ঢাকা ০৫:০৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ২২ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নিজের প্রতিষ্ঠিত স্কুল থেকে প্রধান শিক্ষককে জোর করে পদত্যাগ করানোর চেষ্টা

নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে নেত্রকোনার মোহনগঞ্জের হাছলা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তায়জুল ইসলামের পদত্যাগের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন স্থানীয় কিছু লোকজন।

মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা চত্বরে ওই শিক্ষকের পদত্যাগের দাবিতে অর্ধশতাধিক লোকজন মানববন্ধন করেন। এসময় স্কুলের ৯-১০ জন শিক্ষার্থীও উপস্থিত ছিলো। বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সাবেক সভাপতি এ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিনসহ বেশ কয়েকজন এতে বক্তব্য দেন।

 

পরে এলাকার ছয়জনের স্বাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগ উপজেলা নিবাহী কর্মকর্তার কাছে  জমা দেন।

তবে অভিযুক্ত শিক্ষকের দাবি- ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের কারণে কিছু লোক আমার বিরুদ্ধে লেগেছে। সরকার পতনের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে তারা মিথ্যা অভিযোগ তুলে আমাকে সরিয়ে দিতে চাইছে। নিজের জায়গা দিয়ে স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেছি। তবে  তাদের অভিযোগ তদন্ত হোক প্রমাণিত হলে স্বেচ্ছায় চলে যাব।

অভিযোগে বলা হয়েছে – প্রধান শিক্ষক তায়জুল ইসলাম আত্মীয়করণ করে স্কুল পরিচালনা করে ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতি করেছেন। তার বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানা অভিযোগ রয়েছে বলে তারা অভিযোগে উল্লেখ করেন।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৮ সালে উপজেলার হাছলা গ্রামে এক একর ২৫ শতাংশ জায়গার ওপর হাছলা উচ্চ বিদয়ালয়টি স্থাপিত হয়। এর জমি দাতা ও প্রতিষ্ঠাতা বর্তমান প্রধান শিক্ষক তায়জুল ইসলাম। পরে ২০০৪ সালে বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্ত হয়। বিদ্যালয়ে চারতলা একটি একাডেমিক ভবন রয়েছে। বিদ্যালয়টিতে ১২ জন শিক্ষক ও ৭ জন কর্মচারী রয়েছে। এতে শিক্ষার্থী রয়েছে ৩৮৭ জন।

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মাহফুজুর রহমান বলেন, প্রধান শিক্ষক তায়জুল ইসলাম নিজের জায়গা দিয়ে শ্রম ঘাম দিয়ে স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেছেন। তবে শুরু থেকেই ভগ্নিপতি ও সহকারী শিক্ষক বজলুর রহমান ঠাকুরের সাথে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। এখন পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তারা সুযোগ কাজে লাগিয়ে প্রধান শিক্ষককে সরিয়ে দিতে চাইছেন। অভিযোগ থাকলে তদন্ত হোক। দোষী হলে প্রচলিত নিয়মে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ আছে।

অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক তায়জুল ইসলাম বলেন, নিয়োগ বাণিজ্যসহ যতগুলো অভিযোগ করা হয়েছে সবগুলো মিথ্যা। ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বকে সুযোগে কাজে লাগাতে চাইছে। আমি চাই নিরপেক্ষ তদন্ত হোক। দোষী হলে আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয় হোক।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেজওয়ানা কবির বলেন, এলাকার লোকজন আমার কাছে এসে একটা অভিযোগ জমা দিয়েছেন। অভিযোগগুলো তদন্ত করা হবে। পরে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়য় হবে। আসলে তদন্ত ছাড়া কারো বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া যায় না। তাদের (অভিযোগকারীদের) দাবি অনুযায়ী একজন  সহকারী শিক্ষক বজলুর রহমান ঠাকুরকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আপাতত প্রধান শিক্ষক ছুটি নিয়েছেন।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

