
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুদের পুষ্টি চাহিদা মেটানো এবং ঝরে পড়ার হার কমাতে আগামী নভেম্বর মাস থেকে দেশের ১৬৫টি উপজেলায় স্কুল ফিডিং কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) আবু নূর মোহাম্মদ শামসুজ্জামান আজ (২৭ অক্টোবর) বাসসকে দেওয়া এক একান্ত সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানান।
মহাপরিচালক বলেন, আগামী ১৭ নভেম্বর থেকে এই ফিডিং কার্যক্রম শুরু হবে। প্রাথমিকভাবে দেশের ১৬৫ উপজেলার প্রায় ৩১ লাখ শিশুকে দেশীয় ফলসহ ডিম, দুধ, কলা, পাউরুটি ও বিস্কিট সরবরাহ করা হবে। সপ্তাহে পাঁচ দিন তারা এই খাবার পাবে। তিনি জানান, দারিদ্র্েযর হার অনুযায়ী প্রতিটি জেলায় একটি করে উপজেলাকে এই কার্যক্রমের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে। তবে বান্দরবান এবং কক্সবাজারের সব উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এই আওতায় থাকবে।
“মানসম্মত খাবার পেলে বাচ্চারা স্কুলে আরও বেশি মনোযোগী হবে এবং ঝরে পড়ার হার অনেক কমে যাবে,”— মহাপরিচালক আবু নূর মোহাম্মদ শামসুজ্জামান। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের দীর্ঘদিনের পদোন্নতি ও গ্রেড বৈষম্যের সমস্যা সমাধানেও আশার কথা শোনান মহাপরিচালক। তিনি জানান: প্রধান শিক্ষকদের জন্য দশম গ্রেড ইতোমধ্যে ঘোষণা করা হয়েছে এবং দ্রুত তা বাস্তবায়িত হবে। সহকারী শিক্ষকদের জন্য ১১তম গ্রেডের সুপারিশ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
৩২ হাজার শিক্ষকের পদোন্নতি: মামলাজনিত কারণে বর্তমানে ৩২ হাজার সহকারী শিক্ষক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে ‘চলতি দায়িত্বে’ কর্মরত আছেন। মহাপরিচালক আশা করছেন, মামলার রায় দ্রুত হলে এই পদগুলো পূরণ করা সম্ভব হবে। নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি: সারাদেশে শূন্য থাকা ১৩ হাজার ৫শ’ সহকারী শিক্ষকের পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হবে। শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা হাতে পেলেই আগামী নভেম্বর মাসেই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া যাবে। মানোন্নয়নে মহাপরিকল্পনা: ক্ষমতা বৃদ্ধি ও ফ্ল্যাট প্যানেল প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নয়নে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের কথাও জানান ডিজি।
এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: প্রধান শিক্ষকদের ক্ষমতা বৃদ্ধি: প্রধান শিক্ষকদের আর্থিক ক্ষমতা বাড়ানো হচ্ছে। ক্ষুদ্র মেরামত বা স্লিপের জন্য তাঁরা এখন দেড় লক্ষ টাকার পরিবর্তে তিন লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ করতে পারবেন। জরাজীর্ণ স্কুল থাকবে না: মহাপরিচালক আশা প্রকাশ করেন, আগামী তিন থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে বাংলাদেশে জরাজীর্ণ কোনো প্রাথমিক স্কুল থাকবে না। স্মার্ট ক্লাসরুম: প্রাইমারির সকল স্কুলেই ইন্টারঅ্যাকটিভ ফ্ল্যাট প্যানেল প্রদানের কাজ শুরু হয়েছে।
ইতোমধ্যে তিন হাজার প্যানেল বিতরণের পর্যায়ে আছে এবং আগামী ৩-৫ বছরের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি স্কুল এই স্মার্ট প্রযুক্তির আওতায় আসবে। তিনি জানান, স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি (এসএমসি) বর্তমানে স্থগিত থাকলেও, পরবর্তীকালে তা সংস্কার করে নিয়মিত করা হবে।
মোঃ শাহাদাৎ হোসেন শাওন: 

























