রাজধানীর মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তে ৩৬ জনের মৃত্যুর ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি জননিরাপত্তার স্বার্থে বিমান বাহিনীর প্রাথমিক প্রশিক্ষণ ঢাকার বাইরে সরিয়ে নেওয়ার সুপারিশ করেছে।
আজ মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টার কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, “তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদন রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবনে যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের নিকট জমা দিয়েছে। কমিটির প্রধান সুপারিশ হলো— ভবিষ্যতে বিমান বাহিনীর ইনিশিয়াল ট্রেনিং রাজধানীর বাইরে সরিয়ে নেওয়া, যাতে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় এমন দুর্ঘটনা আর না ঘটে।”
প্রেস সচিব জানান, গত ২১ জুলাই উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবনে বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে পাইলটসহ ৩৬ জনের মৃত্যু হয়। নিহতদের মধ্যে ২৮ জন শিক্ষার্থী, তিনজন শিক্ষক, তিনজন অভিভাবক ও একজন কর্মচারী ছিলেন। দুর্ঘটনার পর ২৯ জুলাই সশস্ত্র বাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল কামরুল হাসানকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
কমিটি প্রায় ১৫০ জন প্রত্যক্ষদর্শী, ভুক্তভোগী ও বিশেষজ্ঞের সাক্ষ্য নিয়ে ১৬৮টি তথ্য উদ্ঘাটন করেছে এবং ৩৩টি সুপারিশ করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রশিক্ষণ চলাকালে পাইলটের উড্ডয়নের ত্রুটি ও নিয়ন্ত্রণ হারানোর কারণে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
সংবাদ সম্মেলনে শফিকুল আলম আরও বলেন, “তদন্তে উঠে এসেছে, স্কুল ভবনটি রাজউকের অনুমোদিত বাংলাদেশ জাতীয় বিল্ডিং কোড (বিএনবিসি)-এর আওতায় নির্মিত হয়নি। ভবনে মাত্র একটি সিঁড়ি ছিল, যেখানে ন্যূনতম তিনটি থাকা উচিত ছিল। পর্যাপ্ত সিঁড়ি থাকলে হতাহতের সংখ্যা অনেক কম হতে পারত।”
তিনি আরও জানান, প্রধান উপদেষ্টা বরিশাল ও বগুড়ার রানওয়ে সম্প্রসারণের প্রস্তাব এবং রাজউকের সম্প্রসারিত এলাকায়— বিশেষ করে সাভার, কাঞ্চন ও তারাবো পৌরসভায়— বিল্ডিং অনুমোদনের ক্ষেত্রে রাজউকের নিয়ম কঠোরভাবে অনুসরণ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
