ঢাকা ০৬:৪৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৫, ১২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাজশাহীর বিগ্রহ ঠাকুর মন্দিরের এবার ব্যতিক্রম আয়োজন

শারদীয় দুর্গোৎসব

মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সকলকে উদ্বুদ্ধ করতে ও সংগ্রামী ইতিহাস তরুন প্রজন্মকে জানাতে লক্ষ্মী নারায়ণ মন্দিরের সৃজনশীল আয়োজন। বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব। আকাশে সাদা মেঘের আনাগোনা, শিউলি ফুলের সুভাস, প্রকৃতির হিমেল হাওয়া ধারণ করেছে এক উৎসবমুখর আমেজ।

দশভুজা দুর্গতিনাশিনী দেবী দুর্গা দুষ্টের দমন আর শিষ্টের পালনে ধরণিতে আবির্ভূত হন। দেবী দুর্গার আরধনার সময়কে ধরা হয় সকল প্রকার অশুভ-অসত্যকে পরাভূত করে সত্য ও ন্যায়ের বাতাবরণ প্রতিষ্ঠার শুভ সময়। তাই সনাতন ধর্মাবলম্বীরা বিভিন্ন সাজে ও আঙ্গিকে দেবী দূর্গার আয়োজন করে থাকেন। এক একটা মণ্ডপ সাজানো হয় একটা একটা থিমের আঙ্গিকে।

তবে মালোপাড়ায় অবস্থিত শ্রী শ্রী লক্ষ্মী নারায়ণ দেব বিগ্রহ ঠাকুর মন্দিরের এবারের ব্যতিক্রম আয়োজন সকলের নজর কেড়েছে। আলপনা অঙ্কিত ঐতিহ্যবাহী গ্রাম বাংলার ঘরের মাঝে ১৯৪৭ সালের দেশভাগ থেকে শুরু করে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ সৃষ্টি ও বিশ্ববাসীর কাছে বাংলাদেশের পরিচিত হওয়ার অগ্রযাত্রা যেন এক পর্দায় ফুটে উঠেছে।

১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের চারটি স্তম্ভের উপর ভিত্তি করে মুজিববাদ প্রতিষ্ঠিত। চারটি স্তম্ভ হলো-বাঙালি জাতীয়তাবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা, গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্র। তাই মন্দিরের প্যাণ্ডেলের চারটি পিলারের নাম দেওয়া হয়েছে চারটি স্তম্ভর নামানুসারে। যার উপরে দাঁড়িয়ে রয়েছে বাংলাদেশের ইতিহাস লিখিত এক ব্যানার।

ব্যানারের শুরুতে ১৯৪৭ সালের দেশভাগ, ৫২ র ভাষা আন্দোলন, ৫৪ র সাধারণ নির্বাচন, ৬৬ এর ছয় দফা, ৬৮ এর আগড়তলা ষড়যন্ত্র মামলা, ৬৯ এর গনঅঅভ্যুত্থান, ৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধর ছবির পাশাপাশি সকলের বোঝার সুবিধার জন্য রয়েছে সংক্ষিপ্ত বর্ণনা।

সেট সাথে ব্যানারে ফুটে উঠেছে ১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা ও জাতীয় চার নেতার কাপুরুষোচিত হত্যাকান্ডও । ২০১৩ সালের গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলনের মাধ্যমে যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ বিচার নিশ্চিতকরণের জন্য দেশব্যাপী যে গনজাগরণ হয়েছিল তাও বর্ণীত রয়েছে একই ফ্রেমে। ২০২১ সালের দেশব্যাপী সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ক্ষত যে এখনও সংখ্যালঘুদের মাঝে রয়েছে তা বোঝানোর জন্য এর প্রতিবাদও স্থান পেয়েছে ফ্রেমে।

দেশব্যাপী উন্নয়নের অংশ হিসেবে পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, রুপপুর পারমানবিক কেন্দ্র স্থান পেয়েছে ফ্রেমের উন্নয়ন অংশে। বাংলাদেশের মেয়েরাও যে আজ পিছিয়ে নেই। তারাও যে বিশ্বকে জয় করতে পারে তা বোঝানোর জন্য সাফ চাম্পিয়ানে বাংলাদেশের মেয়েদের বিশ্বকাপ জয়ের ছবি যে তা স্মরণ করে দেয়।

বাংলাদেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় শিক্ষানগরী রাজশাহী যে পিছিয়ে নেই তা বোঝানোর জন্য গ্রিন সিটি ক্লিন সিটি রাজশাহীর বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক ছবি স্থান পেয়েছে ফ্রেমের শেষ অংশে।

আর ফ্রেমের সবার উপরে বড় করে লিখা রয়েছে মহান মুক্তিযুদ্ধের সাল ১৯৭১ যার প্রতিটা অঙ্ক যেন প্রকাশ করে এক তর্জনীর হুংকারে নয়মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে সাত জন বীরশ্রেষ্ঠ ও মুক্তিযোদ্ধাদের ত্যাগের বিনিময়ে একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ বাংলাদেশ।

আপলোডকারীর তথ্য

Daily Naba Bani

মিডিয়া তালিকাভুক্ত জাতীয় দৈনিক নববাণী পত্রিকার জন্য সকল জেলা উপজেলায় সংবাদ কর্মী আবশ্যকঃ- আগ্রহীরা আজই আবেদন করুন। মেইল: [email protected]
জনপ্রিয় সংবাদ

