ঢাকা ০৭:৩১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫, ২৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
News Title :
ঈশ্বরদীতে গোল্ডেন এ প্লাস পাওয়া শিক্ষার্থীকে ল্যাপটপ প্রদান করলেন – হাবিবুর রহমান হাবিব গ্রামীণ টেলিকম ট্রাস্টের রিসোর্টে বোতল বোমা নিক্ষেপ ধামইরহাটে ইটভাটা বন্ধের প্রতিবাদে মালিক-শ্রমিকদের মানববন্ধন হাটহাজারীতে মডেল মসজিদের নির্মাণ কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন টেকনাফে অপহৃত কলেজছাত্র হাসান শরীফকে উদ্ধার করেছে র‌্যাব-১৫ দেবীগঞ্জে ৮ হাজার ৬০০ কেজি চায়ের রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগ চা কারখানার বিরুদ্ধে হাটহাজারীতে দুই দিনে তিন লাশ, মেলেনি পরিচয় নীলফামারী-১ (ডোমার-ডিমলা) আসনে এনসিপির মনোনয়ন কিনলেন তরুণ নেতা রাশেদুজ্জামান রাশেদ খুলনায় ইনভাইট পিস স্কুল এন্ড কলেজের বার্ষিক সাংস্কৃতিক উৎসব, পুরস্কার বিতরণী ও প্যারেন্টিং মিটিং অনুষ্ঠিত বিশ্বনাথে প্রেসক্লাব ওয়েলফেয়ার ফান্ডের উদ্বোধন

সেচ হলে বাড়বে ২৪ কোটি টাকার অতিরিক্ত উৎপাদন: আধুনিক সেচে খুলবে হাটহাজারীর বোরো আবাদের দুয়ার

{"remix_data":[],"remix_entry_point":"challenges","source_tags":["local"],"origin":"unknown","total_draw_time":0,"total_draw_actions":0,"layers_used":0,"brushes_used":0,"photos_added":0,"total_editor_actions":{},"tools_used":{},"is_sticker":false,"edited_since_last_sticker_save":false,"containsFTESticker":false}

হাটহাজারীতে সেচের অভাবে বোরো মৌসুমে উপজেলা ও পৌরসভার মাঠজুড়ে কয়েক হাজার হেক্টর জমি অনাবাদি পড়ে থাকে। এতে ফসল উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে এবং অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন প্রান্তিক কৃষকরা। দীর্ঘদিন ধরে সেচের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকলেও এখনো কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। অথচ পর্যাপ্ত পানির উৎস থাকায় অল্প প্রচেষ্টাতেই বোরো আবাদে সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হতে পারে।

জানা গেছে, চলতি মৌসুমে আমনের ধান কাটা ও ঘরে তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন কৃষকরা। অনেকেই বোরো চাষের জন্য বীজ, সার ও সেচযন্ত্রের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তবে আমনের তুলনায় বোরো চাষ অর্ধেকেরও কম হয় সেচের অভাবে। প্রায় চার দশক আগে পর্যন্ত খাল-বিল ও পাহাড়ি ছড়ায় পর্যাপ্ত পানি থাকায় বোরো আবাদও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে হতো। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এসব জলাধার ভরাট হয়ে যাওয়ায় চাষের উপযোগী জমির পরিমাণ কমেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, হালদা নদীর সঙ্গে সংযুক্ত খাল ও ছড়াগুলো নিয়মিত পুনঃখনন করা হলে বোরো চাষ উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাবে।

কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ হাজার ৬ শ হেক্টর জমিতে, যেখানে উৎপাদনের লক্ষ্য ২৫ হাজার ৩ শ মেট্রিক টন ধান—এর বাজারমূল্য প্রায় ৯১ কোটি ৮ লাখ টাকা। এ বছর আরও এক হাজারের বেশি হেক্টর জমিকে বোরো চাষের আওতায় আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

স্থানভেদে পৌরসভা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে খাল পুনঃখনন, বারিক পাইপ, এলএলপি, গভীর নলকূপ, স্লুইসগেটসহ বিভিন্ন সেচ অবকাঠামো নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। উপজেলা প্রশাসন, স্থানীয় সরকার, কৃষি বিভাগ ও বিএডিসির সমন্বয়ে এই উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে হাটহাজারীতে কৃষি উৎপাদনে বড় ধরনের পরিবর্তন আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।

