
ঢাকার হাইকোর্ট সংলগ্ন এলাকা থেকে রংপুরের ব্যবসায়ী আশরাফুল হকের খণ্ডিত লাশ উদ্ধারের ঘটনায় গ্রেপ্তার দুই আসামিকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত।
রিমান্ডে যাওয়া দুই আসামি হলেন—আশরাফুলের বন্ধু ও ‘প্রধান সন্দেহভাজন’ জরেজুল ইসলাম ওরফে জরেজ এবং তার ‘প্রেমিকা’ শমীমা আক্তার ওরফে শামীমা ওরফে কহিনুর।
শনিবার সন্ধ্যায় মামলার তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের ওপর শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ইসরাত জেনিফার জেরিন এই রিমান্ডের আদেশ দেন। প্রসিকিউশন বিভাগের এসআই জিন্নাত আলী এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হাই কোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহ মাঠের গেইটের কাছে একটি নীল ড্রামের ভেতর থেকে খণ্ড-বিখণ্ড অবস্থায় আশরাফুল হকের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ২৬ টুকরো করা লাশের প্রথমে পরিচয় পাওয়া না গেলেও আঙুলের ছাপ নিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্রের ডেটাবেইস থেকে পরিচয় শনাক্ত করা হয়। নিহত আশরাফুল হক রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।
এ ঘটনায় শুক্রবার নিহতের বোন বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ওই রাতেই পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) কুমিল্লার দাউদকান্দি এলাকা থেকে জরেজকে এবং একই জেলার লাকসাম এলাকা থেকে র্যাব জরেজের ‘প্রেমিকা’ শামীমাকে গ্রেপ্তার করে।
শনিবার সকালে ঢাকার কারওয়ানবাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফায়েজুল আরেফীন জানান, শামীমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, তাঁকে দিয়ে ‘প্রেমের ফাঁদে ফেলে’ আশরাফুলের কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা আদায়ের পরিকল্পনা ছিল জরেজের। তবে আশরাফুলকে ঢাকায় আনার পর কেন খুন করা হলো, সেটির ‘স্পষ্ট ধারণা’ পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে, দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসে অতিরিক্ত কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম জরেজকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে বলেছেন, এটি আসলে একটি ‘ত্রিভুজ প্রেমের কাহিনী’।
তদন্ত কর্মকর্তা শনিবার আসামিদের আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করলে আদালত প্রত্যেকের পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড আবেদনে বলা হয়েছে, আশরাফুলকে হত্যার কারণ, আলামত নষ্ট ও লাশ গুম করতে কে বা কারা সহায়তা করেছে, হত্যাকাণ্ডে কারা কীভাবে জড়িত এবং আশরাফুলের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা আদায় সংক্রান্ত তথ্য জানতে তাদের আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন। শুনানিকালে আসামিদের পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না।