ই-সেবা ফুটবল ম্যাচ-২০২৫ আসরে টরমেন্টা এসসি বিজয়ী।

রাজশাহীর বিগ্রহ ঠাকুর মন্দিরের এবার ব্যতিক্রম আয়োজন

আপডেট সময় ০৬:১৬:৪৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৩

মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সকলকে উদ্বুদ্ধ করতে ও সংগ্রামী ইতিহাস তরুন প্রজন্মকে জানাতে লক্ষ্মী নারায়ণ মন্দিরের সৃজনশীল আয়োজন। বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব। আকাশে সাদা মেঘের আনাগোনা, শিউলি ফুলের সুভাস, প্রকৃতির হিমেল হাওয়া ধারণ করেছে এক উৎসবমুখর আমেজ।

দশভুজা দুর্গতিনাশিনী দেবী দুর্গা দুষ্টের দমন আর শিষ্টের পালনে ধরণিতে আবির্ভূত হন। দেবী দুর্গার আরধনার সময়কে ধরা হয় সকল প্রকার অশুভ-অসত্যকে পরাভূত করে সত্য ও ন্যায়ের বাতাবরণ প্রতিষ্ঠার শুভ সময়। তাই সনাতন ধর্মাবলম্বীরা বিভিন্ন সাজে ও আঙ্গিকে দেবী দূর্গার আয়োজন করে থাকেন। এক একটা মণ্ডপ সাজানো হয় একটা একটা থিমের আঙ্গিকে।

তবে মালোপাড়ায় অবস্থিত শ্রী শ্রী লক্ষ্মী নারায়ণ দেব বিগ্রহ ঠাকুর মন্দিরের এবারের ব্যতিক্রম আয়োজন সকলের নজর কেড়েছে। আলপনা অঙ্কিত ঐতিহ্যবাহী গ্রাম বাংলার ঘরের মাঝে ১৯৪৭ সালের দেশভাগ থেকে শুরু করে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ সৃষ্টি ও বিশ্ববাসীর কাছে বাংলাদেশের পরিচিত হওয়ার অগ্রযাত্রা যেন এক পর্দায় ফুটে উঠেছে।

১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের চারটি স্তম্ভের উপর ভিত্তি করে মুজিববাদ প্রতিষ্ঠিত। চারটি স্তম্ভ হলো-বাঙালি জাতীয়তাবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা, গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্র। তাই মন্দিরের প্যাণ্ডেলের চারটি পিলারের নাম দেওয়া হয়েছে চারটি স্তম্ভর নামানুসারে। যার উপরে দাঁড়িয়ে রয়েছে বাংলাদেশের ইতিহাস লিখিত এক ব্যানার।

ব্যানারের শুরুতে ১৯৪৭ সালের দেশভাগ, ৫২ র ভাষা আন্দোলন, ৫৪ র সাধারণ নির্বাচন, ৬৬ এর ছয় দফা, ৬৮ এর আগড়তলা ষড়যন্ত্র মামলা, ৬৯ এর গনঅঅভ্যুত্থান, ৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধর ছবির পাশাপাশি সকলের বোঝার সুবিধার জন্য রয়েছে সংক্ষিপ্ত বর্ণনা।

সেট সাথে ব্যানারে ফুটে উঠেছে ১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা ও জাতীয় চার নেতার কাপুরুষোচিত হত্যাকান্ডও । ২০১৩ সালের গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলনের মাধ্যমে যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ বিচার নিশ্চিতকরণের জন্য দেশব্যাপী যে গনজাগরণ হয়েছিল তাও বর্ণীত রয়েছে একই ফ্রেমে। ২০২১ সালের দেশব্যাপী সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ক্ষত যে এখনও সংখ্যালঘুদের মাঝে রয়েছে তা বোঝানোর জন্য এর প্রতিবাদও স্থান পেয়েছে ফ্রেমে।

দেশব্যাপী উন্নয়নের অংশ হিসেবে পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, রুপপুর পারমানবিক কেন্দ্র স্থান পেয়েছে ফ্রেমের উন্নয়ন অংশে। বাংলাদেশের মেয়েরাও যে আজ পিছিয়ে নেই। তারাও যে বিশ্বকে জয় করতে পারে তা বোঝানোর জন্য সাফ চাম্পিয়ানে বাংলাদেশের মেয়েদের বিশ্বকাপ জয়ের ছবি যে তা স্মরণ করে দেয়।

বাংলাদেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় শিক্ষানগরী রাজশাহী যে পিছিয়ে নেই তা বোঝানোর জন্য গ্রিন সিটি ক্লিন সিটি রাজশাহীর বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক ছবি স্থান পেয়েছে ফ্রেমের শেষ অংশে।

আর ফ্রেমের সবার উপরে বড় করে লিখা রয়েছে মহান মুক্তিযুদ্ধের সাল ১৯৭১ যার প্রতিটা অঙ্ক যেন প্রকাশ করে এক তর্জনীর হুংকারে নয়মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে সাত জন বীরশ্রেষ্ঠ ও মুক্তিযোদ্ধাদের ত্যাগের বিনিময়ে একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ বাংলাদেশ।