বগুড়া জেলার কাহালু থানা বার্ষিক পরিদর্শন করলেন পুলিশ সুপার

নিজের প্রতিষ্ঠিত স্কুল থেকে প্রধান শিক্ষককে জোর করে পদত্যাগ করানোর চেষ্টা

আপডেট সময় ০৯:৩৪:৪১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৪

নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে নেত্রকোনার মোহনগঞ্জের হাছলা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তায়জুল ইসলামের পদত্যাগের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন স্থানীয় কিছু লোকজন।

মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা চত্বরে ওই শিক্ষকের পদত্যাগের দাবিতে অর্ধশতাধিক লোকজন মানববন্ধন করেন। এসময় স্কুলের ৯-১০ জন শিক্ষার্থীও উপস্থিত ছিলো। বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সাবেক সভাপতি এ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিনসহ বেশ কয়েকজন এতে বক্তব্য দেন।

 

পরে এলাকার ছয়জনের স্বাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগ উপজেলা নিবাহী কর্মকর্তার কাছে  জমা দেন।

তবে অভিযুক্ত শিক্ষকের দাবি- ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের কারণে কিছু লোক আমার বিরুদ্ধে লেগেছে। সরকার পতনের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে তারা মিথ্যা অভিযোগ তুলে আমাকে সরিয়ে দিতে চাইছে। নিজের জায়গা দিয়ে স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেছি। তবে  তাদের অভিযোগ তদন্ত হোক প্রমাণিত হলে স্বেচ্ছায় চলে যাব।

অভিযোগে বলা হয়েছে – প্রধান শিক্ষক তায়জুল ইসলাম আত্মীয়করণ করে স্কুল পরিচালনা করে ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতি করেছেন। তার বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানা অভিযোগ রয়েছে বলে তারা অভিযোগে উল্লেখ করেন।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৮ সালে উপজেলার হাছলা গ্রামে এক একর ২৫ শতাংশ জায়গার ওপর হাছলা উচ্চ বিদয়ালয়টি স্থাপিত হয়। এর জমি দাতা ও প্রতিষ্ঠাতা বর্তমান প্রধান শিক্ষক তায়জুল ইসলাম। পরে ২০০৪ সালে বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্ত হয়। বিদ্যালয়ে চারতলা একটি একাডেমিক ভবন রয়েছে। বিদ্যালয়টিতে ১২ জন শিক্ষক ও ৭ জন কর্মচারী রয়েছে। এতে শিক্ষার্থী রয়েছে ৩৮৭ জন।

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মাহফুজুর রহমান বলেন, প্রধান শিক্ষক তায়জুল ইসলাম নিজের জায়গা দিয়ে শ্রম ঘাম দিয়ে স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেছেন। তবে শুরু থেকেই ভগ্নিপতি ও সহকারী শিক্ষক বজলুর রহমান ঠাকুরের সাথে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। এখন পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তারা সুযোগ কাজে লাগিয়ে প্রধান শিক্ষককে সরিয়ে দিতে চাইছেন। অভিযোগ থাকলে তদন্ত হোক। দোষী হলে প্রচলিত নিয়মে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ আছে।

অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক তায়জুল ইসলাম বলেন, নিয়োগ বাণিজ্যসহ যতগুলো অভিযোগ করা হয়েছে সবগুলো মিথ্যা। ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বকে সুযোগে কাজে লাগাতে চাইছে। আমি চাই নিরপেক্ষ তদন্ত হোক। দোষী হলে আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয় হোক।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেজওয়ানা কবির বলেন, এলাকার লোকজন আমার কাছে এসে একটা অভিযোগ জমা দিয়েছেন। অভিযোগগুলো তদন্ত করা হবে। পরে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়য় হবে। আসলে তদন্ত ছাড়া কারো বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া যায় না। তাদের (অভিযোগকারীদের) দাবি অনুযায়ী একজন  সহকারী শিক্ষক বজলুর রহমান ঠাকুরকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আপাতত প্রধান শিক্ষক ছুটি নিয়েছেন।