বরগুনার তালতলীতে ইংরেজি শিক্ষক রফিকুল ইসলাম রফিকের বিরুদ্ধে এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) বিকেল ৪টার দিকে উপজেলার পঞ্চাকড়ালিয়া বাজারে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে এলাকাবাসী, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষসহ প্রায় পাঁচ শতাধিক ব্যক্তি অংশ নেন। অভিযুক্ত শিক্ষক রফিকুল ইসলাম পার্শ্ববর্তী আমতলী উপজেলার চরকগাছিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ইংরেজি শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন।
অভিযোগে জানা যায়, শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে দীর্ঘদিন ধরে হোয়াটসঅ্যাপে অশালীন বার্তা পাঠাতেন এবং বিভিন্ন অনৈতিক প্রস্তাব দিতেন। এতে ছাত্রীটি মানসিকভাবে চাপে পড়ে অসুস্থ হয়ে যায়। পরে তাকে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গেলে চিকিৎসক জানান—ছাত্রীটি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত অবস্থায় রয়েছে। পরবর্তীতে ছাত্রীর বাবা মেয়ের মোবাইল ফোন চেক করে রফিকুল ইসলামের সঙ্গে আপত্তিকর বার্তা আদান-প্রদানের বিষয়টি দেখতে পান। ঘটনাটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে অভিভাবক ও এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। পরে স্থানীয় অভিভাবকদের উদ্যোগে আয়োজিত মানববন্ধনে বক্তারা অভিযুক্ত শিক্ষক রফিকুল ইসলামকে অবিলম্বে বরখাস্ত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, একজন শিক্ষক সমাজের আদর্শ হওয়ার কথা— অথচ রফিকুল ইসলাম তার দায়িত্ব ও অবস্থানকে কলঙ্কিত করেছেন। তার মতো চরিত্রহীন ব্যক্তি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করলে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ অন্ধকারে নিমজ্জিত হবে। তারা আরও বলেন, শিক্ষক যদি ছাত্রীকে যৌন হয়রানি করে, তবে তা শুধু ওই ছাত্রী নয়, পুরো শিক্ষাঙ্গনের জন্য লজ্জার বিষয়। তাই এমন ব্যক্তিকে অবিলম্বে বিদ্যালয় থেকে অপসারণ করে আইনগত ব্যবস্থার আওতায় আনা জরুরি।
ইউপি সদস্য মো. মজিবর রহমান বলেন, “একজন শিক্ষক হয়ে রফিকুল ইসলামের এই অনৈতিক আচরণ পুরো শিক্ষাঙ্গনের পরিবেশকে বিষিয়ে তুলেছে। এমন শিক্ষক থাকলে শিক্ষার্থীরা নিরাপদ নয়।
জাতীয়তাবাদী অটোরিকশা–ভ্যান চালক দলের সদস্য সচিব মো. মোতালেব মৃর্ধা বলেন, প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। সমাজে এমন অপকর্ম বরদাশত করা হবে না।
ভুক্তভোগী ছাত্রীর মা বলেন, আমরা ন্যায়বিচার দাবি করায় উল্টো আমার মেয়ের বাবার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে পুলিশি হয়রানি করা হচ্ছে। প্রকৃত দোষীদের আইনের আওতায় আনতে প্রশাসনের দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্ত প্রয়োজন।
ভুক্তভোগী ছাত্রীটির দাদা মো. কালাম তালুকদার আবেগঘন কণ্ঠে বলেন, আমার নাতনির মানসিক অবস্থা খুব খারাপ। এমন লম্পট শিক্ষকের অধীনে অন্য মেয়েরা নিরাপদ থাকতে পারে না। আমরা তার সর্বোচ্চ শাস্তি চাই।
তিনি আরও বলেন, এ ব্যাপারে আমরা বিভিন্ন থানায় মামলা করতে গিয়েও মামলা নিতে কোনো থানা রাজি হয়নি; পরে বাধ্য হয়ে বরগুনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে মামলা করেছি। মামলাটি জেলা প্রশাসনকে তদন্ত দিয়েছে।