ঢাকা ০৯:৫০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কক্সবাজার সদরের সমন্বয়ক পরিচয়ে ৩ লাখ টাকা চাঁদা দাবি, যুবক আটক

কক্সবাজার সদরে সমন্বয়ক পরিচয়ে বনবিভাগের এক রেঞ্জ কর্মকর্তার কাছে চাঁদা দাবির অভিযোগে দায়ের মামলায় এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পুলিশ বলছে, গ্রেপ্তার যুবক কক্সবাজারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কক্সবাজারের সমন্বয়ক দাবিদার মনির খানের সহযোগী এবং মামলার প্রধান আসামি।

 

শনিবার (৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় কক্সবাজার সদর উপজেলার পিএমখালী ইউনিয়নের জুমছড়ি এলাকায় এ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

 

কক্সবাজার জেলা পুলিশের মুখপাত্র, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) মো. জসিম উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। গ্রেপ্তার মোহাম্মদ শরীফ (২২) ওই এলাকার মোহাম্মদ হাছনের ছেলে।

 

মামলার অপর আসামি মনির খান (২৩) কক্সবাজার সদর উপজেলার খুরুশকুল ইউনিয়নের তেতৈয়া এলাকার মো. গুরাপুতুর ছেলে। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্থানীয় সমন্বয়ক।

 

মামলার নথির বরাতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জসিম উদ্দিন বলেন, শুক্রবার বিকেলে কক্সবাজার সদরের পিএমখালী ইউনিয়নে বনবিভাগের পিএমখালী রেঞ্জ অফিসে মোহাম্মদ শরীফ স্বশরীরে গিয়ে স্থানীয় বন কর্মকর্তা মো. ফারুক আহমেদ বাবুলের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ থাকার কথা বলেন। এসব অভিযোগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্থানীয় সমন্বয়করা কর্মসূচী ঘোষণা করবে বলে তথ্য দেন। আলাপের এক পর্যায়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্থানীয় সমন্বয়ক মনির খানের সহযোগী বলে দাবি করেন। মনিরের নির্দেশে সে আলাপ করতে গেছে বলেও তথ্য দেয়। পরে বনবিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তার কাছে ৩ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। দাবি করা চাঁদা না দিলে সমন্বয়করা আন্দোলনের কর্মসূচী দেবে বলে রেঞ্জ কর্মকর্তাকে হুমকিও হয় বলেন, জেলার পুলিশের এই কর্মকর্তা।

 

তিনি বলেন, এ ঘটনায় শনিবার দুপুরে বনবিভাগের পিএমখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা ফারুক আহমেদ বাবুল বাদী হয়ে ২ জনকে আসামি করে কক্সবাজার সদর থানায় এজাহার দায়ের করেন। পরে পুলিশ মামলাটি নথিভূক্ত করার পর অভিযান চালিয়ে প্রধান আসামি মোহাম্মদ শরীফকে গ্রেপ্তার করেছে।

 

মামলার বাদী ফারুক আহমেদ বাবুল বলেন, গ্রেপ্তার মোহাম্মদ শরীফ স্থানীয় সমন্বয়ক মনির খানের সহযোগী দাবি করে তার বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ৩ লাখ টাকা চাঁদা চান। এ নিয়ে আলাপের সময় তিনি কৌশলে দুইজনের কথোপকথনের ভিডিও চিত্র মোবাইলে ধারণ করেন।

 

তিনি আরও বলেন, পরে আমি বিষয়টি বনবিভাগের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কর্মকর্তা অবহিত করি। তাদের পরামর্শের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আমি মামলা দায়ের করেছি। এ ব্যাপারে কথা বলতে সমন্বয়ক দাবিদার মনির খানের ব্যক্তিগত মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তিনি সাড়া দেননি।

 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কক্সবাজারে সমন্বয়ক নামের কোন পদ ও কমিটি নেই তথ্য দিয়ে আন্দোলনকারিদের স্থানীয় ছাত্র প্রতিনিধি শাহেদুল ইসলাম শাহেদ বলেছেন, গ্রেপ্তার মোহাম্মদ শরীফ ছাত্র আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত কেউ নয়। তবে মনির খানের ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে আন্দোলনের সকল পর্যায়ে অংশগ্রহণ থাকলেও ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত কিনা অবগত নন। ঘটনার ব্যাপারে স্থানীয় ছাত্র প্রতিনিধিরাও খোঁজ খবর নিচ্ছেন।

 

কথিত চাঁদা দাবির ঘটনার সাথে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিদের কোন ধরণের সংশ্লেষ নেই মন্তব্য করে তিনি বলেন, ঘটনার সাথে মনির খানের সম্পৃক্ততা থাকলে সেটা তার ব্যক্তিগত বিষয়। এর দায় ছাত্র প্রতিনিধিরা নেবেন না।

 

এ ব্যাপারে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পেলে দেশের প্রচলিত আইনে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান, স্থানীয় ছাত্র প্রতিনিধি শাহেদুল ইসলাম শাহেদ।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

রাজশাহীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হেলেনা আক্তারের অনন্য উদ্যোগ

কক্সবাজার সদরের সমন্বয়ক পরিচয়ে ৩ লাখ টাকা চাঁদা দাবি, যুবক আটক

আপডেট সময় ১০:৫৬:২৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ অক্টোবর ২০২৪

কক্সবাজার সদরে সমন্বয়ক পরিচয়ে বনবিভাগের এক রেঞ্জ কর্মকর্তার কাছে চাঁদা দাবির অভিযোগে দায়ের মামলায় এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পুলিশ বলছে, গ্রেপ্তার যুবক কক্সবাজারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কক্সবাজারের সমন্বয়ক দাবিদার মনির খানের সহযোগী এবং মামলার প্রধান আসামি।

 

শনিবার (৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় কক্সবাজার সদর উপজেলার পিএমখালী ইউনিয়নের জুমছড়ি এলাকায় এ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

 

কক্সবাজার জেলা পুলিশের মুখপাত্র, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) মো. জসিম উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। গ্রেপ্তার মোহাম্মদ শরীফ (২২) ওই এলাকার মোহাম্মদ হাছনের ছেলে।

 

মামলার অপর আসামি মনির খান (২৩) কক্সবাজার সদর উপজেলার খুরুশকুল ইউনিয়নের তেতৈয়া এলাকার মো. গুরাপুতুর ছেলে। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্থানীয় সমন্বয়ক।

 

মামলার নথির বরাতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জসিম উদ্দিন বলেন, শুক্রবার বিকেলে কক্সবাজার সদরের পিএমখালী ইউনিয়নে বনবিভাগের পিএমখালী রেঞ্জ অফিসে মোহাম্মদ শরীফ স্বশরীরে গিয়ে স্থানীয় বন কর্মকর্তা মো. ফারুক আহমেদ বাবুলের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ থাকার কথা বলেন। এসব অভিযোগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্থানীয় সমন্বয়করা কর্মসূচী ঘোষণা করবে বলে তথ্য দেন। আলাপের এক পর্যায়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্থানীয় সমন্বয়ক মনির খানের সহযোগী বলে দাবি করেন। মনিরের নির্দেশে সে আলাপ করতে গেছে বলেও তথ্য দেয়। পরে বনবিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তার কাছে ৩ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। দাবি করা চাঁদা না দিলে সমন্বয়করা আন্দোলনের কর্মসূচী দেবে বলে রেঞ্জ কর্মকর্তাকে হুমকিও হয় বলেন, জেলার পুলিশের এই কর্মকর্তা।

 

তিনি বলেন, এ ঘটনায় শনিবার দুপুরে বনবিভাগের পিএমখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা ফারুক আহমেদ বাবুল বাদী হয়ে ২ জনকে আসামি করে কক্সবাজার সদর থানায় এজাহার দায়ের করেন। পরে পুলিশ মামলাটি নথিভূক্ত করার পর অভিযান চালিয়ে প্রধান আসামি মোহাম্মদ শরীফকে গ্রেপ্তার করেছে।

 

মামলার বাদী ফারুক আহমেদ বাবুল বলেন, গ্রেপ্তার মোহাম্মদ শরীফ স্থানীয় সমন্বয়ক মনির খানের সহযোগী দাবি করে তার বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ৩ লাখ টাকা চাঁদা চান। এ নিয়ে আলাপের সময় তিনি কৌশলে দুইজনের কথোপকথনের ভিডিও চিত্র মোবাইলে ধারণ করেন।

 

তিনি আরও বলেন, পরে আমি বিষয়টি বনবিভাগের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কর্মকর্তা অবহিত করি। তাদের পরামর্শের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আমি মামলা দায়ের করেছি। এ ব্যাপারে কথা বলতে সমন্বয়ক দাবিদার মনির খানের ব্যক্তিগত মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তিনি সাড়া দেননি।

 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কক্সবাজারে সমন্বয়ক নামের কোন পদ ও কমিটি নেই তথ্য দিয়ে আন্দোলনকারিদের স্থানীয় ছাত্র প্রতিনিধি শাহেদুল ইসলাম শাহেদ বলেছেন, গ্রেপ্তার মোহাম্মদ শরীফ ছাত্র আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত কেউ নয়। তবে মনির খানের ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে আন্দোলনের সকল পর্যায়ে অংশগ্রহণ থাকলেও ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত কিনা অবগত নন। ঘটনার ব্যাপারে স্থানীয় ছাত্র প্রতিনিধিরাও খোঁজ খবর নিচ্ছেন।

 

কথিত চাঁদা দাবির ঘটনার সাথে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিদের কোন ধরণের সংশ্লেষ নেই মন্তব্য করে তিনি বলেন, ঘটনার সাথে মনির খানের সম্পৃক্ততা থাকলে সেটা তার ব্যক্তিগত বিষয়। এর দায় ছাত্র প্রতিনিধিরা নেবেন না।

 

এ ব্যাপারে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পেলে দেশের প্রচলিত আইনে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান, স্থানীয় ছাত্র প্রতিনিধি শাহেদুল ইসলাম শাহেদ।