সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) সম্প্রতি চীনা ড্রোনসহ নানা ধরনের অস্ত্র সুদানের বিদ্রোহী আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)-এর কাছে সরবরাহ বাড়িয়েছে বলে জানিয়েছে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। বিষয়টি ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনের গোয়েন্দা বিভাগ এবং পররাষ্ট্র দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত এই অস্ত্র সরবরাহ বৃদ্ধির তথ্য পেয়েছে। এই অস্ত্রগুলো সেই বিদ্রোহী গোষ্ঠীর হাতে যাচ্ছে, যাদের বিরুদ্ধে দারফুরে ‘গণহত্যার’ অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, আরব আমিরাত আরএসএফ-কে বোমা ও হাউইটজার পাঠাচ্ছে।
সরবরাহকৃত অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে আরব আমিরাতের অর্থায়নে কেনা চীনা তৈরি উন্নতমানের ড্রোন, হালকা অস্ত্র, ভারী মেশিনগান, যানবাহন, কামান, মর্টার ও গোলাবারুদ। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের তথ্য অনুযায়ী, আরব আমিরাত চীনের জিবি–৫০এ গাইডেড বোমা এবং ১৫৫ মিলিমিটার এইচ-৪ হাউইটজার কামান দারফুরে পাঠাচ্ছে।
গত সপ্তাহে আরএসএফ উত্তর দারফুরের এল-ফাশেরে শহরে হামলা চালায় এবং পরে বেসামরিক মানুষদের হত্যার ভিডিও প্রকাশ করে। এ হামলার খবর আসে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় শুরু হওয়া শান্তি আলোচনার ভেঙে যাওয়ার পরপরই। খার্তুমে পরাজয়ের পর আরএসএফ আবার দারফুরে আক্রমণ শুরু করে, যেখানে তাদের পূর্বসূরি ‘জানজাওয়িদ’ মিলিশিয়ার ইতিহাস রয়েছে।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আরব আমিরাত লিবিয়া, চাদ, উগান্ডা এবং সোমালিয়ার বিচ্ছিন্ন অঞ্চলের মাধ্যমে জটিল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে আরএসএফ-কে অস্ত্র পাঠাচ্ছে। মার্চের পর এই সহায়তা বৃদ্ধি পায়, যখন ইরান, তুরস্ক ও মিসরের সমর্থনে সুদানি সেনাবাহিনী খার্তুমের নিয়ন্ত্রণ পুনরায় নিয়েছে। মে মাসে আরএসএফ আরব আমিরাত থেকে চীনা ড্রোন ব্যবহার করে পোর্ট সুদানে হামলা চালায়, যেখানে তুর্কি সেনা বিশেষজ্ঞরা আহত হন।
বর্তমানে আরব আমিরাত আরএসএফ-কে চীনা সরকারি ঠিকাদার ‘চায়না অ্যারোস্পেস সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি করপোরেশন’-এর তৈরি ‘রেইনবো সিরিজ’ ড্রোন সরবরাহ করছে। এর মধ্যে ‘সিএইচ-৯৫’ মডেল ২৪ ঘণ্টা অবিরাম উড়তে পারে এবং সুনির্দিষ্ট হামলা চালাতে সক্ষম।
আরএসএফ নেতা মোহাম্মদ হামদান দাগালো বা ‘হেমেদতি’ আরব আমিরাতের ঘনিষ্ঠ মিত্র। তার ব্যবসায়িক সাম্রাজ্যের কেন্দ্র দুবাইয়ে। হেমেদতি ও তার পরিবার দারফুরের স্বর্ণখনি থেকে উত্তোলিত বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ আরব আমিরাতের মাধ্যমে পাচার করেছে।
নিজস্ব প্রতিবেদক : 


























