বিএনপি-জামায়াতের ডাকা টানা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি শুরুর আগের রাত থেকেই সারাদেশে ৯টি বাস ভাঙচুরের সংবাদ পায় ফায়ার সার্ভিস। পাশাপাশি আওয়ামী লীগের একটি কার্যালয়ও আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
শনিবার সন্ধ্যা ৭ থেকে রোববার (৫ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৬টা পর্যন্ত এসব তাণ্ডব চালানো হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম জানান, অবরোধের আগের রাতে ১২টি আগুনের সংবাদ পাওয়া গেছে। তার মধ্যে ৯টি বাস ও আওয়ামী লীগের ১টি কার্যালয় পুড়েছে।
ফায়ার সার্ভিস জানায়, শনিবার সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটে নিউমার্কেট এলাকার গাউছিয়া মার্কেটের সামনে মিরপুর লিংক নামে বাসে আগুন দেওয়া হয়।
৭টা ৩৫ মিনিটে এলিফ্যান্ড রোডে গ্রিন ইউনিভার্সিটি বাসে, ৭টা ৫৫ মিনিটের দিকে সায়েদাবাদে রাইদা পরিবহনে, রাত ১০টার দিকে গুলিস্তান পাতাল মার্কেটের সামনে মনজিল পরিবহনে, রাত পৌনে ১২ টার দিকে নারায়ণগঞ্জে অনাবিল পরিবহনে, একই সময় ভোলার চরফ্যাশনে যমুনা এক্সপ্রেস বাসে, রাত ২টা ৫৫ মিনিটে, ভোর ৪টায় শ্যামপুরে তুরাগ বাসে আগুন, সায়েদাবাদ সাদ্দাম মার্কেটের পাশে বাসে, ভোর সোয়া ৫টায় মিরপুর ও গাজীপুরে বাসে আগুন।
এছাড়া ভোর ৩টার দিকে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের বাদলপুরে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। ৪টার দিকে ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে তিন রাস্তার মোড়ে টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধের চেষ্টা করা হয়।
উল্লেখ্য, সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে এবং মির্জা ফখরুলসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের মুক্তির দাবিতে রোববার সকাল থেকে ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। তাদের শরিকরাও এই অবরোধ পালন করবে। পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীও আলাদা করে এই ৪৮ ঘণ্টা অবরোধ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে।
এর আগে গত সপ্তাহের শেষ তিন দিন (৩১ অক্টোবর-২ নভেম্বর) টানা অবরোধ পালন করে বিএনপি-জামায়াত। তার আগে ২৯ অক্টোবর হরতাল পালন করে তারা।
গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীতে বড় ধরনের সমাবেশ করে বিএনপি, জামায়াত ও আওয়ামী লীগ। সেদিন দুপুরের দিকে বিএনপির সমাবেশে আসা লোকজনের সঙ্গে কাকরাইল মোড়ের কাছে আওয়ামী লীগের সমাবেশগামী লোকজনের সংঘর্ষ শুরু হয়।
পুলিশ সেখানে হস্তক্ষেপ করলে এক পর্যায়ে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা হয় এবং বেশকিছু গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
এরপর পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ও উপর্যুপরি টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে বিএনপির সমাবেশ ভণ্ডুল করে দেয়। এরপর সংঘর্ষ চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে এক পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা করা হয় এবং রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে হামলা চালানো হয়।
সমাবেশ বানচালের প্রতিবাদে পরদিন ২৯ অক্টোবর বিএনপি হরতাল পালন করে। একদিন বিরতি দিয়ে ৩১ অক্টোবর থেকে টানা ৩ দিনের অবরোধ কর্মসূচি দেওয়া হয়।
এদিকে, হরতালের দিন এবং পরবর্তী কয়েকদিনে মির্জা ফখরুল, মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও মোয়াজ্জেম হোসেন আলালসহ বিএনপির শীর্ষ নেতাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ।