
লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার ১ নং উত্তর চর আবাবিল ইউনিয়নের মাস্টার মো. সাইফুল ইসলাম সম্প্রতি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষকদের ৩ দফা দাবি আদায়ের আন্দোলনে অংশ নিয়ে গুরুতরভাবে আহত হয়েছেন, ঢাকায় ইবনে সিনা হাসপাতালে অপারেশন। গত ৮ই নভেম্বর সারাদেশে ঘোষিত কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে তিনি, হায়দরগঞ্জ ক্লাস্টারের পশ্চিম চর আবাবিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে মানববন্ধন ও বিক্ষোভে যোগ দেন।
সেখানে শিক্ষক-কর্মচারীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে হঠাৎ করে পুলিশের সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ হলে ব্যাপক বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। বিস্ফোরণের তীব্রতায় মাস্টার সাইফুল ইসলাম মারাত্মকভাবে আহত হন। তাঁর মতো আরও প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষক একই ঘটনায় বিভিন্ন মাত্রায় জখম হন বলে জানিয়েছেন উপস্থিত শিক্ষকরা।
ঘটনার পর দ্রুত স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা নেওয়া হলেও সাইফুল ইসলামের দুই পায়ের ক্ষত এতটাই গুরুতর ছিল যে, তাঁকে জরুরি ভিত্তিতে ঢাকার ইবনে সিনা হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। গতকাল রাত ১০টায় তাঁর দুই পায়ে অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, পরিস্থিতি ছিল জটিল, তবুও অপারেশন সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এখন তিনি হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন।
পরিবার ও সহকর্মীরা জানিয়েছেন, সাইফুল ইসলাম সব সময়ই শিক্ষার্থীদের উন্নয়ন, বিদ্যালয়ের অগ্রগতি ও শিক্ষকদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করে এসেছেন। সেই দায়িত্ববোধ থেকেই তিনি কর্মসূচিতে অংশ নেন। কিন্তু শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে এ ধরনের হামলার কারণে শিক্ষক সমাজের মাঝে চরম ক্ষোভ ও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
এদিকে আহত সাইফুল ইসলাম সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন। তিনি বলেন, আমি শুধু শিক্ষকদের ন্যায্য অধিকার আদায়ের জন্য রাস্তায় নেমেছিলাম। আজ আমার দুই পায়ে অপারেশন করতে হলো। দেশবাসী আমার জন্য দোয়া করবেন।
শিক্ষক নেতারা এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে দোষীদের বিচারের দাবি জানিয়েছেন এবং আহত সব শিক্ষকদের চিকিৎসার দায়িত্ব রাষ্ট্রীয়ভাবে গ্রহণ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
মানবিক এই মুহূর্তে শিক্ষক সাইফুল ইসলামের দ্রুত সুস্থতা কামনা করছে তাঁর পরিবার, সহকর্মী, শিক্ষার্থী এবং স্থানীয় সব শ্রেণিপেশার মানুষ।