ঢাকা ০৪:৩৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৫ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
News Title :
সিংগাইরে উপজেলা ও পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মীসভা অমন্তসেন তঞ্চঙ্গ্যার হ/ত্যা/কারী পুলিশের হাতে গ্রে’ফতার গলাচিপার ভাঙরা গ্রামে নদী ভাঙন রোধে কার্যকর পদক্ষেপের দাবিতে মানববন্ধন বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসার উদ্যোগ নিয়েছেন “পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ” সদস্য কে এস মং সাতক্ষীরার একমাত্র কমিউনিটি রেডিও নলতা ৯৯.২ এর সংবাদ কর্মীদের সভা অনুষ্ঠিত বগুড়ার ধুনটে যমুনা নদীতে তীব্র ভাঙনে দুশ্চিন্তায় শিমুলবাড়ি গ্ৰ্যামের নদীপাড়ের মানুষ  বগুড়ায় সাংবাদিক প্রশিক্ষণ সমাপনী ও সনদ বিতরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত  ধুনটে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রির দায়ে ৫ ফার্মেসিকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের জরিমানা শিক্ষিত জাতি গড়লেই সমৃদ্ধ বাংলাদেশ সম্ভব: এম কফিল উদ্দিন আহমেদ বিশ্বনাথে এক ড্রাইভারকে হত্যার চেষ্টা করে ছিনতাইয়ের নাটক সাজালেন ব্যবসায়ী

তদন্তের আওতায় সাবেক তিন সিইসি: প্রহসনের নির্বাচন ঘিরে উল্লাপাড়া সহ সারাদেশে জবাবদিহির দাবি

বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের বিতর্কিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘিরে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ভূমিকা নিয়ে শুরু হওয়া তদন্ত। সাবেক তিন প্রধান নির্বাচন কমিশনার—হাবিবুল আউয়াল, একেএম নূরুল হুদা ও কাজী রকিবউদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ও অনৈতিক নির্বাচনী ব্যবস্থাপনার অভিযোগে সরকারিভাবে তদন্ত শুরু হয়েছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই তিনটি নির্বাচন দেশের গণতন্ত্র, ভোটাধিকার ও সাংবিধানিক শৃঙ্খলার ওপর সরাসরি আঘাত হেনেছে। বিপুল পরিমাণ জনগণের করের টাকায় পরিচালিত হয় এসব নির্বাচন; যেখানে রাতের অন্ধকারে ব্যালট ভর্তি, বিরোধী প্রার্থীদের ঠেকানো, প্রশাসনের অপব্যবহার ও দলীয় ক্যাডারদের সক্রিয় অংশগ্রহণ দেশজুড়ে তীব্র বিতর্কের জন্ম দেয়।

নতুন করে এই তদন্তের খবর ছড়িয়ে পড়তেই দেশের বিভিন্ন মহলে ব্যাপক ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। সচেতন নাগরিক সমাজ মনে করছে, এই পদক্ষেপ শুধু অতীতের অন্যায়ের বিচার নয়, বরং ভবিষ্যতের জন্য একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে—যাতে আর কোনো সরকার রাষ্ট্রীয় প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনকে ব্যবহার করে প্রহসনের নির্বাচন করতে না পারে।

তবে শুধু সিইসি বা নির্বাচন কমিশনের সদস্যদের বিচারের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে সচেতন মহল দাবি তুলেছে—এই প্রহসনের নির্বাচনে মাঠ পর্যায়ে যারা বাস্তবায়ন করেছে, তাদেরকেও চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনতে হবে।

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার একটি নজির সামনে এসেছে। স্থানীয় সূত্র ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্যে উঠে এসেছে, উল্লাপাড়ায় অনুষ্ঠিত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে ভোট ডাকাতি, ভোটকেন্দ্র দখল, ভুয়া ব্যালট ভর্তি, প্রশাসনিক সহায়তায় রাতের ভোট ইত্যাদি ঘটনার পেছনে সরাসরি নেতৃত্ব দিয়েছেন স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি।

