ঢাকা ০৭:৫৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৪ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
News Title :
উর্মিলা নুসরাত: স্বপ্নের পথে এক নতুন মুখ এস এম জাহাঙ্গীরের লিফলেট বিতরণ : নিকুঞ্জে নেতাকর্মীর ঢল বালিয়াডাঙ্গীতে নির্ধারিত মূল্যের সার চড়া দামে বিক্রি : বিএডিসি সার ডিলারের গুদাম সিলগালা বিশ্বনাথে জামায়াতের উদ্যোগে প্রতিবন্ধীদের মাঝে হুইল চেয়ার বিতরণ বরগুনায় শুরু হলো মাসব্যাপী শরৎ উৎসব কৃষকদলের শক্তি বৃদ্ধি: গোসাইবাড়ী ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত বিশ্বনাথে চালকের হাত-পা বেঁ’ধে অটোরিকশা ছি/ন/তা/ই, দুইজন গ্রে’প্তা’র গণতন্ত্রের সৈনিক মো: আব্বাস আলী: ত্যাগ ও সংগ্রামের মূর্ত প্রতীক যুগ যুগ ধরে অবহেলা আর বঞ্চনায় বন্দি জেলখানা গ্রামের মানুষ পাহাড়ে মিষ্টি কুমড়ার ঝলক ! কৃষকের মুখে হাসি

ভিক্ষুক থেকে উদ্যোক্তা: ফিরোজ-আছিয়ার নতুন দিগন্ত

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৯:৪১:৩৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ৫৯ বার পড়া হয়েছে

সুবল চন্দ্র দাস,ওসমানীনগর প্রতিনিধি ::
সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার সাদিপুর ইউনিয়নের পশ্চিম গুজাতলী গ্রামের বৃদ্ধ ফিরোজ আলী (৬০)। চার সন্তানের জনক ফিরোজ আলী আগে ছিলেন সবজি বিক্রেতা। ১৪ বছর আগে মৌলভীবাজার থেকে সবজি নিয়ে আসার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় হারান একটি পা। চিকিৎসার ব্যয়ে নিঃস্ব হয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয় তাকে। এর কিছুদিন পর বড় ছেলে বিয়ে করে আলাদা হয়ে যান। ছোট ছেলেরাও প্রতিদিন কাজ পান না। শেষ পর্যন্ত দুই ছেলে ও এক মেয়ে-স্ত্রীর আহার জোগাতে ভিক্ষায় নামতে বাধ্য হন ফিরোজ। প্রতিদিন ভিক্ষা করে আয় হতো ২০০ থেকে ৩০০ টাকা। সেই টাকাতেই চলত সংসার।

ফিরোজ আলীর মতো কষ্টের গল্প আছে আছিয়া বেগমেরও (৫৬)। তিনি গোয়ালাবাজার ইউনিয়নের কলারাই গ্রামের বাসিন্দা। পৈত্রিক সূত্রে সেখানে থাকলেও বালাগঞ্জ উপজেলার সোনাপুর গ্রামের আব্দুল বারিকের সঙ্গে বিয়ের পর স্বামীর বাড়িতে বেশিদিন থাকা হয়নি তার। তিন সন্তান নিয়ে বাবার বাড়িতে ফিরে এলেও সেখানেও ঠাঁই হয়নি আছিয়ার। বাধ্য হয়ে কলারাই বাজারের একটি কলোনিতে মাসে দুই হাজার টাকা ভাড়ায় বসবাস শুরু করেন।

আট বছর আগে সড়ক দুর্ঘটনায় তার ছেলে গুরুতর আহত হন। সেই ছেলের চার সন্তানসহ, আরও দুই ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে আছিয়ার সংসারের সদস্য সংখ্যা দাঁড়ায় আট জনে। সংসার চালাতে কখনও কখনও ভিক্ষা করতে হয় তাকে। তবে, এই পেশায় থাকতে চান না আছিয়া। তাই মাঝে মাঝে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরিষ্কারের কাজ করেন তিনি।

ফিরোজ আলী ও আছিয়া বেগমের এই দুঃখগাঁথা জীবনে আলো জ্বালাতে এগিয়ে আসে উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়। ভিক্ষুক পুনর্বাসন ও বিকল্প কর্মসংস্থান কর্মসূচির আওতায় ফিরোজ আলীকে দেওয়া হয় একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা এবং আছিয়া বেগমকে একটি ভ্রাম্যমাণ মুদির দোকান। ৯ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এসব হস্তান্তর করা হয়। স্বপ্ন পূরণ হওয়ায় আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন ফিরোজ-আছিয়া।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন সমাজসেবা কার্যালয়ের সিলেট বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম, জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আব্দুল রফিক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন, জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন, রফিকুল হক, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা জয়তী দত্ত, ভারপ্রাপ্ত ইউপি চেয়ারম্যান ছালিক আহমদ এবং ইউনিয়ন সমাজকর্মী মশিউর আলম মুছা।

