ঢাকা ০৬:২৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৪ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
News Title :
উর্মিলা নুসরাত: স্বপ্নের পথে এক নতুন মুখ এস এম জাহাঙ্গীরের লিফলেট বিতরণ : নিকুঞ্জে নেতাকর্মীর ঢল বালিয়াডাঙ্গীতে নির্ধারিত মূল্যের সার চড়া দামে বিক্রি : বিএডিসি সার ডিলারের গুদাম সিলগালা বিশ্বনাথে জামায়াতের উদ্যোগে প্রতিবন্ধীদের মাঝে হুইল চেয়ার বিতরণ বরগুনায় শুরু হলো মাসব্যাপী শরৎ উৎসব কৃষকদলের শক্তি বৃদ্ধি: গোসাইবাড়ী ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত বিশ্বনাথে চালকের হাত-পা বেঁ’ধে অটোরিকশা ছি/ন/তা/ই, দুইজন গ্রে’প্তা’র গণতন্ত্রের সৈনিক মো: আব্বাস আলী: ত্যাগ ও সংগ্রামের মূর্ত প্রতীক যুগ যুগ ধরে অবহেলা আর বঞ্চনায় বন্দি জেলখানা গ্রামের মানুষ পাহাড়ে মিষ্টি কুমড়ার ঝলক ! কৃষকের মুখে হাসি

লাদাখে বিক্ষোভ: শ্রীলঙ্কা-বাংলাদেশ-নেপালের পর ভারতও কি ‘জেন জি’ বিক্ষোভ দেখলো?

  • ডেস্ক নিউজ :
  • আপডেট সময় ০৫:২৩:১৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ৩১ বার পড়া হয়েছে

ভারতের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল লাদাখকে পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা এবং চাকরিতে সংরক্ষণের দাবিতে আন্দোলনরত বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর তীব্র সংঘর্ষে অন্তত চারজন নিহত ও ৯০ জন আহত হয়েছেন। বুধবারের এই সহিংসতায় পুলিশের গাড়িতে অগ্নিসংযোগ এবং ক্ষমতাসীন বিজেপি দলের কার্যালয়ে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনার পর ভারতের সংবাদমাধ্যমগুলোতে প্রশ্ন উঠেছে, এটি কি শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ ও নেপালের পর ভারতেও জেন জি (Generation Z) বিক্ষোভের প্রতিফলন?

আন্দোলনের সূত্রপাত :

অধিকারকর্মী সোনম ওয়াংচুকসহ ১৫ জন গত ১০ সেপ্টেম্বর থেকে চার দফা দাবিতে অনশন করছিলেন। তাদের মূল দাবিগুলো ছিল লাদাখের জন্য পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা, চাকরিতে সংরক্ষণ এবং লেহ ও কার্গিলকে নিয়ে একটি লোকসভা আসন গঠন। মঙ্গলবার রাতে দুই অনশনকারীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এই ঘটনায় লাদাখ অ্যাপেক্স বডির (এলএবি) যুব শাখা আন্দোলনের ডাক দেয়।

বুধবার সকাল থেকে লেহ শহর সম্পূর্ণ বন্ধ ছিল। এনডিএস মেমোরিয়াল গ্রাউন্ডে বিশাল জমায়েত শেষে বিক্ষোভকারীরা মিছিল নিয়ে বিভিন্ন রাস্তায় ছড়িয়ে পড়ে। বিজেপি সদরদপ্তর ও হিল কাউন্সিল অফিসে পাথর ছোড়া শুরু হলে পরিস্থিতি দ্রুত খারাপ হয়। পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের সেল ছুড়লে জনতা আরও সহিংস হয়ে ওঠে।

কেন্দ্রীয় সরকারের বিবৃতি :

ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে যে, বুধবার বেলা সাড়ে এগারোটা নাগাদ সোনম ওয়াংচুকের উসকানিমূলক বক্তৃতার পর জনতা বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সরকারি কার্যালয়ে হামলা চালায়। তারা তিনটি অফিসে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করে। এতে ৩০ জনের বেশি পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর সদস্য আহত হন। পুলিশ আত্মরক্ষার্থে গুলি চালালে কয়েকজনের মৃত্যু হয়।

এই ঘটনার পরপরই সোনম ওয়াংচুক অনশন ভঙ্গ করেন এবং সহিংসতা বন্ধ করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “আমরা লাদাখ বা দেশে কোনো অস্থিরতা চাই না।” তিনি আরও বলেন যে, গত পাঁচ বছর ধরে তারা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চালিয়ে আসলেও আজকের সহিংসতা তাকে অত্যন্ত দুঃখ দিয়েছে।

অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে যে, লাদাখের নেতাদের সঙ্গে তাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে আলোচনা চলছে। ৬ অক্টোবর পরবর্তী বৈঠক নির্ধারিত আছে। মন্ত্রণালয় অভিযোগ করেছে যে, কিছু রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ব্যক্তি আলোচনার প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করার চেষ্টা করছে।

জেন জি-র আন্দোলন?

