প্রিন্ট এর তারিখঃ সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২৫, ৩:২২ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৫, ৭:৪৬ পি.এম

দীর্ঘ দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে রাজপথের আন্দোলনে সক্রিয়, হামলা-মামলা ও নির্যাতনের শিকার হওয়া এক লড়াকু সৈনিকের নাম আব্বাস আলী (৪২)। ছাত্রজীবন থেকে জাতীয়তাবাদী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত এই আপসহীন নেতা বর্তমানে জয়পুরহাট-২ আসন থেকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর মনোনয়নপ্রত্যাশী। তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা, সাংগঠনিক দৃঢ়তা এবং এলাকার মানুষের প্রতি তাঁর অঙ্গীকার তাঁকে এক ভিন্ন মাত্রায় প্রতিষ্ঠিত করেছে।
আব্বাস আলী উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি.এ (অনার্স) এবং সরকারি ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসা থেকে ফাজিল (ডিগ্রী সমমান) ডিগ্রি অর্জন করেন।
তাঁর সাংগঠনিক জীবনের শুরু ১৯৯৭ সালে, নিজ এলাকা মামুদপুর ইউনিয়ন ছাত্রদল থেকে। এরপর তিনি সরকারি ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম হল এবং মাস্টার দা সূর্যসেন হল ছাত্রদলে গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
নির্যাতন ও সংগ্রামের রাজপথের ইতিহাস আলী'র রাজনৈতিক জীবনের মূল অংশ জুড়ে রয়েছে স্বৈরাচারী ও ফ্যাসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে রাজপথে তাঁর সাহসী ও আপসহীন অবস্থান। ১৯৯৭ সাল থেকে তিনি স্বৈরাচার হাসিনা বিরোধী আন্দোলনে জাতীয়তাবাদী দলের পক্ষে রাজপথের একজন সক্রিয় ও সাহসী কর্মী ছিলেন।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল করার 'অপরাধে' ২০০৯ সালে এস এম হলের রুম থেকে তাঁকে তুলে নিয়ে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী বাহিনী নির্মমভাবে নির্যাতন করে। মৃত ভেবে বস্তাবন্দী করে তাঁকে ফুলারোডে ফেলে রেখে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে দীর্ঘ এক মাস ঢাকা মেডিকেল আইসিইউতে চিকিৎসা নিতে হয়।
২০১৩ সালে আপোষহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নির্দেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করলে ছাত্রলীগ, যুবলীগের সন্ত্রাসীরা তাঁকে নির্মমভাবে নির্যাতন করে মৃত ভেবে তাঁর উপরে নৃত্য করতে থাকে। এই ঘটনা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়।
২০১৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রাক্কালে নয়াপল্টন বিএনপি কার্যালয়ের সামনে আন্দোলনে তিনি জীবনের সর্বোচ্চ ঝুঁকি নিয়ে বুকের কাপড় খুলে পুলিশের গুলির সামনে দাঁড়ান, যার ফলে পুলিশ পিছু হটতে বাধ্য হয়। পরবর্তীতে মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার হয়ে ২১ দিন গুম থাকার পর ৯ মাস কারাগারে ছিলেন।
২৮শে অক্টোবর ২০২৩ নয়াপল্টনে পার্টি অফিসের সামনে কিলিং মিশনে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে পড়ে গেলে ধারালো অস্ত্র দিয়ে উপুর্যপরি কুপিয়ে মৃত ভেবে ফেলে যাওয়া হয়। মুমূর্ষু অবস্থায় তাঁকে ইসলামি ব্যাংক হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয় এবং তাঁর মাথায় ২২টি সেলাই দেওয়া হয়।
২৯শে জুলাই ২০২৩ বিএনপির ঢাকা ঘেরাও কর্মসূচিতে গাবতলীতে আমানুল্লাহ আমান গ্রেফতারের পর রাজপথ দখলে রাখার 'অপরাধে' আব্বাস আলী, সাজ্জিদ হাসান বাবু, শামিমদের উপর বর্বরোচিত হামলা হয়। সেই সময়ে আব্বাসের মাথায় গুরুতর আঘাত হয় এবং তাঁকে দীর্ঘদিন চিকিৎসা নিতে হয়।
এত কিছুর পরেও বিগত থেকে এখন পর্যন্ত রাজপথের আন্দোলনে ভুমিকা চলমান এবং নো কম্প্রোমাইজ কোনো অন্যায়ের কাছে। মিথ্যা মামলার পাহাড় ও বেকসুর খালাস গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে আব্বাস আলী'র বিরুদ্ধে মোট ১৬টি মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়। এর মধ্যে রয়েছে পল্টন, শাহাবাগ, মিরপুর, লালবাগ, বিমানবন্দর এবং ক্ষেতলাল থানায় দায়ের করা মামলা, যার মধ্যে নাশকতা, বিস্ফোরক, অস্ত্র, রাষ্ট্রদ্রোহ সহ গুরুতর অভিযোগ ছিল। এর মধ্যে অধিকাংশ মামলাতেই তিনি মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় বেকসুর খালাস লাভ করেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানের রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায় আব্বাস আলী দলের দুর্দিনে সকল নেতা-কর্মীর পাশে দাঁড়িয়েছেন। তিনি নেতা-কর্মীদের আইনি সহায়তা প্রদান থেকে শুরু করে তাঁদের পরিবারের পাশেও সাহায্য-সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন।
এলাকার সামাজিক উন্নয়নে তাঁর ভূমিকা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তিনি গরীব ও অসহায় মানুষের পাশে থাকা, স্কুল, মাদ্রাসা ও কলেজ নিয়ে কাজ করা, সকল ধর্মের অনুসারীদের অনুষ্ঠানে সাহায্য করা এবং যুবসমাজকে জাগ্রত করতে খেলাধুলার আয়োজন করা—এগুলো তাঁর নিয়মিত কাজের অংশ। উল্লেখ্য, তিনি জাতীয় পর্যায়ে অ্যাথলেটিক্সে সেরা খেলোয়াড় এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রানার্সআপ হিসেবেও গৌরব অর্জন করেছেন।
তিনি দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেছেন, দলের সিদ্ধান্ত মোতাবেক আমাকে জয়পুরহাট -২ আসনে বিএনপির ধানের শীষের মনোনয়ন দেওয়া হলে জীবনের সর্বোচ্চ দিয়ে সততার সহিত কাজ করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।" তাঁর ভবিষ্যতের মূল পরিকল্পনা হলো: সততা, ন্যায়-নিষ্ঠা এবং ঈমান-আমলকে সামনে রেখে গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত রাখতে এবং জনগণের প্রত্যাশা পূরণে কাজ করা।
জয়পুরহাট-২ আসনের সাধারণ জনগণ মো: আব্বাস আলীকে সুপরিচিত একটি মুখ হিসেবে দেখছেন। দিনমজুর, কৃষক এবং খেটে খাওয়া মানুষের কথা চিন্তা করে কাজ করায়, তিনি জনগণের আস্থা ও বিশ্বস্ততা অর্জন করেছেন। তাই সাধারণ জনগণের প্রাণের দাবি, বিএনপি দলীয় হাই কমান্ড আব্বাস আলীর উপরে আস্থা রাখবেন।