কৃষি বিভাগ ও কৃষকদের তথ্যমতে, উপজেলার ফরহাদাবাদ, ধলই, মির্জাপুর, গুমানমর্দ্দন, নাঙ্গলমোড়া, ছিপাতলী, পৌরসভা, মেখল, গড়দুয়ারা, উত্তর ও দক্ষিণ মাদার্শা, ফতেপুর, চিকনদন্ডী, শিকারপুর, বুড়িশ্চর ও দক্ষিণ পাহাড়তলীসহ প্রায় সব ইউনিয়নে খাল পুনঃখনন, এলএলপি, বারিক পাইপ ও সেচনালা স্থাপনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এসব উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে প্রায় ১ হাজার ১২০ হেক্টর অতিরিক্ত জমিতে বোরো চাষ সম্ভব হবে। এতে প্রায় ৬ হাজার ৭৬০ মেট্রিক টন অতিরিক্ত ধান উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে, যার বাজারমূল্য প্রায় ২৪ কোটি ১৯ লাখ টাকা।

বিএডিসির উপসহকারী প্রকৌশলী দীপন চাকমা বলেন, “ইতিমধ্যে চিকনদন্ডী ও গুমানমর্দ্দনে ২ কোটি টাকার বেশি ব্যয়ে ১৮ কিলোমিটার খাল পুনঃখনন করা হয়েছে। কৃষকদের সুবিধার্থে খাল পুনঃখনন, এলএলপি, বারিক পাইপ ও আর্টিশিয়ান কূপ স্থাপনের প্রস্তাব পাওয়া গেলে বরাদ্দ অনুযায়ী কাজের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মেজবাহ উদ্দিন বলেন, “চারপাশে প্রচুর পানির উৎস থাকা সত্ত্বেও বোরো আবাদ এখনো আমনের অর্ধেকেরও কম। সামান্য উদ্যোগ নিলেই এ সমস্যা অনেকাংশে নিরসন সম্ভব। উপজেলা প্রশাসন ও বিএডিসির সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা চলছে।”

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সেচ কমিটির সভাপতি মো. আব্দুল্লাহ আল মুমিন বলেন, “বিষয়টি আমরা অবগত হয়েছি। প্রয়োজনীয় সেচব্যবস্থা বাস্তবায়ন হলে বোরো আবাদ বৃদ্ধির পাশাপাশি জলাবদ্ধতা দূর হবে এবং বসতবাড়ির নিরাপত্তাও নিশ্চিত হবে। উপজেলা প্রশাসন থেকে সার্বিক সহযোগিতা দেওয়া হবে।”

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

বার্তা বিভাগ

মিডিয়া তালিকাভুক্ত জাতীয় দৈনিক নববাণী পত্রিকার জন্য সকল জেলা উপজেলায় সংবাদ কর্মী আবশ্যকঃ- আগ্রহীরা আজই আবেদন করুন। মেইল: [email protected]
জনপ্রিয় সংবাদ

ঈশ্বরদীতে গোল্ডেন এ প্লাস পাওয়া শিক্ষার্থীকে ল্যাপটপ প্রদান করলেন – হাবিবুর রহমান হাবিব

সেচ হলে বাড়বে ২৪ কোটি টাকার অতিরিক্ত উৎপাদন: আধুনিক সেচে খুলবে হাটহাজারীর বোরো আবাদের দুয়ার

আপডেট সময় ০৬:০৮:২৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ নভেম্বর ২০২৫

হাটহাজারীতে সেচের অভাবে বোরো মৌসুমে উপজেলা ও পৌরসভার মাঠজুড়ে কয়েক হাজার হেক্টর জমি অনাবাদি পড়ে থাকে। এতে ফসল উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে এবং অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন প্রান্তিক কৃষকরা। দীর্ঘদিন ধরে সেচের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকলেও এখনো কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। অথচ পর্যাপ্ত পানির উৎস থাকায় অল্প প্রচেষ্টাতেই বোরো আবাদে সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হতে পারে।

