আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র হত্যা ও ভোট ডাকাতির দায়ে জাতির কাছে একটি দুষ্কৃতিকারী দলে পরিণত হয়েছে। তাদের পুনর্বাসনের আর কোনো সুযোগ নেই—এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, নিখোঁজ জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক এম. ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদীর লুনা।

তিনি বলেন, বিগত দেড় দশকের অপশাসনে আওয়ামী লীগ এ অঞ্চলে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে আজীবন ক্ষমতায় থাকার ব্যর্থ স্বপ্ন দেখেছিল। কিন্তু ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে তাদের সেই স্বপ্ন ভেঙে গেছে। পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনার মতো নিষ্ঠুর, নির্মম এবং স্বৈরাচারী শাসক পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল।

ইলিয়াস আলীর গুম প্রসঙ্গে লুনা বলেন, “এই অঞ্চলের উন্নয়নের টুটি চেপে ধরতে গিয়ে আওয়ামী লীগ কোনো দ্বিধা ছাড়াই আমার স্বামী ইলিয়াস আলীকে গুম করেছে। তিনি যখন শান্তি ও উন্নয়নের সমাজ গঠনের লক্ষ্যে গণজাগরণ সৃষ্টি করেছিলেন, তখনই তিনি শেখ হাসিনার রোষানলে পড়েন।”

তিনি আরও বলেন, “দেশ ও এলাকার কল্যাণে কাজ করতে গিয়ে ইলিয়াস আলী নিজের স্ত্রী-সন্তান ও পরিবারকেও ভুলে যেতেন। ঘুমের মধ্যে স্বপ্নে অনেক সময় আচমকা বলে উঠতেন—কাল কোথায় যাবেন, কী করবেন। এতটাই এলাকার কাজে নিবেদিত ছিলেন তিনি। বিলাসী জীবন নয়, সাধারণ জীবন যাপনই ছিল তার চিরচেনা রূপ। এখনও আমরা সিলেটে একটি ভাড়া বাসায় থাকি। গ্রামের টিনসেড বাড়িতে ইলিয়াস আলীর অমলিন স্মৃতি আজও সবাইকে টানে। আমরা বিশ্বাস করি, তিনি এখনও বেঁচে আছেন এবং একদিন আমাদের মাঝে ফিরে আসবেন।”
তিনি সকলের কাছে ইলিয়াস আলীর জন্য দোয়া প্রার্থনার অনুরোধ জানান।

গত ২৪ (জুন) মঙ্গলবার রাতে উসমানপুর ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ড বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে ইছামতি গ্রামে আয়োজিত ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন উপজেলা বিএনপি’র সহ-সভাপতি আব্দুর রউফ আব্দুল। তিনি বলেন, গত “২০১৩ সালে প্রকাশ্যে ইছামতি কেন্দ্রে জাল ভোটের ছবি তোলার সময় দৈনিক আমার দেশ-এর ওসমানীনগর প্রতিনিধি সাইফুর এম রেফুলের ওপর হামলা চালায় আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা । আজও সেই সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। সাংবাদিক রেফুল আমাদের পাশের গ্রামের সন্তান হয়েও আওয়ামী লীগের নির্মম হামলা থেকে রক্ষা পাননি। অবিলম্বে দোষীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাই।”

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সিলেট জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ময়নুল হক চৌধুরী।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মখদ্দছ আলী মখন মিয়া এবং সঞ্চালনায় ছিলেন সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হান্নান।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন—উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রায়হান আহমদ, জেলা কৃষকদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মোক্তার আহমদ বকুল, দয়ামীর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. সুজন আলী, উসমানপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি হারুনুর রশিদ, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন, তাজপুর ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান কবির আহমদ, ছাত্রদলের আহ্বায়ক সুয়েব আহমদ, যুগ্ম আহ্বায়ক আল মাছুম আবির প্রমুখ।