তালিকায় রয়েছেন সাবেক পৌর কাউন্সিলর আহসান আলী সরকার, জাহিদুজ্জামান কাকন, মীর আরিফুল ইসলাম উজ্জ্বল, হাফিজুর রহমান হাফিজ, চেয়ারম্যান সোহেল, রিভলি ইসলাম কবিতা, মনিরুজ্জামান পান্না, সাংবাদিক পরিচয়ে পরিচিত গোলাম মোস্তফা। এদের নেতৃত্বে স্থানীয় চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য, দলীয় ক্যাডার ও প্রশাসনের কিছু অংশ রাতের বেলায় ভোটকেন্দ্র নিয়ন্ত্রণ করেছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।

উপজেলা পর্যায়ে তৎকালীন ইউএনও, ওসি ও কিছু জেলা প্রশাসক নির্বাচনের দিন দায়িত্ব পালন করেও এসব অনিয়মে কার্যত চোখ বন্ধ রেখেছেন কিংবা সরাসরি সহযোগিতা করেছেন বলে জানায় স্থানীয়রা। সচেতন মহল মনে করছে, তদন্তে এই পর্যায়ের কর্মকর্তাদেরও জবাবদিহির আওতায় আনলে কেবল প্রকৃত সত্য উন্মোচিত হবে।

উল্লাপাড়ার একজন সিনিয়র শিক্ষক বলেন, “এটা শুধু রাজনৈতিক দুর্নীতি নয়, এটা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ভোটাধিকার হরণ। এই সমস্ত অনিয়মের দায় কেবল ঢাকার কমিশনাররা নেবেন, আর যারা মাঠে ভোট চুরি করলেন তারা বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াবেন—এটা হতে পারে না।”

বাংলাদেশের গণতন্ত্রে দীর্ঘদিন ধরে নির্বাচনী প্রহসনের কালো ছায়া লেগে আছে। এবার যদি রাষ্ট্রযন্ত্র সঠিকভাবে তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের বিচারের মুখোমুখি করে, তাহলে তা হবে একটি যুগান্তকারী দৃষ্টান্ত। সেই সাথে সরকারের প্রতি অনুরোধ, শুধু সিইসি নয়—প্রান্তিক পর্যায়ের বাস্তবায়নকারীদেরও যেন বিচারের মুখোমুখি করা হয়।

আপলোডকারীর তথ্য

Daily Naba Bani

মিডিয়া তালিকাভুক্ত জাতীয় দৈনিক নববাণী পত্রিকার জন্য সকল জেলা উপজেলায় সংবাদ কর্মী আবশ্যকঃ- আগ্রহীরা আজই আবেদন করুন। মেইল: [email protected]
জনপ্রিয় সংবাদ

সিংগাইরে উপজেলা ও পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মীসভা

তদন্তের আওতায় সাবেক তিন সিইসি: প্রহসনের নির্বাচন ঘিরে উল্লাপাড়া সহ সারাদেশে জবাবদিহির দাবি

আপডেট সময় ০২:৪৮:৩৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫

বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের বিতর্কিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘিরে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ভূমিকা নিয়ে শুরু হওয়া তদন্ত। সাবেক তিন প্রধান নির্বাচন কমিশনার—হাবিবুল আউয়াল, একেএম নূরুল হুদা ও কাজী রকিবউদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ও অনৈতিক নির্বাচনী ব্যবস্থাপনার অভিযোগে সরকারিভাবে তদন্ত শুরু হয়েছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই তিনটি নির্বাচন দেশের গণতন্ত্র, ভোটাধিকার ও সাংবিধানিক শৃঙ্খলার ওপর সরাসরি আঘাত হেনেছে। বিপুল পরিমাণ জনগণের করের টাকায় পরিচালিত হয় এসব নির্বাচন; যেখানে রাতের অন্ধকারে ব্যালট ভর্তি, বিরোধী প্রার্থীদের ঠেকানো, প্রশাসনের অপব্যবহার ও দলীয় ক্যাডারদের সক্রিয় অংশগ্রহণ দেশজুড়ে তীব্র বিতর্কের জন্ম দেয়।

