ঢাকা ১২:৩২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে সরকারি কালভার্ট ভেঙে ইট বিক্রির অভিযোগ

বরগুনার তালতলী উপজেলার ছোটবগী ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের সুন্দরীয়া গ্রামে সরকারি একটি পুরাতন কালভার্ট ভেঙে ইট বিক্রি ও নতুন কালভার্ট নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ইউপি সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কালাম মেম্বারের বিরুদ্ধে। নির্ধারিত সময়ে বিল পরিশোধ করা হলেও অক্টোবর মাসের শেষের দিকে কাজ সম্পন্ন হয়।
প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ওই এলাকায় আগে থেকেই একটি পুরাতন কালভার্ট ছিল। কালভার্টি ব্যবহারের অযোগ্য হওয়ায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) থেকে নতুন একটি কালভার্ট নির্মাণের জন্য ১ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উম্মে সালমা প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেন স্থানীয় পল্লী অবকাঠামো কমিটি (পিআইসি)-কে। সেই পিআইসির সভাপতি ছিলেন ইউপি সদস্য ও স্থানীয় আওয়ামীলীন নেতা আবুল কালাম।
সূত্র জানায়, বরাদ্দের অর্থ ২০২৫ সালের জুন মাসের শেষ দিকে ছাড় করা হয়। অথচ অক্টোবর মাসের দিকে প্রকল্পের কাজ শেষ হয়। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী কাজ সম্পন্নের আগে বিল দেওয়ার সুযোগ না থাকলেও কাজ শেষের আগেই বিলে দিয়ে পে-অর্ডার রাখা হয়।
স্থানীয়রা জানান, নতুন কালভার্ট নির্মাণের সময় পুরাতন সরকারি কালভার্টটি ভেঙে ফেলা হয় এবং সেখানকার ইট ও উপকরণ ব্যবহার করা হয় নতুন কাজে। অবশিষ্ট ইট ও মালামাল পরবর্তীতে বিক্রি করে দেন ইউপি সদস্য আবুল কালাম—এমন অভিযোগও করেন এলাকাবাসী। এতে কাজের মান ও সরকারি সম্পদের অপব্যবহার নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
স্থানীয়দের দাবি, সরকারি অর্থে (এডিপি) বাস্তবায়িত এই প্রকল্পে অনিয়ম, সরকারি সম্পদ বিক্রি ও কাজ বিলম্বে শেষ না হওয়া সংক্রান্ত বিষয়টি তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
 এ বিষয়ে স্থানীয় ফিরোজ মিস্ত্রি বলেন, কাজ শেষ হওয়ার পর যে ইট ও মালামাল অবশিষ্ট ছিল, সেগুলোর কিছু আমি ইউপি সদস্যের কাছ থেকে ক্রয় করেছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউপি সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কালাম সাংবাদিকদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন ও বলেন আমি আপনাদের সাথে সরাসরি কথা বলবো। পুরাতন কালভার্টের মালামাল কোথায় জানতে চাইলে তিনি কোন উত্তর দিতে পারেন নাই। তিনি আরও বলেন, চলতি বছরের ১৯ অক্টোবর রবিবার কাজ শেষ হয়।
উপজেলা প্রকৌশলী সাখাওয়াত হোসেন বলেন, কোন পুরাতন মালামাল ব্যবহার করা হয়নি, তবে যে টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে তাতে এই কালভার্ট করা সম্ভব নয়। তাই পুরাতন কালভার্টের একটা সাইট ধরেই নতুন কালভার্টটি অনেক বড় করা হয়েছে। পুরাতন কালভার্টের মালামাল বিক্রি করার বিষয়ে আমি কিছু জানি না।
তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ভারপ্রাপ্ত সেবক মন্ডল বলেন, পুরাতন কালভার্টটি বিক্রি করার কোন সুযোগ নেই । এটি টেন্ডারের মাধ্যমে বিক্রি হওয়ার কথা। এভাবে যদি বিক্রি করে এবং পুরাতন মালমাল নতুন কালভার্টে ব্যবহার করে থাকে সেটা আমরা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

বার্তা বিভাগ

মিডিয়া তালিকাভুক্ত জাতীয় দৈনিক নববাণী পত্রিকার জন্য সকল জেলা উপজেলায় সংবাদ কর্মী আবশ্যকঃ- আগ্রহীরা আজই আবেদন করুন। মেইল: [email protected]
জনপ্রিয় সংবাদ

আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে সরকারি কালভার্ট ভেঙে ইট বিক্রির অভিযোগ

আপডেট সময় ০৮:৩৩:৫০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৫
বরগুনার তালতলী উপজেলার ছোটবগী ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের সুন্দরীয়া গ্রামে সরকারি একটি পুরাতন কালভার্ট ভেঙে ইট বিক্রি ও নতুন কালভার্ট নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ইউপি সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কালাম মেম্বারের বিরুদ্ধে। নির্ধারিত সময়ে বিল পরিশোধ করা হলেও অক্টোবর মাসের শেষের দিকে কাজ সম্পন্ন হয়।
প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ওই এলাকায় আগে থেকেই একটি পুরাতন কালভার্ট ছিল। কালভার্টি ব্যবহারের অযোগ্য হওয়ায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) থেকে নতুন একটি কালভার্ট নির্মাণের জন্য ১ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উম্মে সালমা প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেন স্থানীয় পল্লী অবকাঠামো কমিটি (পিআইসি)-কে। সেই পিআইসির সভাপতি ছিলেন ইউপি সদস্য ও স্থানীয় আওয়ামীলীন নেতা আবুল কালাম।
সূত্র জানায়, বরাদ্দের অর্থ ২০২৫ সালের জুন মাসের শেষ দিকে ছাড় করা হয়। অথচ অক্টোবর মাসের দিকে প্রকল্পের কাজ শেষ হয়। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী কাজ সম্পন্নের আগে বিল দেওয়ার সুযোগ না থাকলেও কাজ শেষের আগেই বিলে দিয়ে পে-অর্ডার রাখা হয়।
স্থানীয়রা জানান, নতুন কালভার্ট নির্মাণের সময় পুরাতন সরকারি কালভার্টটি ভেঙে ফেলা হয় এবং সেখানকার ইট ও উপকরণ ব্যবহার করা হয় নতুন কাজে। অবশিষ্ট ইট ও মালামাল পরবর্তীতে বিক্রি করে দেন ইউপি সদস্য আবুল কালাম—এমন অভিযোগও করেন এলাকাবাসী। এতে কাজের মান ও সরকারি সম্পদের অপব্যবহার নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
স্থানীয়দের দাবি, সরকারি অর্থে (এডিপি) বাস্তবায়িত এই প্রকল্পে অনিয়ম, সরকারি সম্পদ বিক্রি ও কাজ বিলম্বে শেষ না হওয়া সংক্রান্ত বিষয়টি তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
 এ বিষয়ে স্থানীয় ফিরোজ মিস্ত্রি বলেন, কাজ শেষ হওয়ার পর যে ইট ও মালামাল অবশিষ্ট ছিল, সেগুলোর কিছু আমি ইউপি সদস্যের কাছ থেকে ক্রয় করেছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউপি সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কালাম সাংবাদিকদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন ও বলেন আমি আপনাদের সাথে সরাসরি কথা বলবো। পুরাতন কালভার্টের মালামাল কোথায় জানতে চাইলে তিনি কোন উত্তর দিতে পারেন নাই। তিনি আরও বলেন, চলতি বছরের ১৯ অক্টোবর রবিবার কাজ শেষ হয়।
উপজেলা প্রকৌশলী সাখাওয়াত হোসেন বলেন, কোন পুরাতন মালামাল ব্যবহার করা হয়নি, তবে যে টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে তাতে এই কালভার্ট করা সম্ভব নয়। তাই পুরাতন কালভার্টের একটা সাইট ধরেই নতুন কালভার্টটি অনেক বড় করা হয়েছে। পুরাতন কালভার্টের মালামাল বিক্রি করার বিষয়ে আমি কিছু জানি না।
তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ভারপ্রাপ্ত সেবক মন্ডল বলেন, পুরাতন কালভার্টটি বিক্রি করার কোন সুযোগ নেই । এটি টেন্ডারের মাধ্যমে বিক্রি হওয়ার কথা। এভাবে যদি বিক্রি করে এবং পুরাতন মালমাল নতুন কালভার্টে ব্যবহার করে থাকে সেটা আমরা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।