়োজনীয় মৌলিক সংস্কার করে নির্বাচন দিতে হবে।” তিনি বিশ্বাস করেন যে এই ধরনের সংস্কার হলে দেশ আরও সুন্দর ও নিরাপদ হবে এবং দেশের মানুষ শান্তিতে থাকতে পারবে।
আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান। তিনি ‘ঐক্যমত্য কমিশনকে’ উদ্দেশ্য করে বলেন, “রাষ্ট্র সংস্কার ও সকল প্রকার বৈষম্য দূর করার জন্য প্রায় দেড় হাজার শিশু-কিশোর ও ছাত্র-যুবক তাদের জীবন উৎসর্গ করেছে, এবং বিশ হাজার আহত এখনো সুচিকিৎসা পায়নি।” তিনি বর্তমান পরিস্থিতিকে অসম্পূর্ণ আখ্যা দিয়ে বলেন, খুনিদের বিচার এখনো দৃশ্যমান হয়নি। তিনি অভিযোগ করেন যে, ফ্যাসিস্টরা এখনো মিছিল করছে এবং ঘুরে বেড়াচ্ছে, কিন্তু তাদের বিচারের আওতায় আনা হচ্ছে না। তিনি আরও বলেন, “পুলিশসহ প্রশাসনের সর্বত্র আওয়ামী দোসরা এখনো বহাল তবিয়তে আছে।”
মাওলানা গাজী আতাউর রহমান দৃঢ়ভাবে বলেন, প্রয়োজনীয় সংস্কার ও খুনিদের বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত কোনোভাবেই নির্বাচনের আয়োজন করা যাবে না।
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন মুফতি ফয়জুল্লাহ, মুফতী ডাঃ মুহাম্মাদ উল্লাহ আনসারী, মুফতী মোঃ মাছউদুর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার গিয়াস উদ্দিন পরশ, মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস রশিদী, মাওলানা মাহমুদুল হাসান, মুফতি আবুল কালাম আজাদ আনোয়ারী, হাফেজ ইব্রাহিম বিন আলী, মাওলানা মুজিবুর রহমান ফারুকী, মুফতি তাজুল ইসলাম আবরারী, মাওলানা আব্দুল লতিফ ফারুকী, হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদুল্লাহ নাহিদ, আলী হোসেন প্রমুখ। সভাটি সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর উত্তরের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ্ব আমিরুল হক তালুকদার এবং সঞ্চালনা করেন মুফতী ফরিদুল ইসলাম।