জানা গেছে, চলতি মৌসুমে আমনের ধান কাটা ও ঘরে তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন কৃষকরা। অনেকেই বোরো চাষের জন্য বীজ, সার ও সেচযন্ত্রের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তবে আমনের তুলনায় বোরো চাষ অর্ধেকেরও কম হয় সেচের অভাবে। প্রায় চার দশক আগে পর্যন্ত খাল-বিল ও পাহাড়ি ছড়ায় পর্যাপ্ত পানি থাকায় বোরো আবাদও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে হতো। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এসব জলাধার ভরাট হয়ে যাওয়ায় চাষের উপযোগী জমির পরিমাণ কমেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, হালদা নদীর সঙ্গে সংযুক্ত খাল ও ছড়াগুলো নিয়মিত পুনঃখনন করা হলে বোরো চাষ উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাবে।

কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ হাজার ৬ শ হেক্টর জমিতে, যেখানে উৎপাদনের লক্ষ্য ২৫ হাজার ৩ শ মেট্রিক টন ধান—এর বাজারমূল্য প্রায় ৯১ কোটি ৮ লাখ টাকা। এ বছর আরও এক হাজারের বেশি হেক্টর জমিকে বোরো চাষের আওতায় আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

স্থানভেদে পৌরসভা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে খাল পুনঃখনন, বারিক পাইপ, এলএলপি, গভীর নলকূপ, স্লুইসগেটসহ বিভিন্ন সেচ অবকাঠামো নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। উপজেলা প্রশাসন, স্থানীয় সরকার, কৃষি বিভাগ ও বিএডিসির সমন্বয়ে এই উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে হাটহাজারীতে কৃষি উৎপাদনে বড় ধরনের পরিবর্তন আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।

কৃষি বিভাগ ও কৃষকদের তথ্যমতে, উপজেলার ফরহাদাবাদ, ধলই, মির্জাপুর, গুমানমর্দ্দন, নাঙ্গলমোড়া, ছিপাতলী, পৌরসভা, মেখল, গড়দুয়ারা, উত্তর ও দক্ষিণ মাদার্শা, ফতেপুর, চিকনদন্ডী, শিকারপুর, বুড়িশ্চর ও দক্ষিণ পাহাড়তলীসহ প্রায় সব ইউনিয়নে খাল পুনঃখনন, এলএলপি, বারিক পাইপ ও সেচনালা স্থাপনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এসব উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে প্রায় ১ হাজার ১২০ হেক্টর অতিরিক্ত জমিতে বোরো চাষ সম্ভব হবে। এতে প্রায় ৬ হাজার ৭৬০ মেট্রিক টন অতিরিক্ত ধান উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে, যার বাজারমূল্য প্রায় ২৪ কোটি ১৯ লাখ টাকা।

বিএডিসির উপসহকারী প্রকৌশলী দীপন চাকমা বলেন, “ইতিমধ্যে চিকনদন্ডী ও গুমানমর্দ্দনে ২ কোটি টাকার বেশি ব্যয়ে ১৮ কিলোমিটার খাল পুনঃখনন করা হয়েছে। কৃষকদের সুবিধার্থে খাল পুনঃখনন, এলএলপি, বারিক পাইপ ও আর্টিশিয়ান কূপ স্থাপনের প্রস্তাব পাওয়া গেলে বরাদ্দ অনুযায়ী কাজের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মেজবাহ উদ্দিন বলেন, “চারপাশে প্রচুর পানির উৎস থাকা সত্ত্বেও বোরো আবাদ এখনো আমনের অর্ধেকেরও কম। সামান্য উদ্যোগ নিলেই এ সমস্যা অনেকাংশে নিরসন সম্ভব। উপজেলা প্রশাসন ও বিএডিসির সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা চলছে।”

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সেচ কমিটির সভাপতি মো. আব্দুল্লাহ আল মুমিন বলেন, “বিষয়টি আমরা অবগত হয়েছি। প্রয়োজনীয় সেচব্যবস্থা বাস্তবায়ন হলে বোরো আবাদ বৃদ্ধির পাশাপাশি জলাবদ্ধতা দূর হবে এবং বসতবাড়ির নিরাপত্তাও নিশ্চিত হবে। উপজেলা প্রশাসন থেকে সার্বিক সহযোগিতা দেওয়া হবে।”