
বরগুনা-১ (বরগুনা সদর, আমতলী ও তালতলী) আসনের রাজনৈতিক অঙ্গনে বইছে পরিবর্তনের হাওয়া। এই পরিবর্তনের আলোচনায় এখন কেন্দ্রবিন্দুতে বিএনপি নেতা মতিউর রহমান তালুকদার। দীর্ঘদিন ধরে আমতলী ও তালতলীর উন্নয়ন, জনসেবামূলক কর্মকাণ্ড এবং সাধারণ মানুষের পাশে থেকে তিনি জনগণের আস্থার প্রতীকে পরিণত হয়েছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, যদি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মতিউর রহমান তালুকদারকে মনোনয়ন দেয়, তাহলে আওয়ামী লীগ অধ্যুষিত বরগুনা-১ আসনটি পুনরায় বিএনপির দখলে ফিরে আসতে পারে।
মতিউর রহমান তালুকদার কেবল একজন জনপ্রিয় রাজনীতিক নন; তিনি আমতলী ও তালতলীর শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং অবকাঠামো উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে স্থানীয় মানুষের হৃদয়ে স্থায়ী জায়গা করে নিয়েছেন।
অতীতে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনার বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা সাহসী প্রার্থী হিসেবেও তিনি পরিচিত। রাজনৈতিক অঙ্গনে এমন অভিজ্ঞ, ত্যাগী ও গ্রহণযোগ্য নেতা এখন বিএনপির বড় সম্পদ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছেন।
স্থানীয় এক রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেন, এই অঞ্চলে মতিউর রহমান তালুকদারের জনপ্রিয়তা এতটাই গভীর যে, তিনি প্রার্থী হলে আমতলী-তালতলীর ভোটের সমীকরণ সম্পূর্ণ বদলে যেতে পারে।”
১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালের জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিলেও ভোট কারচুপির অভিযোগে তিনি পরাজিত হন। ২০০১ সালের নির্বাচনে শেখ হাসিনার বিপরীতে নিজের বসতবাড়ি বিক্রি করে প্রার্থী হন তিনি। ব্যাপক ভোট কারচুপির পরও শেখ হাসিনা মাত্র চার হাজার ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করেন। পরবর্তীতে শেখ হাসিনা আসনটি ছেড়ে দিলে অনুষ্ঠিত উপনির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে মতিউর রহমান তালুকদার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
২০০৬ সাল পর্যন্ত এমপি হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তিনি এলাকার উন্নয়নে রাখেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। ১/১১ সময়কালে সংস্কারপন্থী না হওয়ায় তাকে মিথ্যা মামলায় ১৭ বছরের সাজা দেওয়া হয়। দুই বছর কারাভোগের পর তিনি উচ্চ আদালত থেকে মুক্তি পান।
২০০৯ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকে অংশ নিয়েও ভোট কারচুপির শিকার হন বলে অভিযোগ রয়েছে।
তিনি বরগুনা জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান, বরগুনা জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক ও সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। বর্তমানে তিনি বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য।
এমপি থাকাকালে তিনি অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় ও সামাজিক স্থাপনা নির্মাণ করেন। তার নিজস্ব অর্থায়নে তালতলীতে একটি গার্লস স্কুল, বাবার নামে একটি কমপ্লেক্স (যেখানে রয়েছে মাদ্রাসা ও মসজিদ), আমতলীতে কবরস্থান, ঈদগাহ মাঠ, ফায়ার সার্ভিস স্টেশন, তালতলীকে থানা হিসেবে স্বীকৃতি, আমতলী লঞ্চঘাট উন্নয়ন, আমতলী-তালতলীর প্রধান সড়ক নির্মাণ এবং গাজীপুরে একটি পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপনসহ বহু উন্নয়নমূলক কাজ সম্পন্ন করেন।
জনগণের প্রত্যাশা— উন্নয়ন, যোগ্য নেতৃত্ব ও পরিবর্তনের প্রতীক হিসেবে মতিউর রহমান তালুকদারই হতে পারেন বরগুনা-১ আসনের নতুন ইতিহাসের রচয়িতা