গত মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) তার ছোট ভাই ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা হেলাল উদ্দিন নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে পোস্ট দিয়ে দাবি করেন, আলাউদ্দিন মিয়া স্কুলে পুনরায় যোগদান করেছেন। পোস্টে হাজিরা খাতা ও অধ্যক্ষের অফিসে বসা একটি ছবিও সংযুক্ত করা হয়।
পোস্টটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই টঙ্গীতে শুরু হয় ব্যাপক তোলপাড়। শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক ও এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভ ও উত্তেজনা দেখা দেয়। তবে পরে স্থানীয়রা নিশ্চিত হন—অধ্যক্ষ আলাউদ্দিন মিয়া সেদিন স্কুলে যাননি। ফেসবুকে ব্যবহৃত ছবিটি ছিল পুরোনো এবং হাজিরা খাতায় দেওয়া স্বাক্ষরটি জাল।
সহকারী প্রধান শিক্ষক মোস্তফা কামাল বলেন, “মঙ্গলবার অধ্যক্ষ স্কুলে আসেননি। হাজিরা খাতা আমার অফিসেই থাকে। আমরা তার কোনো অফিসিয়াল যোগদানপত্র পাইনি। পরে দেখি, খাতায় জাল স্বাক্ষর করা হয়েছে।” এর আগে শিক্ষক-কর্দেমচারীদের পক্ষ থেকে গভর্নিং বডির সভাপতির কাছে দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ দাখিল করা হলেও, সভাপতি কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে বরং ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে শোকজ করেন। এতে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে শিক্ষক ও কর্মচারীদের মধ্যে।
পরে জানা যায়, সভাপতি শাহ নাওয়াজ দিলরুবা খান কারাবন্দি অধ্যক্ষের জন্য “অস্বাভাবিক ছুটি” অনুমোদন করে তাকে পুনরায় দায়িত্ব গ্রহণের অনুমতি দিয়েছেন। সামাজিক মাধ্যমে এ সংক্রান্ত চিঠি ছড়িয়ে পড়লে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আরও অভিযোগ ওঠে, সভাপতি শাহ নাওয়াজ দিলরুবা খান নাকি দুই কোটি টাকার ঘুষের বিনিময়ে অধ্যক্ষকে পুনর্বহাল করার চেষ্টা করছেন। এতে ক্ষোভে ফেটে পড়ে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী।
প্রবীণ রাজনীতিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব হাসান উদ্দিন সরকার বলেন, "এই প্রতিষ্ঠানের সুনাম নষ্ট করেছে দুর্নীতিবাজ অধ্যক্ষ ও তার সহযোগীরা। প্রশাসনের উচিত দ্রুত তাদের অপসারণ করা, নইলে এর দায় গভর্নিং বডিকেই নিতে হবে।”
এদিকে প্রতিষ্ঠানটির সাবেক শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী বৃহস্পতিবার বিক্ষোভের ঘোষণা দিয়েছেন। তারা অভিযুক্ত অধ্যক্ষ ও বিতর্কিত সভাপতির অপসারণের দাবি জানিয়েছেন।
অধ্যক্ষ আলাউদ্দিন মিয়া এবং সভাপতি শাহ নাওয়াজ দিলরুবা খান—দুজনের সঙ্গেই একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে অধ্যক্ষের ফোন বন্ধ পাওয়া যায় এবং সভাপতি ফোন রিসিভ করেননি। ম্যাসেজ পাঠানো হলেও তিনি সাড়া দেননি।