
সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে স্বামী-সন্তানকে ফেলে রেখে এক গৃহবধূর পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ার ঘটনা এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, স্বামী ও দুই সন্তানকে রেখে রেহেনা খাতুন (৩৮) নামে এক নারী দীর্ঘদিন ধরে পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় স্থানীয় মহলে চলছে তীব্র আলোচনা- সমালোচনা, প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ দাবি উঠেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার কলিযোগা গ্রামের মোঃ নজরুল ইসলাম (৪৪), পিতা নুর ইসলাম মোড়ল, ২০০৩ সালে ঠেকরা রহিমপুর গ্রামের নুর ইসলাম সরদারের মেয়ে রেহেনা খাতুনকে সামাজিক ও শরিয়ত মোতাবেক বিয়ে করেন। দাম্পত্য জীবনে তাঁদের দুটি ছেলে সন্তান জন্ম নেয়। বড় ছেলে রাকিব হোসেন শারীরিক প্রতিবন্ধী এবং ছোট ছেলে শাকিব হোসেন বর্তমানে বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছে।
কিন্তু সংসার সুখের বদলে অশান্তিতে রূপ নেয়। অভিযোগ রয়েছে, মোবাইল ফোনের মাধ্যমে রেহেনা খাতুনের পরিচয় ঘটে শ্যামনগর উপজেলার যাদবপুর গ্রামের রবিউল ইসলামের ছেলে একাধিক নারীর সাথে অবৈধ সম্পর্ক প্রতারক মাসুদ রানা (৪০) এর সঙ্গে। পরিচয় থেকে ঘনিষ্ঠতা এবং পরবর্তীতে তা পরিণত হয় অবৈধ সম্পর্কে।
এলাকাবাসীর দাবি, বাবার বাড়ি যাওয়ার অজুহাতে রেহেনা খাতুন প্রায়ই প্রেমিকের সঙ্গে বিভিন্ন পার্কে ও আবাসিক হোটেলে সময় কাটাতেন। বিষয়টি জানাজানি হলে স্বামী নজরুল ইসলাম স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের দ্বারস্থ হন। তখন রেহেনা সংসার টিকিয়ে রাখার আশ্বাস দিলেও পরে আবারও প্রেমিকের টানে সংসার ভেঙে দেন।
এদিকে নজরুল ইসলাম বিদেশে (ওমান প্রবাসী) থাকার সুযোগে গত রমজান মাসে রেহেনা খাতুন স্বর্ণালঙ্কার, গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র এবং প্রায় সাড়ে চার লক্ষ টাকা নিয়ে গোপনে চলে যান। যদিও বর্তমানে তিনি বাবার বাড়িতে থাকার দাবি করছেন, তবে অভিযোগ রয়েছে যে তিনি আসলে কালিগঞ্জ শহরে একটি ভাড়া বাসায় প্রেমিকের টানে অবস্থান করছেন। অন্যদিকে মাসুদ রানা বর্তমানে সৌদি আরব প্রবাসী হলেও নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন রেহেনা খাতুনের সঙ্গে।
ফলে দুই সন্তান একজন প্রতিবন্ধী ও অন্যজন অপ্রাপ্তবয়স্ক অসহায় অবস্থায় পড়ে গেছে। স্বামী নজরুল ইসলাম দেশে ফিরে সন্তানদের দেখাশোনা করছেন এবং মানবেতর জীবনযাপন করছেন বলে জানা গেছে।
স্থানীয় সচেতন মহল এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, একজন মা যেভাবে স্বামী-সন্তানকে ফেলে রেখে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে সর্বস্ব নিয়ে চলে যান, তা সমাজের জন্য বেদনাদায়ক ও লজ্জাজনক।”
এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রতারণার মাধ্যমে মাসুদ রানা রেহেনা খাতুনকে বিপথে নিয়েছে। তাঁরা বলেন, এ ধরনের অনৈতিক কর্মকাণ্ড সমাজে অশান্তি ও অবক্ষয়ের জন্ম দেয়। তাই প্রশাসনকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।