
দীর্ঘদিনের বঞ্চনা ও অবহেলার ইতিহাস মুছে ফেলে উত্তরবঙ্গকে দেশের উন্নয়নের মূলধারায় ফিরিয়ে আনাই বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম প্রধান অগ্রাধিকার। এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে গতিশীল করতে শিল্পায়ন, বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টিকে কেন্দ্র করে গ্রহণ করা হয়েছে একটি সমন্বিত পরিকল্পনা। শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে রংপুর সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।
চার দিনের সরকারি সফরে তিনি বৃহস্পতিবার রাতে রংপুরে পৌঁছান এবং শুক্রবার সকালে ঐতিহাসিক তাজহাট জমিদার বাড়ি পরিদর্শন করেন। মতবিনিময়কালে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, কৃষি, পশুপালন, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং হালকা শিল্পে উত্তরাঞ্চলের সম্ভাবনা অপার। সরকার এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে অবকাঠামো উন্নয়ন, রেল ও সড়ক যোগাযোগ আধুনিকায়ন এবং আন্তর্জাতিক মানের লজিস্টিকস ব্যবস্থা গড়ে তোলার ওপর জোর দিচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, “আমরা চাই না উত্তরবঙ্গের তরুণরা জীবিকার তাগিদে ঢাকামুখী হোক। বরং নিজ এলাকাতেই যাতে তারা কর্মসংস্থান পায়, সে লক্ষ্যে দক্ষতা উন্নয়ন, আইসিটি ও কারিগরি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা জোরদার করা হচ্ছে। বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ ও রপ্তানি প্রণোদনার মাধ্যমে স্থানীয় উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করা হচ্ছে।”
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে ভারতের অবস্থান নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তৌহিদ হোসেন বলেন, “ভারত এ বিষয়ে এখনও আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। কূটনৈতিক প্রক্রিয়া সময়সাপেক্ষ এবং এটি সতর্কতার সঙ্গে পরিচালনা করতে হয়। তবে বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় সরকার কখনোই আপস করবে না।” তিনি আরও উল্লেখ করেন, ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক কেবল দ্বিপাক্ষিক নয়, বরং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। সীমান্ত ব্যবস্থাপনা, পানি বণ্টন এবং বাণিজ্য বৃদ্ধিতে উভয় দেশের সংলাপ চলমান রয়েছে।
মতবিনিময় সভায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ী ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। তারা সীমান্ত বাণিজ্য বৃদ্ধি ও অঞ্চলভিত্তিক বিনিয়োগের নানা প্রস্তাব তুলে ধরেন, যা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনার আশ্বাস দেন উপদেষ্টা। আগামী রবিবার (৭ ডিসেম্বর) নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ পরিদর্শনের মধ্য দিয়ে তাঁর এই সফর শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
আওলাদ মিয়া, রংপুর প্রতিনিধি : 



