এর আগে উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে “উপজেলা পর্যায়ে বাস্তবায়িত ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমের গতিশীলতা আনয়ন” শীর্ষক প্রশিক্ষণ এবং “সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় অন্তর্ভুক্তিমূলক উপকারভোগী নির্ধারণে চ্যালেঞ্জ ও সমাধান” শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

Daily Naba Bani

মিডিয়া তালিকাভুক্ত জাতীয় দৈনিক নববাণী পত্রিকার জন্য সকল জেলা উপজেলায় সংবাদ কর্মী আবশ্যকঃ- আগ্রহীরা আজই আবেদন করুন। মেইল: [email protected]
জনপ্রিয় সংবাদ

উর্মিলা নুসরাত: স্বপ্নের পথে এক নতুন মুখ

ভিক্ষুক থেকে উদ্যোক্তা: ফিরোজ-আছিয়ার নতুন দিগন্ত

আপডেট সময় ০৯:৪১:৩৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সুবল চন্দ্র দাস,ওসমানীনগর প্রতিনিধি ::
সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার সাদিপুর ইউনিয়নের পশ্চিম গুজাতলী গ্রামের বৃদ্ধ ফিরোজ আলী (৬০)। চার সন্তানের জনক ফিরোজ আলী আগে ছিলেন সবজি বিক্রেতা। ১৪ বছর আগে মৌলভীবাজার থেকে সবজি নিয়ে আসার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় হারান একটি পা। চিকিৎসার ব্যয়ে নিঃস্ব হয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয় তাকে। এর কিছুদিন পর বড় ছেলে বিয়ে করে আলাদা হয়ে যান। ছোট ছেলেরাও প্রতিদিন কাজ পান না। শেষ পর্যন্ত দুই ছেলে ও এক মেয়ে-স্ত্রীর আহার জোগাতে ভিক্ষায় নামতে বাধ্য হন ফিরোজ। প্রতিদিন ভিক্ষা করে আয় হতো ২০০ থেকে ৩০০ টাকা। সেই টাকাতেই চলত সংসার।

ফিরোজ আলীর মতো কষ্টের গল্প আছে আছিয়া বেগমেরও (৫৬)। তিনি গোয়ালাবাজার ইউনিয়নের কলারাই গ্রামের বাসিন্দা। পৈত্রিক সূত্রে সেখানে থাকলেও বালাগঞ্জ উপজেলার সোনাপুর গ্রামের আব্দুল বারিকের সঙ্গে বিয়ের পর স্বামীর বাড়িতে বেশিদিন থাকা হয়নি তার। তিন সন্তান নিয়ে বাবার বাড়িতে ফিরে এলেও সেখানেও ঠাঁই হয়নি আছিয়ার। বাধ্য হয়ে কলারাই বাজারের একটি কলোনিতে মাসে দুই হাজার টাকা ভাড়ায় বসবাস শুরু করেন।

আট বছর আগে সড়ক দুর্ঘটনায় তার ছেলে গুরুতর আহত হন। সেই ছেলের চার সন্তানসহ, আরও দুই ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে আছিয়ার সংসারের সদস্য সংখ্যা দাঁড়ায় আট জনে। সংসার চালাতে কখনও কখনও ভিক্ষা করতে হয় তাকে। তবে, এই পেশায় থাকতে চান না আছিয়া। তাই মাঝে মাঝে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরিষ্কারের কাজ করেন তিনি।

ফিরোজ আলী ও আছিয়া বেগমের এই দুঃখগাঁথা জীবনে আলো জ্বালাতে এগিয়ে আসে উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়। ভিক্ষুক পুনর্বাসন ও বিকল্প কর্মসংস্থান কর্মসূচির আওতায় ফিরোজ আলীকে দেওয়া হয় একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা এবং আছিয়া বেগমকে একটি ভ্রাম্যমাণ মুদির দোকান। ৯ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এসব হস্তান্তর করা হয়। স্বপ্ন পূরণ হওয়ায় আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন ফিরোজ-আছিয়া।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন সমাজসেবা কার্যালয়ের সিলেট বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম, জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আব্দুল রফিক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন, জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন, রফিকুল হক, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা জয়তী দত্ত, ভারপ্রাপ্ত ইউপি চেয়ারম্যান ছালিক আহমদ এবং ইউনিয়ন সমাজকর্মী মশিউর আলম মুছা।

এর আগে উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে “উপজেলা পর্যায়ে বাস্তবায়িত ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমের গতিশীলতা আনয়ন” শীর্ষক প্রশিক্ষণ এবং “সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় অন্তর্ভুক্তিমূলক উপকারভোগী নির্ধারণে চ্যালেঞ্জ ও সমাধান” শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।