
জাতীয় নির্বাচনের আগেই গণভোট করার দাবিতে জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের আন্দোলনে নামার পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কঠোর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। তিনি পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, নির্বাচনের আগে গণভোট করার 'কোনো সুযোগ এখন আর নাই', এবং এই মহলটি জনগণকে 'বিভ্রান্ত' করছে।
শুক্রবার (৩১ অক্টোবর, ২০২৫) দুপুরে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি)-এর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় তিনি বিএনপির অবস্থান তুলে ধরেন। বিএনপি মহাসচিব অভিযোগ করেন, জাতীয় নির্বাচনকে 'বানচাল করার জন্য' এবং 'বিলম্বিত করবার জন্য' একটি মহল উঠে পড়ে লেগেছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, "আমরা খুব পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, আমরা নির্বাচন করব, নির্বাচন করতে চাই। আমরা ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা যে ঘোষণা দিয়েছেন সেই ঘোষণার সঙ্গে একমত হয়ে আমরা নির্বাচন চাই।"
তিনি জোর দিয়ে বলেন, "গণভোট নির্বাচনের আগে করার কোনো সুযোগ এখন আর নাই। নির্বাচনের দিনই গণভোট হবে সে কথা আমরা পরিষ্কার করে বলেছি।" জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশমালায় গণভোট জাতীয় নির্বাচনের সঙ্গে এক দিনে অথবা আগে যেকোনো সময় করার সুপারিশ করা হয়েছিল। এ নিয়েই রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতবিরোধ তৈরি হয়েছে। জাতীয় নির্বাচনের দিনেই এক সঙ্গে গণভোট আয়োজনের পক্ষে বিএনপি।
জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) সহ আটটি রাজনৈতিক দল নভেম্বরের মধ্যেই গণভোট করার দাবিতে আন্দোলন করছে এবং বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনের সামনে বিক্ষোভ করেছে। গণভোটের দাবিতে আন্দোলরত দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল অতীতে জামায়াতে ইসলামীর মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতার প্রসঙ্গ টেনে আনেন।
তিনি বলেন, "আজকে দয়া করে জনগণ যে নির্বাচন চায়, সেই নির্বাচনের বিরোধিতা করবেন না। এই দেশের মানুষ কখনো বিশ্বাসঘাতককে, যারা বিশ্বাসঘাতকতা করে তাদেরকে ক্ষমা করে না, তারা ক্ষমা পায় না।" তিনি ওই দলগুলোকে আন্দোলন থেকে সরে এসে নির্বাচনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে জনগণের মতামত প্রতিষ্ঠিত করার আহ্বান জানান।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, বিএনপি নির্বাচনে সফল হলে তাদের মিত্রদের নিয়ে 'একটি জাতীয় সরকার গঠন করতে চায়'। তিনি বলেন, দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে যারা একসঙ্গে লড়াই-সংগ্রাম করেছে, তাদেরকে সঙ্গে নিয়েই বিএনপি সরকার গঠন করবে।
জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে জেএসডির ৫৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এই আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণফোরামের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সুব্রত চৌধুরীসহ অন্য রাজনৈতিক দলের নেতারা বক্তব্য রাখেন।