নতুন করে এই তদন্তের খবর ছড়িয়ে পড়তেই দেশের বিভিন্ন মহলে ব্যাপক ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। সচেতন নাগরিক সমাজ মনে করছে, এই পদক্ষেপ শুধু অতীতের অন্যায়ের বিচার নয়, বরং ভবিষ্যতের জন্য একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে—যাতে আর কোনো সরকার রাষ্ট্রীয় প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনকে ব্যবহার করে প্রহসনের নির্বাচন করতে না পারে।

তবে শুধু সিইসি বা নির্বাচন কমিশনের সদস্যদের বিচারের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে সচেতন মহল দাবি তুলেছে—এই প্রহসনের নির্বাচনে মাঠ পর্যায়ে যারা বাস্তবায়ন করেছে, তাদেরকেও চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনতে হবে।

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার একটি নজির সামনে এসেছে। স্থানীয় সূত্র ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্যে উঠে এসেছে, উল্লাপাড়ায় অনুষ্ঠিত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে ভোট ডাকাতি, ভোটকেন্দ্র দখল, ভুয়া ব্যালট ভর্তি, প্রশাসনিক সহায়তায় রাতের ভোট ইত্যাদি ঘটনার পেছনে সরাসরি নেতৃত্ব দিয়েছেন স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি।

তালিকায় রয়েছেন সাবেক পৌর কাউন্সিলর আহসান আলী সরকার, জাহিদুজ্জামান কাকন, মীর আরিফুল ইসলাম উজ্জ্বল, হাফিজুর রহমান হাফিজ, চেয়ারম্যান সোহেল, রিভলি ইসলাম কবিতা, মনিরুজ্জামান পান্না, সাংবাদিক পরিচয়ে পরিচিত গোলাম মোস্তফা। এদের নেতৃত্বে স্থানীয় চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য, দলীয় ক্যাডার ও প্রশাসনের কিছু অংশ রাতের বেলায় ভোটকেন্দ্র নিয়ন্ত্রণ করেছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।

উপজেলা পর্যায়ে তৎকালীন ইউএনও, ওসি ও কিছু জেলা প্রশাসক নির্বাচনের দিন দায়িত্ব পালন করেও এসব অনিয়মে কার্যত চোখ বন্ধ রেখেছেন কিংবা সরাসরি সহযোগিতা করেছেন বলে জানায় স্থানীয়রা। সচেতন মহল মনে করছে, তদন্তে এই পর্যায়ের কর্মকর্তাদেরও জবাবদিহির আওতায় আনলে কেবল প্রকৃত সত্য উন্মোচিত হবে।

উল্লাপাড়ার একজন সিনিয়র শিক্ষক বলেন, “এটা শুধু রাজনৈতিক দুর্নীতি নয়, এটা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ভোটাধিকার হরণ। এই সমস্ত অনিয়মের দায় কেবল ঢাকার কমিশনাররা নেবেন, আর যারা মাঠে ভোট চুরি করলেন তারা বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াবেন—এটা হতে পারে না।”

বাংলাদেশের গণতন্ত্রে দীর্ঘদিন ধরে নির্বাচনী প্রহসনের কালো ছায়া লেগে আছে। এবার যদি রাষ্ট্রযন্ত্র সঠিকভাবে তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের বিচারের মুখোমুখি করে, তাহলে তা হবে একটি যুগান্তকারী দৃষ্টান্ত। সেই সাথে সরকারের প্রতি অনুরোধ, শুধু সিইসি নয়—প্রান্তিক পর্যায়ের বাস্তবায়নকারীদেরও যেন বিচারের মুখোমুখি করা হয়।