
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গাজা বিষয়ক বক্তব্য বিশ্বজুড়ে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। তিনি অবিলম্বে গাজায় যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন এবং বলেছেন, “আমরা এটি থামাবই।” তার এই আকস্মিক বক্তব্য আন্তর্জাতিক মহলে যেমন কৌতূহল সৃষ্টি করেছে, তেমনি তার পূর্ববর্তী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে এর বৈপরীত্য নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
ট্রাম্প তার ভাষণে আরও বলেন, “আমাদের এটি সম্পন্ন করতে হবে। শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য আলোচনাও করতে হবে। আমাদের বন্দিদের ফেরত আনতে হবে।” তিনি উল্লেখ করেন, গাজায় যুদ্ধের কারণে ইতোমধ্যে ৬৫ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি মারা গেছেন। তবে, বিশ্লেষকদের মতে, এই পরিসংখ্যান বাস্তবতার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো ট্রাম্পের এই বক্তৃতাকে “ভণ্ডামি” হিসেবে দেখছে। তাদের মতে, গাজায় যুদ্ধের জন্য ইসরায়েলকে সবচেয়ে বেশি সামরিক ও আর্থিক সহায়তা দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র, যার মূল পৃষ্ঠপোষক স্বয়ং ট্রাম্প। শুধু তাই নয়, ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক আফ্রিকায় স্থানান্তরিত করে গাজায় আবাসিক এলাকা নির্মাণের পরিকল্পনাও তার পূর্ববর্তী শাসনামলে আলোচিত হয়েছিল।
ট্রাম্প তার বক্তব্যে হামাসকে বারবার শান্তির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের জন্য দায়ী করলেও, অনেক আন্তর্জাতিক মহল মনে করে যে ইসরায়েলই যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাস্তবায়নে বারবার বাধা দিচ্ছে। একই সঙ্গে, সাম্প্রতিক সময়ে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে কয়েকটি পশ্চিমা দেশের স্বীকৃতিকে তিনি হামাসের জন্য “পুরস্কার” হিসেবে অভিহিত করেছেন। তার এই মন্তব্য মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি প্রক্রিয়াকে আরও জটিল করে তুলছে।
জাতিসংঘের অধিবেশন চলাকালীন নিউইয়র্কের রাস্তায় একটি অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটে। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ তার গাড়িবহর নিয়ে পুলিশি বাধার মুখে পড়েন। পরে জানা যায়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গাড়িবহর একই সময়ে ঐ এলাকা দিয়ে যাচ্ছিল এবং তার নিরাপত্তার কারণে অন্যান্য সড়ক আটকে দেওয়া হয়েছিল।
এই অপ্রত্যাশিত বাধা থেকে মুক্ত হতে ম্যাক্রোঁ সরাসরি ট্রাম্পকে ফোন করেন। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম, যেমন গার্ডিয়ান, এই খবর প্রকাশ করে। এই ঘটনাটি অধিবেশনের পাশাপাশী একটি আলোচিত বিষয়ে পরিণত হয়, যা দুই দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের মধ্যেকার নিরাপত্তা ও কূটনৈতিক প্রটোকল নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু করে।