বুধবারের আন্দোলনটি ছিল মূলত যুবকদের দ্বারা পরিচালিত। ডিডব্লিউ-এর সাংবাদিক স্যমন্তক ঘোষ এটিকে ‘জেন জি-র আন্দোলন’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেছেন, অনশনকারীদের অসুস্থ হওয়ার খবর শুনে জেন জি-র একটি অংশ ক্ষুব্ধ হয়ে রাস্তায় নেমে আসে। যদিও পরিস্থিতি শান্ত করতে লেহ শহরে কারফিউ জারি করা হয়েছে।

তবে স্থানীয় বিজেপি নেতারা দাবি করেছেন, এই সহিংস আন্দোলনের পেছনে কংগ্রেসের মদত রয়েছে। তারা এই আন্দোলনকে জেন জি-র আন্দোলন মানতে নারাজ। এই ঘটনার পর পুলিশ ব্যাপক গ্রেফতার অভিযান শুরু করেছে এবং ৫০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, যাদের মধ্যে একজন কংগ্রেস নেতা থাকতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

Daily Naba Bani

মিডিয়া তালিকাভুক্ত জাতীয় দৈনিক নববাণী পত্রিকার জন্য সকল জেলা উপজেলায় সংবাদ কর্মী আবশ্যকঃ- আগ্রহীরা আজই আবেদন করুন। মেইল: [email protected]
জনপ্রিয় সংবাদ

উর্মিলা নুসরাত: স্বপ্নের পথে এক নতুন মুখ

লাদাখে বিক্ষোভ: শ্রীলঙ্কা-বাংলাদেশ-নেপালের পর ভারতও কি ‘জেন জি’ বিক্ষোভ দেখলো?

আপডেট সময় ০৫:২৩:১৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ভারতের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল লাদাখকে পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা এবং চাকরিতে সংরক্ষণের দাবিতে আন্দোলনরত বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর তীব্র সংঘর্ষে অন্তত চারজন নিহত ও ৯০ জন আহত হয়েছেন। বুধবারের এই সহিংসতায় পুলিশের গাড়িতে অগ্নিসংযোগ এবং ক্ষমতাসীন বিজেপি দলের কার্যালয়ে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনার পর ভারতের সংবাদমাধ্যমগুলোতে প্রশ্ন উঠেছে, এটি কি শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ ও নেপালের পর ভারতেও জেন জি (Generation Z) বিক্ষোভের প্রতিফলন?

আন্দোলনের সূত্রপাত :

অধিকারকর্মী সোনম ওয়াংচুকসহ ১৫ জন গত ১০ সেপ্টেম্বর থেকে চার দফা দাবিতে অনশন করছিলেন। তাদের মূল দাবিগুলো ছিল লাদাখের জন্য পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা, চাকরিতে সংরক্ষণ এবং লেহ ও কার্গিলকে নিয়ে একটি লোকসভা আসন গঠন। মঙ্গলবার রাতে দুই অনশনকারীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এই ঘটনায় লাদাখ অ্যাপেক্স বডির (এলএবি) যুব শাখা আন্দোলনের ডাক দেয়।

বুধবার সকাল থেকে লেহ শহর সম্পূর্ণ বন্ধ ছিল। এনডিএস মেমোরিয়াল গ্রাউন্ডে বিশাল জমায়েত শেষে বিক্ষোভকারীরা মিছিল নিয়ে বিভিন্ন রাস্তায় ছড়িয়ে পড়ে। বিজেপি সদরদপ্তর ও হিল কাউন্সিল অফিসে পাথর ছোড়া শুরু হলে পরিস্থিতি দ্রুত খারাপ হয়। পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের সেল ছুড়লে জনতা আরও সহিংস হয়ে ওঠে।

কেন্দ্রীয় সরকারের বিবৃতি :

ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে যে, বুধবার বেলা সাড়ে এগারোটা নাগাদ সোনম ওয়াংচুকের উসকানিমূলক বক্তৃতার পর জনতা বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সরকারি কার্যালয়ে হামলা চালায়। তারা তিনটি অফিসে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করে। এতে ৩০ জনের বেশি পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর সদস্য আহত হন। পুলিশ আত্মরক্ষার্থে গুলি চালালে কয়েকজনের মৃত্যু হয়।

এই ঘটনার পরপরই সোনম ওয়াংচুক অনশন ভঙ্গ করেন এবং সহিংসতা বন্ধ করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “আমরা লাদাখ বা দেশে কোনো অস্থিরতা চাই না।” তিনি আরও বলেন যে, গত পাঁচ বছর ধরে তারা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চালিয়ে আসলেও আজকের সহিংসতা তাকে অত্যন্ত দুঃখ দিয়েছে।

অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে যে, লাদাখের নেতাদের সঙ্গে তাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে আলোচনা চলছে। ৬ অক্টোবর পরবর্তী বৈঠক নির্ধারিত আছে। মন্ত্রণালয় অভিযোগ করেছে যে, কিছু রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ব্যক্তি আলোচনার প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করার চেষ্টা করছে।

জেন জি-র আন্দোলন?

বুধবারের আন্দোলনটি ছিল মূলত যুবকদের দ্বারা পরিচালিত। ডিডব্লিউ-এর সাংবাদিক স্যমন্তক ঘোষ এটিকে ‘জেন জি-র আন্দোলন’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেছেন, অনশনকারীদের অসুস্থ হওয়ার খবর শুনে জেন জি-র একটি অংশ ক্ষুব্ধ হয়ে রাস্তায় নেমে আসে। যদিও পরিস্থিতি শান্ত করতে লেহ শহরে কারফিউ জারি করা হয়েছে।

তবে স্থানীয় বিজেপি নেতারা দাবি করেছেন, এই সহিংস আন্দোলনের পেছনে কংগ্রেসের মদত রয়েছে। তারা এই আন্দোলনকে জেন জি-র আন্দোলন মানতে নারাজ। এই ঘটনার পর পুলিশ ব্যাপক গ্রেফতার অভিযান শুরু করেছে এবং ৫০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, যাদের মধ্যে একজন কংগ্রেস নেতা থাকতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।