
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) বহুল আলোচিত ও ‘লক্ষ্মী আসন’ খ্যাত কক্সবাজার-৪ (উখিয়া-টেকনাফ) আসনে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন সাবেক হুইপ ও সংসদ সদস্য আলহাজ্ব শাহাজাহান চৌধুরী। মনোনয়ন ঘোষণার পর উখিয়া ও টেকনাফে তার সমর্থকরা মিছিল, আতশবাজি ও আনন্দ উল্লাসে মেতে ওঠেন।
১৯৭১ সালের পর থেকে এই আসনে বিজয়ী দল সরকার গঠন করে আসায়, স্থানীয়ভাবে এটি ‘লক্ষ্মী আসন’ নামে পরিচিত। এবার এ আসনে বিএনপির চারজন মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। তাদের মধ্যে মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ ও শাহাজাহান চৌধুরীর নাম সবচেয়ে বেশি আলোচনায় ছিল। মনোনয়ন না পেয়ে মোহাম্মদ আব্দুল্লাহর সমর্থকেরা ওই দিন রাতেই টেকনাফ সদরসহ বিভিন্ন এলাকায় মশাল মিছিল ও বিক্ষোভ করেন।
এ আসনে বিএনপির মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে মিত্র দল জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থী অধ্যক্ষ মাওলানা নুর আহমদ আনোয়ারীর সঙ্গে। তিনিও এলাকায় প্রচারণা ও জনসমর্থনে বেশ সক্রিয় রয়েছেন। ফলে জয়ের জন্য কৌশলগত হিসাব-নিকাশের প্রয়োজন হবে বলে মনে করছেন স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।
এ ছাড়া কক্সবাজারের অন্য আসনগুলোয় মনোনয়ন পেয়েছেন—
কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া): সাবেক মন্ত্রী ও হেভিওয়েট প্রার্থী সালাহ উদ্দিন আহমদ। তার প্রতিদ্বন্দ্বী জামায়াতের কক্সবাজার শহর আমির আব্দুল্লাহ আল ফারুক।
কক্সবাজার-৩ (রামু-কক্সবাজার-ঈদগাঁও): সাবেক এমপি লুৎফুর রহমান কাজল। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী জেলা জামায়াতের নেতা শহীদুল আলম বাহাদুর, সাবেক ভিপি, কক্সবাজার সরকারি কলেজ।
মহেশখালী-কুতুবদিয়া আসন: আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে। এ আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন সাবেক এমপি আলমগীর ফরিদ ও কুতুবদিয়ার সাবেক চেয়ারম্যান এটিএম নুরুল বশর চৌধুরী। আলোচনায় রয়েছে, সাবেক মন্ত্রী সালাহ উদ্দিন আহমদ বা তার সহধর্মিণী, সাবেক এমপি হাছিনা আহমদ—এই দুজনের একজন ওই আসন থেকে নির্বাচন করতে পারেন। প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে রয়েছেন জামায়াতের সাবেক সাংসদ ও কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি এ এইচ এম হামিদুর রহমান আযাদ।
উখিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি সরওয়ার জাহান চৌধুরী দলীয় প্রার্থী হিসেবে শাহাজাহান চৌধুরীকে মনোনয়ন দেওয়ায় বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, এবং দলের নীতিনির্ধারক সালাহ উদ্দিন আহমদসহ কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, “উখিয়া-টেকনাফের জনগণের বিশ্বাস, আস্থা ও ত্যাগের প্রতীক এই অভিজ্ঞ নেতা শাহাজাহান চৌধুরীকে মনোনয়ন প্রদান করে দলের প্রতি জনমনে নতুন আশার সঞ্চার হয়েছে।” তিনি দলের সব স্তরের নেতা-কর্মী ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের প্রতি আহ্বান জানান—ঐক্যবদ্ধ থেকে প্রিয় নেতা শাহাজাহান চৌধুরীর নেতৃত্বে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার আন্দোলনকে সফল করতে একসঙ্গে কাজ করার জন্য।